পদ্মার দুই ঘাটে শুধুই শূন্যতা (ভিডিও)
প্রকাশিত : ১৩:০৫, ২৭ জুন ২০২২
পদ্মাসেতু চালুর প্রভাব স্পষ্ট দুই পাড়ের নৌ-ঘাটগুলোতে। মানুষের আনাগোনায় সেই জমজমাট অবস্থা একেবারেই নেই। যেসব আঞ্চলিক রুটে এখনও গণপরিবহন নেই সেগুলোর যাত্রীরাই শুধু উঠছেন স্পিডবোট কিংবা লঞ্চে।
যেন খাঁ খাঁ ধু ধু প্রান্তর। ঘাটের গাড়িগুলোর চাকা স্থির ঠাঁয় দাঁড়িয়ে। ফেরিগুলোও নিষ্প্রাণ।
বেশিরভাগ স্পিডবোট-লঞ্চের অলস সময়। কারণ যাত্রী একেবারেই নেই। পল্টুনে পাঁয়চারি করা মানুষগুলো এই পরিবহন ব্যবসায় যুক্ত।
এমন শঙ্কা আগেই ছিল, স্বপ্নের পদ্মাসেতু চালু হলে যাত্রী মিলবে না। কিন্তু প্রথম দেনেই যে প্রভাব স্পষ্ট হবে সেটা ছিল কল্পনারও বাইরে।
যে চিত্র দেখলেন, এটা মাওয়া ঘাটের।
ঘাট সংশ্লিষ্টরা জানান, “আমাদের ব্যবসা তো একরকম শেষ বললেই চলে। ইতিহাস ব্রেক, যাত্রী নাই বললেই চলে। পদ্মা সেতুর সার্ভিস পেলে মানুষ এখান থেকে যাতায়াত করবে না। দূরপাল্লার কোন যাত্রী এখন এদিক থেকে আর পার হচ্ছে না।”
প্রায় সব গাড়ি ছুটে চলছে সেতুর পানে। এই ঘাটে নৌ-পরিবহন মালিক, শ্রমিক, কর্মচারী সবার এখন বলতে গেলে অখণ্ড অবসর। কিভাবে পরিবর্তিত পরিস্থিতির সামাল দেবেন- সেই চিন্তা তাড়া করছে তাদের।
তারা জানান, “আমাদের কয়েকজনের জন্য সেতু হবে না, সেতু চলবে না এটা তো হয় না। সবার শান্তিতেই শান্তি।”
এবার, জাজিরা প্রান্তের একমাত্র ঘাট মাঝিকান্দিতে একুশের সংবাদ দল। সেখানের অবস্থা আরও করুণ। ঘাটে একেবারেই শূণ্যতা। শুধু সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালকদের মন খারাপ করে বসে থাকতে দেখা গেল।
অটোরিকশা চালকরা জানান, “ব্রিজের গোড়ায় গাড়ির স্টেশন হলে আমরা যাত্রী পেতাম। আমাদের গাড়ির কাগজ দিয়ে পারাপারের ব্যবস্থা করে দিক সরকার।”
শুধু পরিবহন ব্যবসায়ীরাই নয় দুই ঘাটের খাবারের হোটেল, হকার সবারই একই অবস্থা। সেতুর আগমনে খুশি সবাই। কিন্তু, নতুন কর্মের সংস্থান হওয়ার আগ পর্যন্ত চিন্তা বাড়াচ্ছে বহুগুণে।
ব্যবসায়ীরা জানান, “মরুভূমি হয়ে গেছে মাওয়া ঘাট। তাতে দুঃখ নেই, পদ্মাসেতু হয়ে গেছে।”
পছন্দ হোক বা নাই হোক পদ্মার এই ঘাটই ছিল দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের ঢাকায় প্রবেশের একমাত্র প্রবেশদ্বার। একদিন হলো সচল হয়েছে স্বপ্নের পদ্মাসেতু, এরই মধ্যেই এর ঘাটে বিরাজ করছে রাজ্যের শূন্যতা। দেশ এখন একটি অর্থনৈতিক পরিবর্তনের মধ্য দিয়েই যাবে। পরিবর্তনের এই সময়টাতে অনেক চিরচেনা দৃশ্য বদলে যাবে। সহজভাবে এই পরিবর্তনকে মানিয়ে নিতে পারলে এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ।
এএইচ