শিশুর শরীরে মিলছে সিসা, নষ্ট হচ্ছে বুদ্ধিমত্তা
প্রকাশিত : ১১:৫৮, ৬ এপ্রিল ২০২৪
আগামীর বাংলাদেশের জন্য বড় উদ্বেগের বিষয় সিসা দূষণ। ৮০ ভাগ শিশুর শরীরেই মিলছে সিসার উপস্থিতি। গবেষকরা বলছেন, এর ফলে বছরে শিশুদের দুই কোটি পয়েন্ট আইকিউ বা বুদ্ধিমত্তা নষ্ট হচ্ছে। তৈরি হচ্ছে নিম্ন বুদ্ধিমত্তার প্রজন্ম।
সিসা দূষণের সবচেয়ে বড় ভুক্তভোগী শিশুরা। শরীরে সীসার উপস্থিতি মেলা ৮০ ভাগ শিশুর ৪০-৫০ ভাগই বহন করছে আশঙ্কাজনক মাত্রার সীসা- এমন তথ্য ইউনিসেফের।
বিশ্বব্যাংকের গবেষণায়ও উঠে এসেছে, বায়ু দূষণ, অনিরাপদ পানি, স্যানিটেশন, স্বাস্থ্যবিধিসহ সিসা দূষণ নিয়ন্ত্রণ করা গেলেই বছরে এক লাখ ৩৩ হাজারের বেশি অকালমৃত্যু ঠেকানো যাবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মাটি, পানি, বায়ু থেকে মানবদেহে প্রবেশ করছে সিসা। বড় উৎস হিসেবে মারাত্মক ক্ষতি করছে অবৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে রিসাইকেল করা ব্যাটারি কারখানাগুলোও।
সবচেয়ে বেশি ক্ষতির শিকার পাঁচ বছরের কম বয়সি শিশুরা। মস্তিষ্কের বিকাশ বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে তাদের। হারিয়ে ফেলছে মানুষের সাথে যোগাযোগের দক্ষতা।
ক্যাপস প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান ড.আহমদ কামরুজ্জমান বলেন, “শিশুদের যে বুদ্ধিমত্তা সেটি বিকশিত হতে পারছেনা এবং এটি দিনে দিনে কমে যায় এই সিসা দূষণের কারণে। শিশুরা দেড়িতে কথা বলছে, তারা অন্যদের সঙ্গে রিন্টারেক্ট করা শিখছেনা। শিশুরা যখন এটাতে আক্রান্ত হচ্ছে, যার ফলে আগামী দিনের দেশ পরিচালনার দায়িত্ব যারা নেবে তারা লো-আইকিউর একটি জেনারেল তৈরি হচ্ছে। যে কারণে ওয়ার্ল্ড ব্যাংক শুধু নয় অন্যান্য অর্গানাইজেশনগুলো সিসা দূষণ নিয়ে বিশেষভাবে কনসার্ন।”
সিসা দূষণ কমিয়ে স্বাস্থ্যগত ক্ষতি এড়াতে গবেষণা বাড়ানোর পাশাপাশি বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ে কাজ করারও তাগিদ গবেষকদের।
ড.আহমদ কামরুজ্জমান বলেন, “আমাদের সিসার যে উৎসগুলো রয়েছে সেগুলো যথার্থভাবে চিহ্নিত করা হয়নি। আমাদেরকে আরও গবেষণা করতে হবে। কোন কোন সেক্টরে এই সিসা কিভাবে কন্ট্রোল করা যায় সেজন্য গবেষণার পাশাপাশি এগুলো নির্মূলে সকলকে সমন্বিত এবং অংশিদারিত্বমূলকভাবে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়কে সাথে নিয়ে কাজ করতে হবে।”
পরিবেশ সংরক্ষণ বিধিমালায় হাতেগোণা কিছু শিল্পপ্রতিষ্ঠানের জন্য সিসার মানমাত্রা নির্ধারিত আছে। পরিবেশবিদরা বলছেন, স্বাস্থ্যগত ক্ষতি বিবেচনায় সবগুলোর জন্য এটি নির্ধারণ জরুরি।
এএইচ