চলমান সহিংসতার বিরূপ প্রভাব শিশুমনে (ভিডিও)
প্রকাশিত : ১২:৩৬, ১৬ নভেম্বর ২০২৩
আগুন সন্ত্রাস ও দেশের চলমান রাজনৈতিক সহিংসতায় বিস্তৃত হচ্ছে ভয়ের সংস্কৃতি। রাজনৈতিক কর্মসূচিকে ঘিরে উন্মত্ততা- বীভৎসতায় আতঙ্কিত শিশু ও অভিভাবকরা। স্কুলে যাওয়া-আসার পথে ভুগছেন তারা নিরাপত্তাহীনতায়। শিক্ষকরাও বলছেন, আতঙ্ক ও ভয়ের সংস্কৃতি শিশু মনে ফেলছে বিরূপ প্রভাব।
তুরজাউন, পড়ছে নবম শ্রেণীতে। বাবার সঙ্গে এসেছে পরীক্ষা দিতে। অবরোধের কারণে তুরজাউনের বাবা আসাদুজ্জামান ভয়ে চাননি মেয়েকে একা ছাড়তে।
এই অভিভাবক জানান, কখন কি হয়ে যায় এই আতঙ্ক। পরীক্ষা যেহেতু বাতিল করা হয়নি তাই আসতে হচ্ছে।
তুরজাউনের বাবার মতো আরও অনেক অভিভাবক সন্তানদের সাথে এসেছেন স্কুলে। আগে তারা অনেকেই সন্তানদের একা ছাড়লেও এখন সবার মনে ভয় রাজনৈতিক সহিংসতা নিয়ে। আতঙ্কিত তারা শিশুদের নিয়ে।
শিশুরা জানান, গাড়ি পোড়াচ্ছে, ভাংচুর করছে ভয় লাগে। এখানে অনেক দিন আগে গাড়ি ভাংচুর করা হয়েছিল। রাস্তা দিয়ে আসতে ভয় লাগে, যদি হঠাৎ কিছু হয়ে যায়।
অভিভাবকরা জানান, ভয়ে বাসে উঠিনা, রিক্সায় আসা-যাওয়া করতে হচ্ছে। আতঙ্কা নিয়ে বের হই।
রাজধানীর স্কুলেগুলোতে এখন চলছে বার্ষিক পরীক্ষা ও শেষ সময়ের ক্লাস। একই সঙ্গে চলছে নতুন সিলেবাসের অধীনে বার্ষিক মূল্যায়নও। কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ঘুরে দেখা গেছে, মূল্যায়ন ও বার্ষিক পরীক্ষায় উপস্থিতি শতভাগ হলেও অবরোধের কারণে ক্লাসে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কম হয়।
রাজনৈতিক পরিস্থিতি এমন চলতে থাকলে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের প্রায় তিন কোটি শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবন পড়বে হুমকির মুখে।
অভিভাবকরা জানান, অবরোধের কারণে পড়ালেখার অনেক ক্ষতি হয়েছে।
শিক্ষক-অভিভাবকরা বলছেন, রাজনৈতিক সহিংসতা ও বীভৎসতার দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব পড়ছে শিশু মনে।
তারা জানান, নিরাপত্তা নিয়ে সবাই শঙ্কিত। যদিও এটা সরকার ও বিরোধীদের কাজ। তবে আমাদের সুবিধাটা তাদেরকে দেখতে হবে। আমরা চাই, একটা সুন্দর পরিবেশ।
শিক্ষকদের দাবি, শিক্ষার্থীরা যেন আসা-যাওয়ার পথে নিরাপদ পরিবেশ পায়। আমরা অনুকূল পরিবেশ চাই।
শিশুদের এই অপূরণীয় ক্ষতিতে চিন্তিত অধ্যক্ষরাও।
মতিঝিল সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ শায়লা নাসরীন বলেন, বছর শেষ পরীক্ষা না হলে সেশন পিছিয়ে যাবে। বিষয়টি সবারই দেখা উচিত। সবারই তো ছেলেমেয়ে আছে।
আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ রোকনুজ্জামান শেখ বলেন, “অভিভাবকদের যে শঙ্কা সেই শঙ্কা যেন না থাকে।”
শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার কথা ভেবে দেশের ইংরেজি মাধ্যমসহ অনেক বেসরকারি স্কুল-কলেজে স্বশরীরে ক্লাস বন্ধ রয়েছে। সেখানে ভার্চুয়ালি ক্লাস নেয়া হচ্ছে।
এএইচ