ঢাকা, সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪

বিদ্রোহ দমনের নামে ১৪শ’ বিমান সেনাকে হত্যা

মানিক শিকদার

প্রকাশিত : ১১:৩৫, ৫ অক্টোবর ২০২১ | আপডেট: ১১:৩৬, ৫ অক্টোবর ২০২১

নিখোঁজ স্বজনদের সন্ধান চান পরিবারের সদস্যরা

নিখোঁজ স্বজনদের সন্ধান চান পরিবারের সদস্যরা

১৯৭৭ সালের ২ অক্টোবর কথিত বিদ্রোহ দমনের নামে ১ হাজার চারশ’ বিমান সেনাকে হত্যা করা হয়। জেল-জুলুম, শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হন অনেকে। করা হয় চাকরিচ্যুত। ক্ষমতা কুক্ষিগত এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসীদের সরিয়ে দিতেই সেনাশাসক জিয়াউর রহমানের এই ষড়যন্ত্র ছিল বলে মনে করছেন স্বজনহারা পরিবার ও সেই সময়কার বিমান সেনারা। 

৭৫-এ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর উল্টো স্রোতে বইতে থাকে বাংলাদেশ। সেনাবাহিনীতে অভ্যুত্থান, পাল্টা অভ্যুত্থানের ঘটনা ঘটে একের পর এক। ঘটনাচক্রে ১৯৭৭ সালে জাপান এয়ারলাইন্সের একটি বিমান ছিনতাইয়ের ঘটনায় পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করে। স্বাধীন দেশেই চলে বিভৎস হত্যাযজ্ঞ।

প্রায় দেড় হাজার বিমান সেনার সন্ধান মেলেনি আজও। স্বজনরা জানেন না তারা বেঁচে আছে না মারা গেছে? লাশের সন্ধানও পায়নি তারা।

নিখোঁজ বিমান সেনা দেলোয়ার হোসাইনের স্ত্রী নুরুন নাহার বেগম জানান, আমরা তার কোন কবরও পাইনি বা দেখতেও পারি নাই। আমাদের কিছু্ই জানানো হয়নি।

দীর্ঘ ৪৪ বছর ধরে দুর্বিষহ যন্ত্রণা আর দেশোদ্রোহীর কালিমায় জীবন কাটাচ্ছেন তখনকার বিমান সেনারা।

বিমান বাহিনীর সাবেক সদস্য জসিম উদ্দিন আহমেদ বলেন, আমরা তো প্রতিবাদ করতে পারি নাই। প্রতিবাদ করার মতো পরিস্থিতি ছিল না।

বিমান বাহিনীর সাবেক সদস্য মুনীর শরীফ বলেন, আমাদের যারা উত্তরাধিকার ছিল, স্ত্রী-পুত্র-কন্যা যারা ছিল তারা চেষ্টা করেছে। এই সচিবালয়ের মুক্তাঙ্গনে তাদেরকে নির্যাতন করা হয়েছে।

বঙ্গবন্ধুর আদর্শে উজ্জীবিত সেনাদের ভয় পেতেন সেনাশাসক জিয়াউর রহমান। তাই এই হত্যাযজ্ঞ বলে অভিযোগ।

নিখোঁজ বিমান সেনা আব্দুল ওয়াদুদের ভাই দেওয়ান আব্দুর রহিম বলেন, স্বাধীনতার পক্ষশক্তিকে সেনাবাহিনী ও বিমানবাহিনী থেকে বিতারণ করার জন্য এই ক্যু ঘটানো হয়।

বিমান বাহিনীর সাবেক এই কর্মকর্তা বলছেন, এই হত্যাকাণ্ডের বিচারের জন্য বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করা উচিত।

বিমানবাহিনীর সাবেক কর্মকর্তা এয়ার কমোডর (অব.) ইশফাক এলাহী চৌধুরী বলেন, আর কালক্ষেপণ না করে একটা ট্রুথ কমিশন করে সত্যিকার ঘটনা উদঘাটন করা উচিত। যাদের প্রতি অবিচার করা হয়েছে যতদূর সম্ভব তাদেরকে পুনর্বাসন করা।

এদিকে গণভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ বিষয়ে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহের তাগিদ দেন প্রধানমন্ত্রী।

তবে এতোদিন কেন ভুক্তভোগীরা চুপ ছিলেন সে প্রশ্নও তোলেন প্রধানমন্ত্রী।

ভিডিও-

এএইচ/


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি