মিনিকেট খেয়ে পুষ্টিবঞ্চিত ভোক্তারা ভুগছেন নানা রোগে (ভিডিও)
প্রকাশিত : ২২:০৭, ১১ আগস্ট ২০২২ | আপডেট: ২২:১১, ১১ আগস্ট ২০২২
আট শতাংশের বেশি ছেঁটে ফেললে চালে পুষ্টিগুণ থাকে না। মোটাচাল কেটে তৈরি করা কথিত মিনিকেট খেয়ে পুষ্টিবঞ্চিত ভোক্তারা। হচ্ছে ডায়াবেটিকসহ নানান রোগ। চালের সার্বিক উৎপাদনে পড়ছে নেতিবাচক প্রভাব।
টাকা একটু বেশি খরচ হলেও বেশিরভাগ মানুষই কিনতে চান সরু চাল। এক্ষেত্রে ভোক্তাদের বেশি পছন্দ মিনিকেট। মিনিকেট নামে আসলে কোনো চাল-ই নেই।
যদিও মিনিকেটের নামে বাজারে যা বিক্রি হচ্ছে, তার বেশিরভাগই মোটা জাতের ধান থেকে তৈরি। সরু চালের চাহিদা থাকায় অটো রাইসমিলের মালিকেরা মোটা লাভের আশায় বহুদিন ধরেই অনৈতিক কাজটি করে আসছেন।
মোটা চালকে মেশিনের সাহায্যে ছেঁটে মানুষকে ধোকা দিয়ে বাজারে ছাড়া হয় এ নামের চাল। আর এতে প্রতি বছর অপচয় হচ্ছে প্রায় ৫২ লাখ মেট্রিক টন চালের অংশ।
দেশ স্বাধীনের পর ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে ধান উৎপাদন হতো ১০৯ লাখ মেট্রিক টন। স্বাধীনতার ৫০ বছর পর ধানের উৎপাদন দাঁড়িয়েছে ৫৬৫ লাখ মেট্রিক টন।
দেশে উৎপাদিত ধান থেকে বছরে চাল পাওয়ার কথা প্রায় ৩ কোটি ৮০ লাখ মেট্রিক টনের মতো। অটো রাইস মিলগুলোতে বিভিন্ন জাতের ধানের চাল কেটে চিকন করায় কমেছে উৎপাদন। অতিরিক্ত পালিশ করার পর মিনিকাট বা মিনিকেট নামে বাজারে তা বিক্রিও হচ্ছে। আর এতে বছরে ক্ষতি ৫২ লাখ মেট্রিক টনের মতো। যদিও পলিশ করা চালের উচ্ছিষ্টও বিক্রি হচ্ছে পশুখাদ্য হিসেবে।
গবেষকরা বলছেন, চাহিদার তুলনায় উৎপাদন বেশি হলেও চাল ঘাটতির মূল কারণ এই অপচয়। এতে নষ্ট হচ্ছে চালের পুষ্টিমানও।
বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. মো. শাহজাহান কবীর বলেন, ঘাটতি পূরণে প্রতি বছর সরকার ১০ লাখ মেট্রিক টন চাল আমদানি করে। কিন্তু দেশে উৎপাদিত মোটা জাতের ধান থেকে মিনিকেট তৈরি বন্ধ হলে এই ঘাটতি মিটিয়ে আরও অন্তত ৪০ লাখ টন চাল রপ্তানী সম্ভব।
এদিকে, অতিমাত্রায় ছাটাই করা এই চালে থাকছে না পর্যাপ্ত পুষ্টিগুণ। যা হচ্ছে, তা শুধুই ক্ষুধা নিবারণ।
বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কতৃপক্ষের সদস্য পুষ্টিবিদ অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল আলীম বলছেন, মোটা চাল কেটে তৈরি করা কথিত মিনিকেটের ভাতে থাকে অতিরিক্ত কার্বোহাইড্রেড। যা খেয়ে মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে নানান রোগে।
ভাতে পুষ্টিগুণ বজায় রাখতে তথাকথিত মিনিকেট তৈরির নামে মোটা চালকে অতিমাত্রায় ছাটাই না করার পরামর্শ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি ও খাদ্য ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ড. নাজমা শাহীনের মতো বিশেষজ্ঞের।
এনএস//