জেনোসাইডের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির প্রস্তাব পাসে প্রজন্ম ৭১’র অভিনন্দন
প্রকাশিত : ১২:৫৮, ২৭ এপ্রিল ২০২৩ | আপডেট: ১২:৫৯, ২৭ এপ্রিল ২০২৩
আন্তজার্তিক সংস্থা ইন্টারন্যশনাল এসোসিয়েশন অব জেনোসাইড স্কলার্স (আইএজিএস) ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে পাকিস্তানী সেনাবাহিনী ও তাদের এদেশীয় সহযোগীদের দ্বারা সংঘটিত নারকীয়তাকে ‘জেনোসাইড, মানবতাবিরোধী অপরাধ এবং যুদ্ধাপরাধ’ ঘোষণা করে প্রস্তাব পাস করেছে। আইএজিএস এবং এই দাবি উত্থাপনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানিয়েছে মুক্তিযুদ্ধের শহীদ সন্তানদের সংগঠন প্রজন্ম ৭১।
এই গুরুত্বপূর্ণ স্বীকৃতির পর বাংলাদেশ সরকার ১৯৭১’র জেনোসাইডের আন্তজার্তিক স্বীকৃতি আদায়ে তার কূটনৈতিক ও অন্যান্য সংশ্লিষ্ট উদ্যোগ গ্রহণে আরও বেগবান ও ইতিবাচক তৎপরতা দেখাবে বলে আশা করছে সংগঠনটি।
মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রতিষ্ঠায় সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংগঠনের এই দাবি দীর্ঘদিনের। সরকারের পাশে এই দাবি আদায়ে সহায়তা করতে প্রজন্ম ৭১-এর শহীদ সন্তানরাও অঙ্গিকারবদ্ধ।
উল্লেখ্য, আইএজিএস-এ এই প্রস্তাব পাস করার নেপথ্যে প্রজন্ম ’৭১ এর প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান কার্যনিবার্হী পরিষদের সদস্য শহীদ সাংবাদিক সিরাজুদ্দীন হোসেনের সন্তান ড: তৌহীদ রেজানূর মুখ্য ভূমিকা রেখেছেন। তিনি বর্তমানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিংহামটনের নিউইয়র্ক স্টেট ইউনিভার্সিটির ভিজিটিং স্কলার।
তাঁর গবেষণার বিষয় অন্যান্য দেশের জেনোসাইডের স্বীকৃতির বিশ্লেষণের পাশাপাশি বাংলাদেশের জেনোসাইড স্বীকৃতির বিভিন্ন দিকের ওপর আলোকপাত করা। তিনি ইন্টারন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন ফর জেনোসাইড স্কলার সংগঠনেরও সদস্য। বিশ্ববিখ্যাত জেনোসাইড স্কলাররা ইতিমধ্যেই তাঁকে সাধুবাদ জানিয়েছেন।
আইএজিএস-এর উন্মুক্ত ভোটাভুটিতে ৬২৬ জন সদস্যের মধ্যে ২১৮ জন ভোট দিলেও তাঁদের মধ্যে ২০৮ জনই বাংলাদেশের এই দাবিকে সমর্থন করায় প্রস্তাবটি পাস হয়েছে। এই ভূমিধ্বস সমর্থনের জন্য সকল সমর্থনকারীকে ধন্যবাদ, একই সঙ্গে ড: তৌহীদের প্রস্তাবনার সাথে যারা সরাসরি সমর্থন দিয়েছেন তাঁদের প্রতিও কৃতজ্ঞ প্রজন্ম ৭১। বিশেষ করে অধ্যাপক গ্রেগরী ষ্ট্যান্টন, ডঃ হেলেন জার্ভিস, অধ্যাপক এডাম জোন্স, জনাব মফিদুল হক, অধ্যাপক এলিসা ভন জোয়েডেন-ফর্জে, ডঃ শাহরিয়ার ইসলাম এবং মরান আজাদের প্রতি।
পাশাপাশি সকলকে এটাও স্মরণ রাখতে অনুরোধ জানিয়েছে সংগঠনটি, ২১৮ জনের মধ্যে ৪ জন আমাদের দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে এবং ৬ জন ভোট দানে বিরত থেকেছে। এই স্বীকৃতি আদায়ের প্রক্রিয়াও সহজ ছিলও না এবং সময় লেগেছে প্রায় দুই বছর। বিগত জুলাই ২০২১ আইএজিএস’র এক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে ড: তৌহীদ রেজানূর বাংলাদেশে ১৯৭১ সালে সংঘটিত জেনোসাইডের স্বীকৃতির জন্য একটি প্রস্তাব পাসের যে দাবি তোলেন, বিভিন্ন ধাপ ও অন্তরায় পেরিয়েই আজ সাফল্যের মুখ দেখেছে।
বাংলাদেশের জেনোসাইডের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ে প্রজন্ম ৭১ নিয়মিতভাবে সক্রিয়। বিগত ২৬ মার্চ প্রজন্ম ৭১ এই সংক্রান্ত একটি আন্তর্জাতিক ওয়েবিনার আয়োজন করেছিল, যেখানে বিভিন্ন দেশের জেনোসাইড স্কলার্সসহ বাংলাদেশের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বক্তব্য রাখেন। মূল প্রস্তাবনা পেশ করেন ড: তৌহীদ রেজানূর।
এএইচ