ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪

অনাদর-অবহেলাই যেন ছিন্নমূল শিশুদের নিয়তি (ভিডিও)

প্রণব চক্রবর্তী

প্রকাশিত : ১৪:৩৮, ১ ফেব্রুয়ারি ২০২২ | আপডেট: ১৪:৪৯, ১ ফেব্রুয়ারি ২০২২

ছিন্নমূল জীবন আর অনাদর-অবহেলা যেন নিয়তি। অনাগত ভবিষ্যতের অন্ধকার চোখে-মুখে। কারও একবেলা খাবার জুটলেও অন্যবেলা জোটেনা। ঘিঞ্জি ময়লা ফুটপাতেই তাদের ঠাঁই। দিনকে দিন এই পথশিশুদের সংখ্যা বাড়ছে। ২০২৪ সাল নাগাদ তা দ্বিগুণ হবার আশঙ্কা।

৫ বছর বয়সে মা-বাবার বুকের ধন ইমন হারিয়ে যায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে। পাচারকারীদের হাত থেকে ফিরে আসতে পারলেও আর ফেরা হয়নি মা-বাবার আদরের স্পর্শে। সেই থেকে হয়ে গেছে পথশিশু। আশ্রয় এখন কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন কিংবা ফুটপাথে।

বাবা-মার বিবাহ বিচ্ছেদে পথই এখন ভরসা এসব শিশুদের।

ইমন, হাসান কিংবা আকাশ এদের সকলের গল্প কিন্তু একই রকম। এরাও তো কোন ঘরের সন্তান, এদের তো মা-বাবা ছিল। এরা যে আজকে ফুটপাথে আছে, এদের এই ফুটপাথে থাকার পেছনে কারও কি দায় নেই?

এই যেমন নাসরিন আক্তার। পিরোজপুর নদী ভাঙনে সব হারিয়ে ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ঠাঁই হয়েছে তার। ২২ বছর না পেরুতেই হয়েছেন দুই কন্যার মা। ভবঘুরে স্বামী বেশিরভাগ সময় থাকেন বেকার। এখন ফুল বিক্রি করলে ঘোরে জীবন চাকা।

নাসরিন জানান, ‘কি করব, এখন ফুল বিক্রি করে সংসার চালাইতেছি, বাচ্চাদের অসুখ-বিসুখ হলে দেখি।

পথশিশু নিয়ে কাজ করা সেভ দ্যা চিলড্রেন অর্গানাইজেশনের তথ্য মতে, বাংলাদেশে পথশিশু রয়েছে ৮ থেকে সাড়ে ৮ লাখের বেশি। যার ৬০ থেকে ৭০ শতাংশের বাস ঢাকা শহরে। অবস্থার পরিবর্তন করা না গেলে ২০২৪ সাল নাগাদ সংখ্যা দাঁড়াবে ১৬ লাখের বেশি।

বেড়ে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে এই কোমল মুখগুলো পরিচিত হয় নতুন অনেক অভিজ্ঞতার। অনাদর অবহেলায় নেশার ভয়াল থাবায় আটকা পড়ে আষ্টেপৃষ্টে। ঢাকা শহরে কমপক্ষে ২২৯টি স্পট রয়েছে যেখানে ৯-১৮ বছর বয়সীরা মাদক নিচ্ছে অবাধে।

এক পথশিশু জানান, ‘মা আরেকটি বিয়ে করেছেন, বাবা দেখতে পারেননা। ভেন্ডি (মাদক) মাঝে মাঝে খাই। মনে হয় আকাশে তারা দেখতে আছি, অনেক কিছু দেখছি।’

আর পাঁচটা পরিবারের মত এদের জন্ম ঘটা করে আনন্দ দেয় না পরিবারকে। বরং প্রতিনিয়তই বোঝা হয় সমাজের। পথশিশুদের এই অভিষপ্ত জীবন থেকে মুক্তিতে সরকার ও সমাজের সচেতন ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা হোক সব মহলে।

এএইচ/


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি