ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২১ নভেম্বর ২০২৪

জনসংখ্যার বোনাসকালে বাংলাদেশ: সুযোগ উন্নতির শিখরে পৌঁছানোর

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৯:১০, ১৩ জানুয়ারি ২০২৩ | আপডেট: ০৯:১৬, ১৩ জানুয়ারি ২০২৩

জনসংখ্যার বিচারে বাংলাদেশ পৃথিবীর অষ্টম বৃহত্তম দেশ। জনসংখ্যা প্রায় ১৬ কোটি। প্রায় এক লাখ ৪৭ হাজার ৫৭০ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এ দেশে প্রতি বর্গকিলোমিটারে বাস করে এক হাজার ১৮৮ জন। জনসংখ্যার ঘনত্বের দিক থেকে নগররাষ্ট্র সিঙ্গাপুরের পরেই বাংলাদেশের অবস্থান। 

জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিলের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ১৯০১ সালে বাংলাদেশের জনসংখ্যা ছিল দুই কোটি ৯০ লাখ, ২০১৫ সালে তা বেড়ে হয়েছে ১৫ কোটি ৬০ লাখ। ২০৬১ সালে আমাদের মোট জনসংখ্যা হবে ২৬ কোটি ৫০ লাখ। 

এতদিন জনসংখ্যা আমাদের জন্য অভিশাপ হিসাবে বিভিন্ন মহলকে ভাবিয়ে তুলেছিল। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের গৃহীত নানামুখী উন্নয়নমূলক পদক্ষেপের কারণে বর্তমানে এ জনসংখ্যাই বাংলাদেশের জন্য আশীর্বাদ হিসাবে বিবেচনা করা হচ্ছে।

সম্প্রতি ইউএনডিপির এশীয় ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের মানব উন্নয়নের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ এখন তরুণ জনগোষ্ঠীর দেশ। এ দেশের কর্মক্ষম মানুষের সংখ্যা ১০ কোটি ৫৬ লাখ; যা মোট জনসংখ্যার ৬৬ শতাংশ। 

ইউএনডিপির মতে, জনসংখ্যাতাত্ত্বিক এ পরিস্থিতি বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য অনেক বড় সুযোগ এনে দিয়েছে। প্রতিবেদনে এ অঞ্চলের ৪৫টি দেশের জনসংখ্যাভিত্তিক তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। তাতে দেখা যায়, বাংলাদেশ সবচেয়ে সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে ১৫-৬৪ বছর বয়সসীমার কর্মক্ষম জনসংখ্যা ১০ কোটি ৫৬ লাখ; যা মোট জনসংখ্যার ৬৬ শতাংশ। ২০৩০ ও ২০৫০ সালে তা বেড়ে দাঁড়াবে যথাক্রমে ১২ কোটি ৯৮ লাখ ও ১৩ কোটি ৬০ লাখে; যা মোট জনসংখ্যার যথাক্রমে ৭০ ও ৬৭ শতাংশ।

বর্তমানে বাংলাদেশে ৬০ বছরের বেশি বয়সী মানুষের সংখ্যা মোট জনসংখ্যার মাত্র ৭ শতাংশ। ২০৩০ ও ২০৫০ সালে ৬০ বছরের বেশি বয়সী মানুষের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াবে যথাক্রমে ১২ ও ২২ শতাংশে। বেশি বয়সী মানুষকে নির্ভরশীল জনসংখ্যা বলা হয়। নির্ভরশীল জনগোষ্ঠীর আরেটা শ্রেণি হলো ০-১৪ বছর বয়সী জনগোষ্ঠী। বাংলাদেশে বর্তমানে ০-১৪ বছর বয়সী জনসংখ্যা মোট জনসংখ্যার ২৭ শতাংশ। 
জনসংখ্যাতাত্ত্বিক এ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বাংলাদেশ এখন বেশ সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে। অর্থাৎ বাংলাদেশ এখন ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ট বা জনসংখ্যাতাত্ত্বিক বোনাসকালে প্রবেশ করেছে।

ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ট হলো কোনো দেশের কর্মক্ষম জনসংখ্যা অর্থাৎ ১৫-৫৯ বছর বয়সী জনসংখ্যার আধিক্য। যখন এই কর্মক্ষম জনসংখ্যা দেশের মোট জনসংখ্যার ৬০ শতাংশের ওপরে থাকে তখন ওই দেশ জনসংখ্যার বোনাসকালে অবস্থান করছে বলে ধরা হয়। এ সুযোগ প্রত্যেকটি দেশ একবারই পেয়ে থাকে। 

জনসংখ্যার বোনাসকালের সুবিধা নিয়ে এর আগে চীন, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়াসহ অনেক দেশ কর্মক্ষম বিশাল জনগোষ্ঠী তৈরীতে সক্ষম হয়েছে। যার ফলে এরা শীর্ষ অর্থনীতির দেশে পরিণত হয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়া ১৯৬০ থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত লাগাতারভাবে এ সুবিধা ভোগ করেছে। জাপান ১৯৫০ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত এ সুবিধা ভোগ করে। 

ভিয়েতনাম, থাইল্যান্ডসহ প্রাচ্যের দেশগুলো ছাড়াও পাশ্চাত্যের বেশ কয়েকটি দেশ আরও আগে এই সুবিধা ভোগ করেছে। প্রত্যেকটা দেশই এই সুযোগের সর্বোচ্চ ব্যবহার করেছে।

দেশি-বিদেশি উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার জরিপ ও প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশ ২০১২ সাল থেকেই ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ট বা জনসংখ্যার বোনাসকাল উপভোগ করছে; যা ২০৪০ সাল পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। অর্থাৎ আগামী ২৪ (২০৪০-২০১৬) বছর বাংলাদেশের কর্মক্ষম জনগোষ্ঠী ১৫-৫৯ বছর বয়সী জনসংখ্যা বেশি থাকবে। 

পক্ষান্তরে নির্ভরশীল জনসংখ্যা ০-১৫ বছর বয়সী এবং ৬০ বছরের ওপরে যাদের বয়স এ দুই শ্রেণির জনগোষ্ঠীর সংখ্যা কমতে থাকবে। ১৫-৫৯ বছর বয়সী কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীর হাতে কাজ থাকলে মোট দেশজ উত্পাদন বাড়ে। ফলে অন্যের ওপর নির্ভরশীলতা কমে যায়। এমন পরিস্থিতিতে একটি দেশ উন্নতির চরম শিখরে পৌঁছে যেতে পারে। 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার বিষয়টি অনুধাবন করতে পেরেছে ২০০৯ সালে রাষ্ট্রক্ষমতায় আসার পর থেকেই। তরুণ জনশক্তিকে তাই সর্বাধিক অগ্রাধিকার দেয়া হচ্ছে। যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের মাধ্যমে তরুণ জনগোষ্ঠীকে ঋণ ও প্রশিক্ষণ সুবিধা প্রদান, প্রতি পরিবারে কমপক্ষে একজনকে চাকরি দেওয়া, একটি বাড়ি, একটি খামার প্রকল্প এবং বিদ্যুৎ ব্যবস্থা তৃণমূল জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়ার মাধ্যমে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ সে লক্ষ্যের দিকে দৃঢ় পদক্ষেপে এগিয়ে চলেছে। 

বলা যেতে পারে, ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ট ও এর সুবিধা যথাযথভাবে কাজে লাগিয়ে এবং রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা দেওয়ার মাধ্যমে তরুণ জনগোষ্ঠীকে জনসম্পদে পরিণত করার জন্য বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা বাংলাদেশের জন্য ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪০ সালের মধ্যে উন্নত দেশ হিসেবে গড়ে তোলার নিরলস প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন।

দেশি-বিদেশি রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বর্তমান সরকারের যুগোপযোগী কর্মপরিকল্পনার কারণে বাংলাদেশ গত এক দশকে ব্যাপক উন্নতি করেছে। বর্তমান সরকারের কৃষিবান্ধব নীতির কারণে কৃষি উত্পাদন ব্যাপকহারে বৃদ্ধি পেয়েছে এবং শিল্পায়নের প্রতি যথাযথ নজর দেওয়ায় ও যোগাযোগ ব্যবস্থার ব্যাপক উন্নতি হওয়ার ফলে শিল্পপণ্য বা কৃষিপণ্য শহর থেকে গ্রামে বা গ্রাম থেকে শহরে দ্রুততম সময়ে পৌঁছে যাচ্ছে। 

তা ছাড়া সরকারের গৃহীত গণমুখী পদক্ষেপের কারণে খাদ্য, বাসস্থান, চিকিৎসাসেবা সব শ্রেণির মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে যাওয়ায় মানুষের মধ্যে এক ধরনের স্বস্তি বা সুখবোধ বাড়ছে। ফলে মানুষের গড় আয়ু বাড়ছে। 

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্যমতে, বাংলাদেশের মানুষের গড় আয়ু ৭০ দশমিক ৭ বছর। পুরুষের গড় আয়ু ৬৯ দশমিক ১ বছর, আর নারীর ৭১ দশমিক ৬ বছর। স্বাধীনতার পর বাংলাদেশিদের গড় আয়ুর হিসাব প্রথমবার করা হয় ১৯৭৩-৭৪ অর্থবছরে। 

সে সময়ের ন্যাশনাল একাডেমি অব সায়েন্সের ওই হিসাব অনুযায়ী, বাংলাদেশের মানুষের গড় আয়ু ছিল ৫০ দশমিক ৭ বছর অর্থাত্ গত ৪২ বছরে গড় আয়ু বেড়েছে ২০ বছর। প্রতি ১০ বছরে ৬ মাস করে গড় আয়ু বেড়েছে বাংলাদেশের মানুষের। এভাবে চলতে থাকলে ২০২১ সালে বাংলাদেশের মানুষের গড় আয়ু হবে ৭৩ বছর। ফলে কর্মক্ষম মানুষের সংখ্যা আরও বাড়বে। বাংলাদেশের ডেমোগ্রাফিক বোনাসকাল অর্জন করার এটা একটা কারণ।

অন্যদিকে, বর্তমান সরকার শিক্ষার প্রতি সর্বাধিক জোর দিয়েছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী, ২০১৩ সালে বাংলাদেশের মানুষের সাক্ষরতার হার দাঁড়ায় ৫৭ দশমিক ২ শতাংশ। ২০১৫ সালে তা বেড়ে হয়েছে ৬০ দশমিক ৩ শতাংশ। এর মধ্যে পুরুষের সাক্ষরতার হার ৬০ দশমিক ৭ শতাংশ, নারীদের সাক্ষরতার হার ৫৯ দশমিক ৬ শতাংশ। বর্তমানে গ্রামে ৫৭ দশমিক ২ শতাংশ পুরুষ এবং ৫৩ দশমিক ১ শতাংশ নারী শিক্ষিত। শহরাঞ্চলে ৭০ দশমিক ৫ শতাংশ মানুষ সাক্ষরতার আওতায় এসেছে। শহরে পুরুষের সাক্ষরতার হার ৭২ দশমিক ৬ শতাংশ, আর  নারীর  ৬৮  দশমিক  ৬  শতাংশ।  ফলে শিক্ষার আলোয় আলোকিত মানুষ নিজ প্রচেষ্টায় তাঁর কর্মক্ষমতা বাড়িয়েছে।

আবার জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে রাখার ক্ষেত্রেও বাংলাদেশ বেশ কিছু সাফল্য অর্জন করেছে। স্বাধীনতার সময় অর্থাৎ ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের প্রজনন হার ছিল ৭; তখন মানুষের গড় আয়ু ছিল ৪৬ বছর। বর্তমানে বাংলাদেশের প্রজনন হার ২ দশমিক ১ এবং গড় আয়ু ৭০ বছর। বর্তমান সরকারের জনসংখ্যা বিষয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ নীতি, পরিকল্পনা ও কর্মসূচি গ্রহণের কারণে এই অর্জন সম্ভব হয়েছে। 

১৯৭২ সালে পরিবার পরিকল্পনা কর্মসূচির পুনর্গঠন, ১৯৭২ সাল থেকে ১৯৭৫ সালের মধ্যে বঙ্গবন্ধু সরকারের জনসংখ্যা হ্রাসে বিশেষ কর্মসূচি গ্রহণ, শেখ হাসিনা সরকারের ১৯৯৬-২০০১ সময়কালে স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা কর্মসূচি, ২০০০ সালের মাতৃস্বাস্থ্য কৌশলপত্র প্রণয়নসহ নানাবিধ পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়নের ফলে মাতৃ ও শিশুমৃত্যুর হার কমেছে। গৃহীত এসব পদক্ষেপের ফলে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হারও কমেছে ব্যাপকভাবে। 

এক্ষেত্রে কার্যকর ভূমিকা রেখেছে বঙ্গবন্ধু সরকার থেকে শুরু করে শেখ হাসিনা সরকারের গৃহীত পরিবার পরিকল্পনা কর্মসূচি। এর সঙ্গে বেসরকারি সংস্থাগুলোর অবদানও কম নয়। ১৯৯০ সালে যেখানে জন্ম নিয়ন্ত্রণের পদ্ধতি ব্যবহারের হার ছিল ৩২ দশমিক ২ শতাংশ, সেখানে বর্তমানে ৬৪ দশমিক ২ শতাংশ দম্পতি জন্ম নিয়ন্ত্রণের কোনো না কোনো পদ্ধতি ব্যবহার করছে। ফলে পরিবারের সদস্য সংখ্যা কম হওয়ায় উপার্জনকারী সদস্যের ওপর নির্ভরশীলদের সংখ্যাও কমেছে। এতে পরিবারগুলো শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবায় বাড়তি অর্থ খরচ করতে পারছে। ফলে ডেমোগ্রাফিক মুনাফা অর্জনের পথ প্রশস্ত হচ্ছে।

বাংলাদেশের জনসংখ্যা রেমিট্যান্স আহরণের অন্যতম প্রধান শক্তি। বাংলাদেশিরা স্ত্রী-পুত্র-কন্যা-পরিজন ফেলে হাজার মাইল দূরে গিয়ে কায়িক পরিশ্রম করে রেমিট্যান্স আহরণ করে আনে। সেই রেমিট্যান্সে সমৃদ্ধ হয় আমাদের অর্থনীতি। একজন প্রবাসী দূর-দূরান্তের দেশ থেকে রেমিট্যান্স আহরণ করতে গিয়ে নিজের অজান্তেই আরো কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করে। 

একজন প্রবাসী যদি টানা ৩ বছর সৌদি আরব কিংবা মালয়েশিয়া থাকেন, তা হলে ৩ বছরের ১ হাজার ৯৫ দিনের মধ্যে ১ দিনও ওই প্রবাসী বাংলাদেশ থেকে খাদ্য গ্রহণ করেন না। এভাবে প্রতি বেলায় কমবেশি ১ কোটি জনগোষ্ঠী বাংলাদেশি অন্ন বাঁচিয়ে দিচ্ছে। বাংলাদেশি একজন প্রবাসী বিদেশের মাটিতে যাই উপার্জন করুক, তা থেকে নিজে চলার জন্য সামান্য কিছু রেখে বাকি সবটাই দেশে পরিবার-পরিজনদের কাছে পাঠিয়ে দেন।

বাংলাদেশের ১ কোটি জনশক্তিকে ডেমোগ্রাফিক বোনাসকালের সুবিধা কাজে লাগিয়ে আগামী  ১০ বছরের মধ্যেই ৪ কোটি জনশক্তিতে পরিণত করা যায়। সে জন্য বাংলাদেশের জনসংখ্যাকে আগামী ২০ বছরের জন্য ১২ কোটিতে ধরে রাখার লক্ষ্য নির্ধারণ করে ১২ কোটির সারপ্লাস জনসংখ্যাকে বিদেশে রাখার জন্য সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন। ৪ কোটি লোক দৈনিক সর্বোচ্চ ১২ কোটি বেলা খাবার গ্রহণ থেকে বিরত থাকবে। ফলে দেশের খাদ্য বেঁচে যাবে। রেমিট্যান্স প্রবৃদ্ধির স্কেল ক্রমেই ঊর্ধ্বমুখী হবে। 

এসবের পথ ধরে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা বাংলাদেশের অর্থনীতিকে এখনকার চেয়ে অন্তত ৪ গুণ গতিতে এগিয়ে নিয়ে যেতে সক্ষম হবেন বলে বিশ্বাস করছেন অর্থনীতিবিদরা।

দেশি-বিদেশি অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, বৈশ্বিক নানা সূচকে বাংলাদেশ ভালোভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। তা অব্যাহত থাকলে এবং ডেমোগ্রাফিক বোনাসকালের সুবিধা কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশ দ্রুত উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত হতে পারে। 

এর প্রমাণ পাওয়া যায় জাতিসংঘের সহকারী মহাসচিব হাউলিয়াং জু-এর বক্তব্যে। তিনি বাংলাদেশের সামাজিক সূচকের অভাবনীয় সাফল্যের ভূয়সী প্রশংসা করে বলেছেন, কোনো দেশই জনসংখ্যার বোনাসকাল শতভাগ কাজে লাগাতে পারেনি। 

জাতিসংঘের সহকারী মহাসচিবের সঙ্গে একমত পোষণ করে ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ট বিষয়ে ঢাকায় নিযুক্ত ইউএনডিপির আবাসিক প্রধান রবার্ট ওয়াটকিনস বলেছেন, বাংলাদেশের এখন উচিত অভিবাসনের দিকে মনোযোগ বাড়ানোর পাশাপাশি নতুন নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টির দিকে আরো মনোযোগী হওয়া। 

ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ট বিষয়ে ইউএনডিপির অর্থনীতিবিদ তাসনিম মির্জা বলেছেন, বাংলাদেশে যে পরিমাণ তরুণ জনশক্তি রয়েছে তা যে কোনো দেশের জন্য সৌভাগ্যের প্রতীক। বাংলাদেশের এই তরুণ জনগোষ্ঠীই আগামী দুই দশকের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নতির চরম শিখরে নিয়ে যাবে।

জনসংখ্যা বিশারদদের অভিমত, যে কোনো দেশের জন্য জনসংখ্যার বোনাসকাল একবারই আসে। আর এটি ২৫ থেকে ৩০ বছর স্থায়ী থাকে। এই সুযোগ কাজে লাগাতে সবার আগে প্রয়োজন জনগোষ্ঠীকে দক্ষ জনশক্তি হিসেবে গড়ে তোলা। তাদের কারিগরি প্রশিক্ষণ দেওয়া। বিদেশের শ্রমবাজার উপযোগী দক্ষ জনশক্তি তৈরি করা। 

বিশাল জনগোষ্ঠীর শিক্ষা, চাকরি, স্বাস্থ্য ও অন্যান্য নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত করতে যে কর্মসূচি এগিয়ে নিয়ে চলেছেন, তাতে আশা করা যায়, জনসংখ্যার টেকসই গুণগত বিকাশ ঘটিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে একটি সুখী সমৃদ্ধ উন্নত ও বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলাদেশেই পরিণত করবেন।

এনএস//


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি