প্রতিবন্ধী ভিক্ষুকদের ৮২.৫৩ শতাংশই দুর্ঘটনার শিকার (ভিডিও)
প্রকাশিত : ২১:৫৪, ১৬ আগস্ট ২০২২ | আপডেট: ২২:১১, ১৬ আগস্ট ২০২২
সহায়-সম্পত্তির পুরোটাই শেষ হয়ে যায় চিকিৎসার পেছনে। ফলে ভিক্ষাবৃত্তিতে জীবন নির্বাহে বাধ্য হন সড়ক দুর্ঘটনায় অঙ্গহারানো মানুষেরা। প্রতিবন্ধী পথভিক্ষুকদের ৮২ দশমিক পাঁচ-তিন শতাংশই এই হতভাগ্যরা।
একেকটি মানুষের গল্প, যেন একটি করে আখ্যান।
হাতপাতা মানুষটির নাম, সিকান্দার। একসময়, ঢাকায়-ব্যবসা করতেন। জীবনও ছিল, রঙিন। দুর্ঘটনা কেড়ে নিয়েছে একটি পা। অসহনীয় কষ্টের দুর্বিষহ দিনযাপন এখন তার।
সিকান্দার বলেন, "রোড পার হইতে নিছি আর এই সময় হোন্ডা পাশ থেকে এসে ড্রেনে ফেলে দেয়। এখন এই চেয়ে চিন্তে জীবন চলে।"
তখন চব্বিশ বছরের টগবগে তরুণ, মিজান মিয়া। ভৈরব ব্রিজ পার হতে গিয়ে, কপাল পুড়েছে। ধুঁঁকে ধুঁকে টিকে থাকতে হচ্ছে ভিক্ষা করেই।
মিজান মিয়া বলেন, "কর্ণফুলী ট্রেনে কাটা পড়ে পা হারায়, এখন নিরুপায়, তারপরও আগের থেকে কমায়ে দিছি হাত পাতা।"
ধানমণ্ডি লেকে ভিক্ষারতরা বলছেন, পেটের জ্বালা কিছুই মানতে চায় না। ভিক্ষা ছাড়া খোলা নেই কোনো পথও।
একজন বলেন, "গাড়িতে একসিডেন্ট হইসে, বাসে আরকি।"
আরেকজন বলেন, "এখন আমি ভিক্ষার পথে নামছি, বাচ্চা-কাচ্চা নিয়ে বিপদে পড়ছি, চাইনা ভিক্ষা করতে, যদি একটা কিছু ব্যবস্থা করত সরকার।"
দুর্ঘটনায় অঙ্গহানির পর স্বাভাবিক কাজকর্ম করতে পারছেন না। পরিবারেরও সঙ্গতি নেই, চালিয়ে নেবার।
রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের গবেষণা বলছে, দুর্ঘটনায় পড়া ৬৫ দশমিক তিন-আট শতাংশ মানুষই জমি-জিরাত, গৃহপালিত পশু ও সম্পত্তি বিক্রি করেছেন চিকিৎসার প্রয়োজনে। বাকি ৩৪ দশমিক সাত-দুই শতাংশ চিকিৎসা নিয়েছেন সরকারি হাসপাতালে।
ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক সাইদুর রহমান বলেন, "তারা পঙ্গু হয়ে পূর্বের জীবন জীবিকা থেকে বিচ্যুত হয়ে এখন তারা ভিক্ষা করছে ঢাকা শহরে।"
দুর্ঘটনায় পড়া ৬৫ দশমিক তিন আট শতাংশ মানুষই জমি-জিরাত, গৃহপালিত পশু ও সম্পত্তি বিক্রি করেছেন চিকিৎসার প্রয়োজনে।
এবিষয়ে সাইদুর রহমান বলেন, "ভিক্ষা তো আসলে কোনো পেশা হতে পারেনা। তাদের আনেকেরই পা নেই হাত আছে, তারা হ্যান্ডিক্রাফটের কাজ করতে পারে। বিসিকের মাধ্যমে তারা কাজ করতে পারে।"
অঙ্গহানির জন্য কোনো ক্ষতিপূরণ পাননি তারা। সচ্ছল-গোছানো-সাজানো জীবন বিষিয়েছে, সড়ক দুর্ঘটনা। কান্না-যন্ত্রণার এ বোঝা বইতে হবে, আমৃত্যু।
এসবি/