ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪

শব্দবোমায় নাজেহাল ঢাকার মানুষ (ভিডিও)

শাকেরা আরজু, একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ২০:৩৩, ২১ জানুয়ারি ২০২৩

অসহনীয় দুর্গতির নাম শব্দ দূষণ। অকারণে অহেতুক হর্ন বাজাচ্ছে যানবাহনের চালক। আর তাতেই নাজেহাল ঢাকার মানুষ।

অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক জান্নাতুল মাওয়া অনেক বছর ধরেই ধানমণ্ডির বাসিন্দা। বসবাস ভবনটির ১৪ তলায়। সকাল-সন্ধ্যায় অন্তত দু’বার হাঁটতে বের হন। কিন্তু বাসার বাইরে বেরুলেই কান ঝালাপালা যানবাহনের শব্দে। জীবনের যেনো ত্রাহি অবস্থা। 

জান্নাতুল মাওয়া বলেন, “অসহ্য গাড়ির হর্ন, আজকাল খুব পটকা ফুটায়। অ্যাম্বুলেন্সে রোগী নাই কিন্তু সাইরেন সাইরেন বাজাতে আরও কয়েকজনকে রোগী বানিয়ে ফেলে।”

ঘটনাস্থল রাজধানীর বাংলামোটর। চাকরি সিটিং সার্ভিসের টিকিট বিক্রি। সকাল থেকেই তাই রুবেল শরিফের অবস্থান করতে হয় ব্যস্ততম সড়কে।

তিনি বলেন, “সকাল ৮টার দিকে এখানে আসি। গাড়ী আসলে অবিলে সই করতে হয়। কানের অনেক ক্ষতি হচ্ছে।”

সন্তান নিয়ে প্রতিদিন স্কুলে যাওয়া-আসা করেন এই মা। শব্দবোমায় তিনিও আক্রান্ত। অসুস্থ হয়ে পড়েছে তার শিশুটিও। 

তিনি বলেন, “বের হওয়ার সময় কান ধরে রাখছে, অস্থির অস্থির ভাব করছে। আমারও শারীরিক সমস্যা হচ্ছে।”

চলতি পথে বাড়তি আওয়াজে এমন কতো শত মানুষের যে ত্রাহি অবস্থা তার খোঁজ কে রাখে? 

পথচারীরা জানান, কান দিয়ে ঢুকলে মস্তিষ্কে একটা আঘাত লাগে। কলিজা তপ তপ করে উঠে। যখন রাস্তাঘাটে চলাচল করি দেখি অযথা হর্ন দিচ্ছে। তাতে আঁৎকে উঠি অনেকেই। তাতে যে কোনো দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

ট্রাফিক সিগনালে আটকে থাকলেও অকারণে হর্ন বাজায় চালকেরা। যেতে পারবেন না জেনেও কেনো তারা এমন আচরণ করেন তা নিয়েও মানুষের মনে নানা প্রশ্ন। 

চালকরা জানান, ওভারটেক করতে গেলে হর্ন দিতে হয়। অনেক সময় রিক্সাওয়ালাও শুনে না, রাস্তার মাঝখান দিয়েই চলছে। হর্নটা দেওয়ার কারণ হচ্ছে যে আমি তার পাশে আছি। তখন সে বুঝতে পারে তার পাশে গাড়ি আছে, সরে যেতে হবে।

সরকারের পাশাপাশি কিছু বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সচেতন হওয়ার উপদেশ দিচ্ছে গাণিতিক হারে। আর উপদেশ ভঙ্গ করে চালকেরা শব্দদূষণ করছে জ্যামিতিক হারে। আরও আছে মাইকের আওয়াজ, নির্মাণকাজ কিংবা কারখানার উচ্চশব্দ। 

জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯’র গণমাধ্যম ও জনসংযোগ কর্মকর্তা আনোয়ার সাত্তার বলেন, “উচ্চস্বরে গানবাজনা, কোনো সামাজিক অনুষ্ঠান, বিয়ে-গায়ে হলুদ, অনেক সময় ধর্মীয় অনুষ্ঠানের বিশেষ করে নির্মাণ কাজ নিয়ে ফোন আসে।”

জাতিসংঘের পরিবেশ কর্মসূচি ইউএনইপি গত বছর যে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, তাতে শব্দ দূষণের মাত্রায় ঢাকার অবস্থান ছিল দ্বিতীয়।

এএইচ


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি