সম্প্রীতি বাংলাদেশের সভা
পাহাড়ে শান্তি ফেরাতে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে
প্রকাশিত : ১৫:৩৬, ২ ডিসেম্বর ২০২২ | আপডেট: ১৫:৪৭, ২ ডিসেম্বর ২০২২
পাহাড়ে শান্তিচুন্তি বাস্তবায়ন নিয়ে প্রোপাগান্ডা ছড়াচ্ছে তথাকথিত সুশীল সমাজের কিছু জ্ঞানপাপী। এর বিরুদ্ধে সবাইকে সোচ্চার ভূমিকা রাখার আহ্বান জানিয়েছে সম্প্রীতি বাংলাদেশ। চুক্তির নানা উপকারী দিক তুলে ধরে পাহাড়ে শান্তি ফেরাতে সরকার ও সেনাবাহিনীর পাশাপাশি সকলকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে বলেও মনে করেন বিশিষ্টজনেরা।
পার্বত্য শান্তিচুক্তির ২৫ বছর উদযাপনে রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়েছে ‘পাহাড়ের সম্প্রীতি’ শীর্ষক আলোচনা সভা।
সম্প্রীতি বাংলাদেশের সদস্য সচিব অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীলের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ।
এছাড়াও অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সাবেক সচিব ও সম্প্রীতি বাংলাদেশের যুগ্ম আহবায়ক নাসির উদ্দিন আহমেদ। বক্তব্য রাখেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের নির্বাহী সদস্য শেখ এনায়েত হোসেন বাবলু, রাজনৈতিক বিশ্লেষক সুভাষ সিংহ রায়সহ অনেকে।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, চুক্তির ৭২টি ধারার মধ্যে ৪৮টি পুরোপুরি আর ১৫টি আংশিক বাস্তবায়িত হয়েছে। রাস্তাঘাট, স্কুল, কলেজ, অবকাঠামোসহ হয়েছে ব্যাপক উন্নয়নও।
বক্তাদের অভিযোগ, পাহাড়ে অশান্তি তৈরির ষড়যন্ত্রে লিপ্তদের মদদ দিচ্ছে বিএনপি-জামায়াত।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বলেন, "পাহাড়ের শান্তি নষ্টের জন্য দায়ী সামরিক শাসকরাই।"
তিনি বলেন, "পাহাড়ে পাহাড়ি-বাঙালি সমস্যা আগের মতো নাই। স্থানীয় জাতি গোষ্ঠির নিজেদের মাঝে এখন সমস্যা বেশি। অতীতে সব সামরিক সরকার উলফাসহ সীমান্তে সন্ত্রাসীদের প্রশ্রয় দিয়েছে। আর এখন দেশের ভেতরের কিছু জঙ্গি পাহাড়ে আস্তানা গাড়ছে। এর পেছনে কারা আছে তা জাতি বোঝে।"
প্রসঙ্গক্রমে প্রতিমন্ত্রী বলেন, "যে খালেদা জিয়া গ্রেনেড মেরে শেখ হাসিনাকে মেরে ফেলতে চেয়েছেন, ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে সেই খালেদা জিয়াকেই এখন শেখ হাসিনার অনুকম্পায় জেলের বাইরে বাসায় আরামে থাকতে হচ্ছে।"
জিয়াউর রহমান সমস্ত খুনিদের একসঙ্গে করে পাহাড়ে আশ্রয় দেওয়ায় এখনও পাহাড়ে অশান্তি দেখা যায় বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান এবং শান্তিচুক্তি প্রক্রিয়ার সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত অধ্যাপক আব্দুল মান্নান বলেন, "পাহাড়ে জমি সংক্রান্ত সবচেয়ে বড় বিরোধ ছিলো। তা অনেকটাই কেটে গেছে। পাহাড়বাসী মেনে নিয়েছেন, বরং বাঙালিদের কিছু আপত্তি থাকলেও তা নিয়ে বাজে কোন প্রতিক্রিয়া কেউ দেখাননি।"
তিনি বলেন, "আজ কেবল পাহাড়ে সম্প্রীতির কথা না বলে আমাদের সবার দেশের সম্প্রীতির কথা বলা উচিত।"
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে সম্প্রীতি বাংলাদেশের আহ্বায়ক পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "পাহাড়ের শান্তি চুক্তির কেটে গেছে ২৫ বছর। চুক্তির ৭২টি ধারার মধ্যে বাস্তবায়ন হয়েছে ৪৮টি আর ১৫টি আংশিক, ৮টি বাস্তবায়নের কাজ চলছে। হয়েছে রাস্তাসহ অবকাঠামো উন্নয়ন।"
চুক্তির নানা দিক তুলে ধরে পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, এই চুক্তির ফলে পাহাড়ের রাজনৈতিক স্বস্তি প্রকাশ্যে এসেছে। পাহাড়ের শান্তি ফেরাতে শুধু সরকার কিংবা সেনাবাহিনীর ওপর নির্ভর করে থাকলে হবে না। সকলকে একসঙ্গে কাজ করার কথাও জানান তিনি।
সভাপতির বক্তব্যে সংগঠনের আহ্বায়ক বলেন, এই সরকারের দূরদর্শিতায়ই পাহাড়ে এখনো শান্তি আছে। যারা প্রোপাগান্ডা করছে, তাদেরকে প্রতিহত করতে হবে।
এসবি/