ঢাকা, শনিবার   ০২ নভেম্বর ২০২৪

পাকিস্তানি তকমা ঝেড়ে ফেলতে চায় আটকেপড়ারা (ভিডিও)

মানিক শিকদার, একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৩:০২, ৯ এপ্রিল ২০২২

মুক্তিযুদ্ধের পর আটকে পড়া পাকিস্তানিরা বার বার পাকিস্তানের নাগরিকত্ব চাইলেও মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে দেশটি। এখনো প্রবীনদের কেউ কেউ পাকিস্তানে ফিরতে চায়। তবে নাগরিক হিসেবে বাংলাদেশেই থাকতে চায় পরবর্তী প্রজন্ম। ঝেড়ে ফেলতে চায় আটকে পড়া পাকিস্তানি তকমা। 

নারায়ণগঞ্জের আদমজী জেনেভা ক্যাম্প। এই কিশোরীর জন্ম স্বাধীন বাংলাদেশে। ক্যাম্পের জীবন- এ যেনো ভিন্ন এক সমাজ। তাই মাথার ভেতরে ঘোরে নানা প্রশ্ন। পূর্ব পুরুষের নীতি আদর্শ থেকে তারা অনেকটাই দূরে। বর্তমান সময়ের সাথে এর হিসেব মেলে না কিছুতেই।

কিশোরী বলেন, “বড়আব্বু-দাদা-ফুফুরা তো মারা গেছেন। এখন আমরা এদেশের মানুষ পাকিস্তানে গিয়ে কি করব। আমি জন্ম নিয়েছি এই দেশে, আমি এই দেশকে অনেক ভালবাসি। এজন্য আমরা এদিকেই থাকতে চাই।”

যাদের বয়স ৭০-৮০ তাদের কেউ কেউ এখনও পাকিস্তানে ফেরার স্বপ্ন দেখেন।

এক বৃদ্ধ জানালেন, “পাকিস্তান যাবার জন্য বহু চেষ্টা চালাচ্ছি। কিন্তু বাংলাদেশ সরকার আমাকে পাঠায়নি, পাকিস্তান সরকারও নেয়নি।”

স্বাধীনতা পরবর্তী প্রজন্ম বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে মাথা উঁচু করেই বাঁচতে চায়।

ক্যাম্পের এক তরুণ জানালেন, “নিজের টাকা দিয়ে পাকিস্তান গিয়েছিলাম। কিন্তু ওখানে ভাললাগেনি তাই ফিরে এসেছি।”

এক তরুণী বলেন, “আমি তো পাকিস্তানি না। কারণ আমার মা-বাবা দু’জনেরই বাংলাদেশে জন্ম। আমি তো অবশ্যই বাংলাদেশি।”

দেশের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে থাকা ক্যাম্পগুলোতে জনসংখ্যা বাড়লেও কমছে ভূমি। এরজন্য প্রভাবশালীদের দৌরাত্ম্যকে দায়ী করছেন অনেকেই।

এসপিজিআরসি বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক এম এ শওকত আলী বলেন, “চট্টগ্রামের ফিরোজশাহ কলোনীতে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। রংপুর ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের কলোনী ২৮ তারিখ উচ্ছেদ হতে যাচ্ছে। মিরপুরে উচ্ছেদ হয়েছিল।”

নাগরিক সুবিধা বঞ্চিত এই জনগোষ্ঠীর এভাবে বেড়ে ওঠা সামাজিক সংকটের সৃষ্টি করছে। কিশোর তরুণরা জড়িয়ে যাচ্ছে নানা অপরাধে।

এসপিজিআরসি বাংলাদেশের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হারুন অর রশিদ বলেন, “মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর আছে, আমরাও নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য চেষ্টা করি। ক্যাম্পগুলোতে ঘিঞ্জি-বস্তি থাকা এবং মানুষের ব্যবসা-বাণিজ্য না থাকার কারণে কিছু কিছু ছেলে এর সঙ্গে জড়িত আছে।”

এই সময়ে এসে উর্দুভাষীদের অধিকার নিশ্চিত করা দরকার বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। 

প্রজন্ম ৭১ সভাপতি আসিফ মুনীর তন্ময় বলেন, “বাংলাদেশের অন্যান্য যে কোন নাগরিকের মতই সুবিধাগুলো তাদের প্রাপ্য। এটা যদি প্রজ্ঞাপন জারি করে সরকারিভাবে দিকনির্দেশনা দেওয়া হয় তাহলে হয়তো সেটা কিছুটা বাস্তবায়ন হতে পারে।”

কষ্টের জীবন থেকে বেরিয়ে আসতে চায় ক্যাম্পের বাসিন্দারা। ফিরতে চায় সমাজের মূলধারায়।

এএইচ/


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি