ঢাকা, মঙ্গলবার   ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪

শীর্ষ প্রভাবশালী নারী কে এই হুমায়রা আজম

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১১:৪০, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২২ | আপডেট: ১১:৫৪, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২২

হুমায়রা আজম

হুমায়রা আজম

প্রথম বাংলাদেশী হিসেবে বিশ্বে ইসলামিক বিজনেস ও ফাইন্যান্সের শীর্ষ ১০ প্রভাবশালী নারীর তালিকায় স্থান করে নিয়েছেন ট্রাস্ট ব্যাংকের এমডি ও সিইও হুমায়রা আজম। কেমব্রিজ আইএফএর ওমানি সাময়িকী-২০২১-এ জায়গা করে নিয়েছেন তিনি।

প্রতি বছরের মতো এবারও যুক্তরাজ্যভিত্তিক ইসলামিক ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স সার্ভিস প্রতিষ্ঠান কেমব্রিজ আইএফএ বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত ও সম্মানসূচক এ প্রোগ্রামে ইসলামিক ব্যবসা এবং আর্থিক ক্ষেত্রে নারীদের সাফল্য তুলে ধরে এ তালিকা প্রকাশ করে। 

ওমানি সাময়িকী মূলত বিশ্বব্যাপী লিঙ্গবৈষম্য দূর করতে ইসলামিক ব্যবসা ও অর্থায়নে নারীদের স্বীকৃতি ও সম্মান জানানোর জন্য কাজ করে যাচ্ছে।

এদিকে, হুমায়রা আজম এর আগে বাংলাদেশের কমার্শিয়াল ব্যাংকিং-এর প্রথম নারী সিইও হন। তিনি বাংলাদেশের ৫০ বছরের ইতিহাসে কোনও বাণিজ্যিক ব্যাংকে প্রথম নারী ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে নিযুক্ত হন। 

অতীতে কয়েকজন নারী ভারপ্রাপ্ত এমডি হিসেবে দায়িত্ব পালন করলেও বাণিজ্যিক ব্যাংকের প্রথম পূর্ণাঙ্গ নারী প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্ত হন হুমায়রা।

সামাজিক বিজ্ঞানে মাস্টার্স (আন্তর্জাতিক সম্পর্ক) শেষ করার পর হুমাইরা আজম ১৯৯০ সালে এএনজেড গ্রিন্ডলেজ ব্যাংকে ম্যানেজমেন্ট ট্রেইনি হিসেবে তার কর্মজীবন শুরু করেন। ১৯৯৩ সালের দিকে তিনি এএনজেড ব্যাংকে স্থানীয় কর্পোরেট ব্যবসাকে আরো প্রসারিত করেন।

১৯৯৬ সালে, হুমায়রা আজম এইচএসবিসি বাংলাদেশে যোগদান করেন, যেখানে তিনি ফিন্যান্সিয়াল ইনস্টিটিউট বিভাগের প্রধান হিসেবে নিযুক্ত হন। পরবর্তীতে ২০০২ সালে, তিনি স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকে যোগদান করেন, যেখানে তিনি গ্রুপ স্পেশাল অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট (জিএসএএম) বিভাগের পরিচালক এবং ফিন্যান্সিয়াল ইনস্টিটিউট বিভাগের পরিচালক ও প্রধান হিসেবে সাত বছর দায়িত্ব পালন করেন। 

স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকে কান্ট্রি বাজেটের ঘাটতি সফলভাবে রিকভার করার ক্ষেত্রে হুমায়রা অবদান ছিল অতুলনীয়।হুমায়রা আজম এসসিবি বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজমেন্ট কমিটির প্রথম নারী সদস্য। তিনি এসসিবিতে আর্থিক প্রতিষ্ঠানের অবস্থান পুনর্গঠন ও বিস্তৃত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।

২০০৯ সালের এপ্রিল মাসে তিনি এমডি এবং সিইও হিসেবে আইপিডিসিতে যোগদান করেন। আইপিডিসিকে পরিমাণ এবং গুণগত দিক থেকে ব্যবসা এবং কর্মক্ষম বৃদ্ধিতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করতে সাহায্য করেন হুমায়রা। 

২০১২ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত তিনি ব্যাংক এশিয়ায় উপ -ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং চিফ রিস্ক অফিসার হিসেবে কাজ করেন। পরে তিনি ২০১৮ সালে অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে ট্রাস্ট ব্যাংকে যোগদান করেন।

হুমায়রা আজম দেশে এবং বিদেশে প্রচুর সংখ্যক প্রফেশনাল ট্রেনিং, ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম, ওয়ার্কশপ এবং সেমিনারে অংশগ্রহণ করেছেন। কেমব্রিজ আইএফএ এর ওমানি-২০২০ (WOMANi 2020) বার্ষিক প্রতিবেদনে তিনি ইসলামী ব্যবসা ও অর্থায়নে বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী ৩০০ নারীর তালিকায় স্থান পান।

জুনিয়র চেম্বার ইন্টারন্যাশনাল (জেসিআই) বাংলাদেশ, মিসেস আজমকে তার আর্থিক খাতে দক্ষতা এবং অকাট্য সাফল্যের দুর্দান্ত প্রদর্শনের জন্য ‘ওম্যান অব ইন্সপায়ারেশন অ্যাওয়ার্ড ২০২০’ প্রদান করেছে। ব্র্যাক ব্যাংক লিমিটেড, বাংলাদেশ তাকে “শীর্ষ মহিলা ব্যাংকার্স পুরস্কার” দিয়ে সম্মানিত করেছে। ব্যাংকিংয়ে অসামান্য অবদানের জন্য তিনি শীর্ষস্থানীয় ক্যারিয়ার অর্জনকারী সাব ক্যাটাগরির অধীনে “BOLD (বাংলাদেশ অর্গানাইজেশন ফর লার্নিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট) উইমেন অব ইন্সপায়ারেশন অ্যাওয়ার্ড-২০১৭” পেয়েছেন। এর আগে, এইচএসবিসি, বাংলাদেশ তার অসামান্য কৃতিত্বের জন্য তাকে “হেক্সাগন সেলস  অ্যাওয়ার্ড” প্রদান করে।

হুমায়রা আজম একজন শিক্ষানবিশ এবং অ্যান্থোফিল, তিনি ঢাকার একটি সম্মানিত মুসলিম পরিবারে ১৯৬৪ সালের ৩ ডিসেম্বর জন্মগ্রহণ করেন। গত ৩১ বছরে তিনি অনেক দলকে সফলভাবে নেতৃত্ব দিয়েছেন এবং চমৎকার ফলাফল প্রদান করেছেন।

সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, পুরান ঢাকায় জন্ম হলেও একদম ছোটবেলাটা আমার কাটে পশ্চিম পাকিস্তানের ইসলামাবাদে। বাবা সেখানে শিক্ষকতা করতেন। সেখান থেকে এসে পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা শুরু করেন বাবা সৈয়দ আলী আজম। ম্যাট্রিক পরীক্ষার পরপরই বাবা মারা যান। জীবনের কঠিন সময়টা শুরু হয় তখন থেকেই। মা আমাদের পাঁচ ভাইবোনকে কঠোর নিয়মে মানুষ করেন। 

হুমায়রা আজম আরও বলেন, আমাদের ছোট থেকে টিউশনি করতে হয়েছে, কষ্ট করতে হয়েছে। আমি পুরো পড়াশোনা করেছি সরকারি বৃত্তি পেয়ে। ভিকারুননিসা নূন স্কুল শেষে সেন্ট্রাল উইমেন্স কলেজ পড়াশোনা করি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে ভর্তি হই ১৯৮২ সালে। আন্দোলনের কারণে ১৯৮৯ সালে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বের হই। ১৯৯০ সালে এএনজেড গ্রিন্ডলেজ ব্যাংকে ম্যানেজমেন্ট ট্রেইনি হিসেবে ব্যাংকিং ক্যারিয়ার শুরু করি।

এনএস//


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি