ঝুটের সুতা রপ্তানি করে বিলিয়ন ডলার আয় সম্ভব (ভিডিও)
প্রকাশিত : ১৩:০৩, ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২
পোশাক শিল্পের অব্যবহৃত টুকরা কাপড় বা ঝুট দিয়ে সুতার তৈরির বড় সম্ভাবনা দেখছেন উদ্যোক্তারা। সরকারি সহায়তা পেলে ঝুটের সুতা রপ্তানির মাধ্যমে বিলিয়ন ডলার আয় করাও সম্ভব বলেছেন তারা। ইতিমধ্যেই ঝুট-সুতার কয়েকটি কারখানা গড়ে উঠেছে। স্বল্প পরিসরে শুরু হয়েছে রপ্তানিও।
গাজীপুরের কাশিমপুরে একটি কারখানাটি গড়ে উঠেছে চীন-বাংলাদেশ যৌথ মালিকানায়। এখানে ঝুট থেকে তৈরি হচ্ছে সুতা। রপ্তানি হচ্ছে চীনে। স্থানীয় উৎস থেকেই মিলছে কাঁচামাল বা ঝুটের যোগান। আমদানি ব্যয় নেই।
প্রথমে পোশাক কারখানার উচ্ছিষ্ট ঝুট সংগ্রহ করা হয়। তারপর রঙ অনুযায়ী করা হয় বাছাই। এরপর ঝুটকে যন্ত্রের সাহায্যে তুলার মতো আঁশ জাতীয় পণ্যে পরিণত করা হয়। সেই আঁশ বিভিন্ন ধাপে প্রক্রিয়াকরণের মাধ্যমে তৈরি হয় সুতা।
হুয়াজিন টেক্সটাইলস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাফর ইকবাল বলেন, ‘ঝুটের ৭৫ শতাংশ পর্যন্ত আমরা ব্যবহার করতে পারবো। এখন ইয়ার্ন তৈরি করছি আরও কম্পোজিট ফ্যাক্টরি তৈরি করতে চাই। এর মাধ্যমে ইয়ার্ন থেকে ফ্যাব্রিক তৈরি করা হবে।’
ঝুট-সুতা তৈরির প্রক্রিয়া পানি বা বায়ু দূষণ করে না। বিশ্বজুড়ে এ সুতার পোশাকের রয়েছে বাড়তি চাহিদাও।
বাংলাদেশ গার্মেন্টস বায়িং হাউজ এসোসিয়েশনের সভাপতি কাজী ইফতেখার হোসেন বলেন, ‘আপাতত যে মার্কেট আসতেছে সেখানে রিসাইক্লিংয়ের একটা ট্রেন্ড আছে। সেই ক্ষেত্রে বাংলাদেশে অনেক বেশি উদ্যোগী হতে হবে।’
সাধারণত কারখানায় পোশাক তৈরির সময় গড়ে ১৫ শতাংশ কাপড় অপচয় হয়। যা ঝুট হিসেবে বছরে জমে ৪ লাখ টনের বেশি। এর বেশিভাগই সস্তায় সরাসরি রপ্তানি হচ্ছে। তবে ঝুটের রিসাইকেল শিল্প গড়ে তোলা সম্ভব হলে বিপুল অংকের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের সুযোগ দেখছেন অর্থনীতিবিদ ও উদ্যোক্তারা।
বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস এসোসিয়েশনের সভাপতি মোহাম্মদ আলী খোকন বলেন, ‘ঝুট থেকে যারা ফ্যাক্টরি করবে তাদের সহজ ঋণ দিলে তারা উৎসাহিত হবে। ট্যাক্স ফ্রি না দিলেও মিনিমাম ট্যাক্সটা করে দিন। তাহলে দেশে রিসাইক্লিং ফ্যাক্টরির প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে।’
সিপিডি গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, ‘এ ধরনের ইন্ডাস্ট্রি যৌথ উদ্যোগে হতে পারে আবার এককভাবে হতেও পারে। সুতরাং এ ধরনের বিনিয়োগগুলোতে বিশেষায়িতভাবে ইনসেনটিভ দেওয়া হলে এই ইন্ডাস্ট্রিগুলোর সাথে সাথে কাঁচামালগুলোর ব্যবহার নিশ্চিত হবে।’
দেশীয় উৎসের কাঁচামাল বা ঝুট ইয়ার্ন থেকে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে মূল্য সংযোজনের হার প্রায় শতভাগ। বাংলাদেশের গার্মেন্টস মিল্পের ঝুট নাম মাত্র মূল্যে মাত্র ১৫ থেকে ২০ টাকা কেজিতে বিদেশে রপ্তানি হয়ে যাচ্ছে। তবে সেই ঝুট প্রক্রিয়াজাত করে এই সুতা বিদেশে রপ্তানি হয় কেজি ৬০ থেকে ১০০ টাকায়। অর্থাৎ ৩ থেকে ৪ গুণ লাভ।
এএইচ/