খাদ্যশস্যের বিকল্পের আলোচনায় রুটি ফল (ভিডিও)
প্রকাশিত : ১১:০৩, ৩১ জুলাই ২০২২
ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে বাধাগ্রস্ত খাদ্যশস্যের সরবরাহ ব্যবস্থা। কিছু দেশ বন্ধ রেখেছে গমসহ খাদ্যপণ্য রপ্তানি। এমন বাস্তবতায় খাদ্য সংকট মোকাবেলায় নতুন সম্ভাবনা দেখাচ্ছে রুটি ফল। বাংলাদেশে এ ফলের বাণিজ্যিক চাষের সম্ভাবনার কথা বলছেন বিশেষজ্ঞরা।
খাদ্য সংকটে সারাবিশ্বে বছরে মারা যাচ্ছে প্রায় ৯০ লাখ মানুষ। অক্সফামের তথ্য বলছে, মিনিটে মৃত্যু ১১।
এমন বাস্তবতায় প্রচলিত খাদ্যশস্যের বিকল্প খোঁজা হচ্ছে। যাতে থাকবে সব ধরনের পুষ্টিগুণ। এক্ষেত্রে সব চেয়ে আলোচনায় রুটি ফল বা ব্রেডফ্রুট। খেতে অনেকটা মিষ্টি আলুর মতো। ছোট কাঁঠালের মতো আকৃতি। চামড়া ছিলে খাওয়া যায় প্রায় পুরোটাই।
এছাড়া পরিপক্ক ফল শুকিয়ে গুঁড়ো করে পাওয়া যায় আটা। আবার রুটি, কেক, তরকারি, ভাজিসহ ১০০ রকম খাদ্য তৈরি হচ্ছে রুটি ফল দিয়ে।
এ ফল থেকে পাওয়া যায় প্রায় সব ধরনের খনিজ ও ভিটামিন। তাই রুটি ফল এবং তা দিয়ে তৈরি খাদ্য যেকোন মানুষের পুষ্টির চাহিদা পুরোটাই পুরণ করতে পারে, বলছেন বিশেষজ্ঞরা।
ঢাবি প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান ড. ইয়ারুল কবির বলেন, “ভাত তো আমরা খাবই। এটা বাঙালির সংস্কৃতি বা ঐতিহ্য। তার সঙ্গে যদি আমরা রুটি ফলটা খাই তাহলে খাদ্যের ঘাটতি পূরণ করতে পারি। যদি আমি ভাত কমিয়ে এটা খাই তাহলে পুষ্টির চাহিদা পূরণ হতে পারে।”
রুটি ফলের গাছে বছরে তিন বার ফুল ধরে। তবে ফল আসে একবার। মার্চ-এপ্রিল মাসে ধরা ফুল থেকেই মূলত ফল হয়।
ঢাবি উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন আহমেদ বলেন, “মার্চ-এপ্রিল থেকে আগস্ট পর্যন্ত এটার মৌসুম। এটার হার্বেস্টিং টাইম হচ্ছে জুলাইর শেষ থেকে আগস্ট, মানে মাস খানেক।”
রুটি ফলে কোন বীজ হয় না। চারা সংগ্রহ করতে হয় ভিন্নভাবে। গাছের গোড়ায় গজায় নতুন চারা। কলম বা টিসু কালচার করেও চারা তৈরি করা যায়।
উষ্ণমণ্ডলীয় বা নাতিশিতোষ্ণ অঞ্চলে রুটি ফলের গাছ সহজেই বেড়ে ওটে। ফলনও বেশ ভালো হয়। একটি বাড়িতে ৩ থেকে ৫টি গাছ থাকলেই পুষ্টি চাহিদা মেটানো সম্ভব বলে মনে করেন এই উদ্ভিদ বিজ্ঞানী।
ড. মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন আহমেদ বলেন, “এই গাছের গ্রোথে কোন ঝামেলা দেখলাম না। পরিচর্যা না করলেও হবে। পরিচর্যা করতে চাইলে গর্ত করে গোবর সার, জৈব সার দিয়ে এটা লাগালেই হবে। বাড়ির আঙ্গিনায়, বাগানে বা এখানে-সেখানে এটা লাগাতে পারি। যেরকম আম-কাঁঠাল গাছ লাগানো হয়।”
বিশ্বের ৯০টি দেশে চাষ হচ্ছে এই রুটি ফল। এর মধ্যে অনেক দেশই চাষ করছে বাণিজ্যিকভাবে। বাংলাদেশেও বাণিজ্যিক চাষের মাধ্যমে খাদ্য নিরাপত্তা শক্তিশালী করা সম্ভব বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
এএইচ