ঢাকা, মঙ্গলবার   ০৪ মার্চ ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

উচ্চমাত্রার সিসায় আক্রান্ত সাড়ে ৩ কোটি শিশু (ভিডিও)

শিউলি শবনম, একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১২:২৮, ২ জুলাই ২০২২

Ekushey Television Ltd.

দেশে সিসা দূষণের প্রভাবে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে শিশুরা। সাড়ে ৩ কোটি শিশু উচ্চমাত্রার সিসায় আক্রান্ত। ১৯ বছরের নিচে ৩ কোটি ৫৫ লাখ শিশুর রক্তে ৫ মাইক্রোগ্রাম সিসার উপস্থিতি মিলেছে। এতে শিশুদের মাথা ও পেট ব্যথা, স্মৃতিশক্তি এবং ক্ষুধা কমে যাচ্ছে। সিসার দূষণ ঠেকাতে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার তাগিদ বিশেষজ্ঞদের। 

রাজধানীর দোয়েল চত্বরে মাটির টবে রঙ করার কাজ করে সংসারে অর্থ জোগাচ্ছেন হোসাইন। এই শিশু জানেই না এই রঙের সংস্পর্শ থেকেই সিসার বিষাক্ত উপাদান ঢুকে পড়ছে তার রক্তপ্রবাহে।

মোহাম্মদ হোসাইন বলেন, “পড়ালেখা করতে পারেনি, এই কাজে আম্মু লাগিয়ে দিয়েছে।”

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য বলছে, খেলনায় ব্যবহৃত সিসাযুক্ত রঙের মাধ্যমে সবচেয়ে বেশি সিসার সংস্পর্শে আসছে শিশুরা। প্লাস্টিক ও মাটির রঙিন খেলনায় ব্যবহার করা হচ্ছে সিসা। যা শূন্য থেকে ছয় বছরের শিশুরা খেলাচ্ছলে প্রায়ই মুখে তুলে নেয়। 

পরিবেশবাদী সংগঠনগুলো বলছে, সিসা কারখানায় কাজ করা বাবা-মা’র মাধ্যমেও বিষাক্ত এই উপাদানের সংস্পর্শে আসতে পারে শিশুরা। 

এসডো’র নির্বাহী পরিচালক সিদ্দিকা সুলতানা বলেন, “রঙটাই মেজর সোর্স। পাশাপাশি ইন্ডাস্ট্রিয়াল পেইন্টও আছে এখানে। এই পেইন্টটা শুধুমাত্র রোডস বা জাহাজে ব্যবহার হয় না পেলে গ্রাউন্ডে ব্যবহার হচ্ছে। যেখানে বাচ্চাদের সবচেয়ে বেশি ভালো লাগার জায়গা। সেই জায়গাতেও ইন্ডাস্ট্রিয়াল পেইন্ট ব্যবহার হয়।”

ইউনিসেফ ও পিওর আর্থের প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখা যায়, বিশ্বব্যাপী প্রতি তিনজন শিশুর একজন বা প্রায় ৮০ কোটি শিশুর রক্তে সিসার মাত্রা ৫ মাইক্রোগ্রাম। আর বাংলাদেশে ১৯ বছরের নিচে ৩ কোটি ৫৫ লাখ শিশুর রক্তে ৫ মাইক্রোগ্রাম সিসার উপস্থিতি মিলিছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রাপ্তবয়স্কদের তুলনায় শিশুদের রক্তে সিসা শোষণ হয় ৪ থেকে ৫ গুণ বেশি। বিশেষ করে পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের জন্য সিসা বেশি ক্ষতিকর। সিসার বিষক্রিয়া ক্ষতিগ্রস্ত করে শিশুর স্নায়ুতন্ত্রকে। শিশুর মস্তিষ্কের পরিপূর্ণ বিকাশ যেমন ব্যাহত হয়, একই সাথে শিশুর রক্তপ্রবাহ, কিডনিকে সংক্রমিত করে। 

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, “এটা যখন বাচ্চাদের হয় তখন তাদের পেটে পীড়া হয়, ডায়ারিয়া ও মাথাব্যথা হয়। অনেকের ক্ষুধামন্দা, অবসাদ, রাতে ঘুম আসে না, বড় হওয়ার ক্ষেত্রে এদের গ্রোথ কমে যায়। কারও কারও ক্ষেত্রে দেখা যায় মেন্টাল ডিজঅর্ডার, লেখাপড়ায় মনোনিবেশ করতে পারে না।”

সিসার আমদানি এবং ব্যবহারে সরকারের নজরদারির পাশাপাশি শিশুদের জন্য সিসামুক্ত নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করার তাগিদ বিশেষজ্ঞদের।

এএইচ


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি