ভেজা গামছায় কণ্ঠ বদলিয়ে অভিনব প্রতারণা (ভিডিও)
প্রকাশিত : ১২:৫৮, ১২ এপ্রিল ২০২২ | আপডেট: ১৪:২০, ১২ এপ্রিল ২০২২
গ্রাহকদের তথ্য পেতে প্রতারকরা নিয়োগ করছে এজেন্ট, আর সে তথ্যে গ্রাহককে বোকা বানিয়ে হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে টাকা। পুলিশের হাত থেকে বাঁচতে নিজস্ব কৌশল রয়েছে প্রতারকদের। কখনো পুলিশের ওপর আক্রমণও করছে তারা।
কণ্ঠ বদলাতে একটি ভেজা গামছার সহযোগিতা নেন প্রতারক। এরপর গামছাটির সামান্য মুখে গুঁজে কথা শুরু হয়। আগে থেকে তার হাতে ছিলো রাজধানীর কোনো এক মোবাইল ব্যাংকিংয়ের দোকানের লেনদেনের তালিকা।
এরপর শুরু হয় প্রতারণা। শেষ পর্যায়ে এসে গ্রাহক হয় সর্বশান্ত।
টাকার বিনিময়ে ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় প্রতারকরা এজেন্ট নিয়োগ দেয়। এজেন্টরা বিভিন্ন দোকান ঘুরে মোবাইল ব্যাংকিং-এ লেনদেনের তথ্য পাঠিয়ে দেয় ফরিদপুরের মধুখালির ডুমাইন গ্রামের প্রতারকদের কাছে।
সম্প্রতি প্রতারণায় জড়িত কয়েকজনের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেয়ে ডুমাইন গ্রামে মধ্যরাতে অভিযানে যায় ঢাকা থেকে আসা গোয়ান্দা পুলিশের একটি বড় দল। স্থানীয় এক ইউনিয়ন কাউন্সিল সদস্যের বাড়িতে অভিযান চালাতে গেলে গোয়েন্দা দলের উপর চড়াও হয় প্রতারকরা।
স্থানীয় প্রসাশন ও জনপ্রতিনিধি জানান, আইন শৃংখলা বাহিনী এই গ্রামে অপারেশনে এলে চোর বা ডাকাত সাব্যস্ত করে তাদের তেড়ে যায় সবাই।
মধুখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম বলেন, “গত মাসের শেষের দিকে ডিএমপি ডিবির একটি টিম এখানে অপারেশনে আসে। আতিয়ার মেম্বারের ছেলেকে খোঁজা জন্য ওই বাড়িতে যায় এবং তার একটা সিনক্রিয়েট করে।”
মধুখালি থেকে ডুমাইন গ্রামে প্রবেশের পথ একটিই। সেই পথে নজরদারি রাখতে ২৪ ঘণ্টা লোক নিয়োগ দিয়েছে প্রতারকরা। পুলিশ বা অন্য কোন অপরিচিত গাড়ি বা মানুষ এলে একজন থেকে আর একজন জেনে যায় খবর।
ডুমাইন ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান শাহ আসাদুজ্জামান তপন বলেন, “আমাদের এই এলাকাটা হল বর্ডার এলাকা। মাগুরা, পাংশা ও রাজবাড়ীর একটা কর্নারে আমাদের বসবাস। এখানে বিভিন্ন এলাকার বিপদগামী ছেলেপেলেরা আসে।”
ফরিদপুরি পুলিশ সুপার আলিমুজ্জামান বলেন, “ইউজার লেভেলে আরও সতর্ক হওয়া জরুরি। তাহলে প্রতারকরা ইউজারকে ফোন দিয়ে তার সিকিউরিটি কোর্ড নিয়ে টাকা নেওয়ার সুযোগটা পাবে না।”
মাগুরা জেলা থেকে কয়েকশ’ গজ ঘুরলে ফরিদপুর জেলা। ফরিদপুরের মধুখালীর সেই বিখ্যাত ডুমাইন গ্রাম। যে গ্রাম এখন বিখ্যাত থেকে সুখ্যাত হয়ে উঠেছে বিকাশ প্রতারকদের কারণে। পুলিশের অভিযান যখনই হয় তখন ডুমাইন থেকে খবর পেয়ে প্রতারকরা নিশিষের মধ্যে নদী পার হয়ে মাগুরা অথবা রাজবাড়ীতে আশ্রয় নেয়।
এরপরও যদি আইন শৃংখলাবাহিনী কোনোভাবে গ্রামে ঢুকে পড়ে, তবে অপরাধীদের রয়েছে আরো বিকল্প। গ্রামটি এমন এক জায়গায় যার তিন দিকে তিন জেলার তিন উপজেলা। এক জেলার পুলিশ অভিযানে গেলে অপরাধিরা নিমিষেই অপর জেলায় চলে যায়।
এএইচ/