ঢাকা, মঙ্গলবার   ২৬ নভেম্বর ২০২৪

ভর্তি জালিয়াতি করে শুধু টাকার জোরে বনে যান ডাক্তার

অখিল পোদ্দার

প্রকাশিত : ১২:১১, ১৬ নভেম্বর ২০২১

ভুয়া চিকিৎসক দিলারা বেগম

ভুয়া চিকিৎসক দিলারা বেগম

থেমে নেই মেডিকেল কলেজে ভর্তি জালিয়াতি। ভুয়া ডাক্তারদের কেউ কেউ সনদ নিয়ে পাড়ি জমাচ্ছে দেশের বাইরে। এভাবে চলতে থাকলে নকল ডাক্তারদের ভিড়ে হারিয়ে যাবেন প্রকৃত মেধাবী।

একজন ভুয়া চিকিৎসক দিলারা বেগম। পাস না করেই এমবিবিএস ভর্তি হয়েছিলেন বরিশাল মেডিকেল কলেজে। ১৯৯৬-৯৭ শিক্ষাবর্ষে ভর্তির পর ২০০৪ সালে মেডিকেল ও ডেন্টাল কাউন্সিলের সনদ পান দিলারা। অতঃপর স্বামীর সঙ্গে পাড়ি জমান যুক্তরাষ্ট্রে। নিয়মিত রোগীও দেখেন সেখানে।

প্রায় দেড় যুগ পর অডিট অধিদফতরের অনুসন্ধানে ধরা পড়েছে ভুয়া ডাক্তার দিলারা বেগমের জাল ভর্তির নানান তথ্য। ১৯৯৬-৯৭ সালে বরিশাল মেডিকেল কলেজে ভর্তির তথ্যে নাম নেই দিলারার। অকৃতকার্য হয়েও শুধু টাকার জোরে এমবিবিএস ডাক্তার বনে গেছেন তিনি। 

টাকার জোরে এমন কতো শত দিলারা রাতারাতি ডাক্তার হয়ে যাচ্ছেন তার হিসেব কে জানে? শিক্ষার্থীদের অভিমত, এই অনিয়ম বন্ধ না হলে মেধাবীরা ঝরে পড়বে, আর জালিয়াত ডাক্তারের সংখ্যা বাড়বে দেশে।

মেডিকেলের শিক্ষার্থীরা জানান, “মানুষের লাইফ নিয়ে আমরা ডিল করি। তাই এখানে যদি জেনুইন মেধাবিরা না আসে সেক্ষেত্রে ভিউচারে সাধারণ মানুষ প্রোপার ট্রিটমেন্টটা পাবে না। একদল দেখা যায় প্রশ্ন জালিয়াতি করে ভালো ভালো মেডিকেলে চান্স পায়। এক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে যে যারা মেধাবী স্টুডেন্ট তারা কিন্তু চান্স পাচ্ছে না। প্রত্যেক ইয়ারে যে ডাক্তার বের হচ্ছে তাতে দেখা যায়, প্রশ্ন ফাঁস করে যারা চান্স পেয়েছেন তারা একজন ভালো ডাক্তার হতে পারছেন না। মেডিকেলে পাস করে স্বাস্থ্য সেক্টরে তারা কি দিতে পারছে? এখানে কিন্তু আমরা কোয়ালিটিসম্পন্ন ডাক্তার পাচ্ছি না।”

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রতিবছরই ভর্তি জালিয়াতির অভিযোগ শোনা যায়। আটকও হয় কেউ কেউ। কিন্তু বন্ধ হয়নি ভুয়া ভর্তির প্রক্রিয়া।

বিএসএমএমইউ’র ক্লিনিক্যাল কার্ডিওলজির বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর ডা. হারিসুল হক বলেন, প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়ে যাচ্ছে এবং মেধাবীরা বাদ পড়ে যাচ্ছেন। যাদের যোগ্যতা নেই তারা অন্যকোন চোরাই পথে এখানে ঢুকে যাচ্ছে। তাহলে বাংলাদেশের চিকিৎসা ব্যবস্থা আসলেই খুব শোচনীয় হয়ে দাঁড়াতে পারে। 

বিশেষজ্ঞদের অভিমত, জাল ভর্তিচক্রের মূল উদপাটন না করলে এক সময়ে দেশ ছেয়ে যাবে ভুয়া ডাক্তারে। 

প্রফেসর ডা. হারিসুল হক বলেন, যখন ডাক্তারের সংখ্যা অত্যন্ত অপ্রতুল সেখানে একজন মেধাবী ও যোগ্য ডাক্তার প্রত্যেকটা উপজেলাতেই দরকার। তা নাহলে গ্রামবাংলার মানুষকে বাঁচিয়ে রাখা যাবে না।

ভিডিও

এএইচ/


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি