শেষ হলো ৪ দিনব্যাপী বাংলাদেশ-ভারত বন্ধুত্ব সংলাপ
প্রকাশিত : ২০:৩৮, ৮ অক্টোবর ২০২৩
সিলেট শিলচর ফেস্টিভ্যালের মধ্য দিয়ে শেষ হলো বাংলাদেশ-ভারত বন্ধুত্ব সংলাপ। ব্যবসা বাণিজ্য ছাড়াও শিক্ষা বিনিময়ের মাধ্যম ও করণীয় উঠে আসে সমাপনী দিনে। একইসঙ্গে বাংলাদেশের পর্যটনশিল্প বিকাশে কাজ করার প্রত্যয় জানান ভারতীয় প্রতিনিধিরা।
সিলেটে ৪ দিনব্যাপী ১১তম বাংলাদেশ ভারত ফ্রেন্ডশিপ সংলাপে অনেক অমীমাংসিত বিষয় উঠে আসে। মহানগরীর গ্র্যান্ড সিলেট হোটেল এন্ড রিসোর্টে সমাপনি অনুষ্ঠানে গুরুত্ব পায় শিক্ষা ও গবেষণা আদান প্রদানের বিষয়াদী।
সংলাপের শেষ দিনে ‘সিলেট-শিলচর ফেস্টিভ্যাল’ শিরোনামে সমাপনী ও সাংস্কৃতিক পর্বের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ এমপি। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও ভারত সীমান্তের কারণে আলাদা হলেও দেশ দুটির মধ্যে শক্ত বন্ধন রয়েছে। ভারতের মানুষ ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় রক্ত ঝরিয়েছেন, বাংলাদেশের মানুষের পাশাপাশি ভারতের মানুষও যুদ্ধে শহীদ হয়েছেন। এ কারণে দুই দেশের মানুষের মধ্যে রক্তের বন্ধন রয়েছে- যা দুই দেশের মধ্যকার বন্ধনকে আরও সুদৃঢ় করেছে।
বাংলাদেশ ও ভারত দীর্ঘদিন ধরে নিজেদের মধ্যে বোঝাপড়ার মাধ্যমে এগিয়ে চলছে- উল্লেখ করে মন্ত্রী ইমরান আহমদ আরও বলেন, এমন ফেস্টিভ্যাল আয়োজনের মধ্য দিয়ে দুই দেশের মধ্যে ব্যবসা থেকে শুরু করে সব বিষয়ে আরও শক্ত বন্ধন তৈরি হবে।
সমাপনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ সদস্য পঙ্কজ দেবনাথ। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সহকারী সচিব তাসনিমা ইফফাতের সঞ্চালনায় এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ফ্রেন্ডস অব বাংলাদেশ ইন্ডিয়া চ্যাপ্টারের ওয়ার্কিং প্রেসিডেন্ট রাধা তমাল গোস্বামী, বাংলাদেশের সংসদ সদস্য অসীম কুমার উকিল। সমাপনী পর্বে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন ইন্ডিয়ান ফাউন্ডেশনের ডিস্টিংগুইশ ফেলো রামি নিরঞ্জন দিশাই।
স্বাগত বক্তব্যে রাধা তমাল গোস্বামী বলেন, দুই দেশের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের মিল রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে এমন সংলাপের পাশাপাশি শিক্ষার বিষয় নিয়েও সম্মেলন আয়োজন করা প্রয়োজন বলে তিনি মনে করেন।
সমাপনী অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, দুই দেশের মধ্যে সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও সম্প্রীতির বন্ধন রয়েছে, দুই দেশের সম্প্রীতির বন্ধন সুদৃঢ়। দুই দেশ এ সম্পর্ককে আরও সামনে এগিয়ে নিতে চায়। এমন সম্মেলন যাতে নিয়মিত হয়, সে ব্যাপারে দুই দেশ যত্নবান হবে। এ সময় বক্তারা দুই দেশের বাসিন্দাদের মধ্যে সীমান্ত পারাপার কীভাবে সহজতর করা যায়, সেটি নিয়ে ভাবার কথা জানান।
তিন দিনব্যাপী সম্মেলনে দুই দেশের মধ্যে ব্যবসা, শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক খাতের পাশাপাশি মানুষে মানুষে যোগাযোগ বাড়ানোর ব্যাপারে আলোচনা হয়। দুই দেশের মধ্যে ফ্রেন্ডশিপ সংলাপের আয়োজন করে বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন ফর রিজিওনাল স্টাডিজ ও ইন্ডিয়া ফাউন্ডেশন। এতে সহযোগিতা করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
দুই দেশের শিল্পীদের অংশগ্রহণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে এ আয়োজন শেষ হয়।
১১তম বাংলাদেশ-ভারত ফ্রেন্ডশিপ সংলাপ ২০২৩ শুরু হয় ৫ অক্টোবর বৃহস্পতিবার। সিলেটের গ্র্যান্ড সিলেট হোটেল এন্ড রিসোর্টে অনুষ্ঠিত এ সংলাপের প্রথমদিনে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জাতীয় সংসদের স্পীকার ড. শিরিন শারমিন চৌধুরী, এমপি। বিশেষ অতিথি ছিলেন সাবেক মন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, ভারতের সাবেক মন্ত্রী শ্রী এম জে আকবর ও ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা। এতে সভাপতিত্ব করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
৬ অক্টোবর দ্বিতীয় দিনের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন এমপি। এতে সভাপতিত্ব করেন সংস্কৃতি মন্ত্রী কে এম খালিদ এমপি।
এছাড়া সংলাপে বাংলাদেশের পক্ষে ৬ জন মন্ত্রী, ২৩ জন সংসদ সদস্যসহ জাতীয় নেতৃবৃন্দ অংশ নেন। ভারত থেকে ১৪২ জনের প্রতিনিধি দল সংলাপে অংশ নিতে সিলেটে আসেন।
রোববার বিকেলে সিলেটের বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান ঘুরে দেখেন ভারতীয় অতিথিরা। তাদের অভিমত, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বন্ধুত্বপুর্ণ সম্পর্ক সুদূঢ় করতে এবং উভয় দেশের শিক্ষা, সংস্কৃতি ও ব্যবসা উন্নয়নের স্বার্থে এ ফ্রেন্ডশিপ সংলাপ প্রতি বছর আয়োজন করা হয়।
এএইচ