সিদ্ধান্ত অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর হতে পারছেনা আ.লীগ
প্রকাশিত : ১২:২৭, ৩০ এপ্রিল ২০২৪ | আপডেট: ১২:২৮, ৩০ এপ্রিল ২০২৪
উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দলীয় প্রতীক না থাকায় দলের সিদ্ধান্ত অমান্যকারীদের বিষয়ে কঠোর কোনো সিদ্ধান্তে যেতে পারছে না আওয়ামী লীগ। ভোটকে প্রশ্নের উর্ধ্বে রাখতে মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যদের স্বজনদেরকে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের নির্দেশ দেয়া হলেও তা মানেননি অধিকাংশ প্রার্থী।
আসন্ন উপজেলা নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু ও প্রভাবমুক্ত রাখতে আওয়ামী লীগের এমপি-মন্ত্রীদের আত্মীয়-স্বজনদেরও প্রার্থী হতে নিষেধ করেছেন দলীয় সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নির্দেশ না মানলে সময় মতো দলীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে বারবার হুঁশিয়ারিও উচ্চারণ করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
এ নিয়ে দফায় দফায় সাংগঠনিক সম্পাদকদের সাথে আলোচনা করেছেন দলের নীতিনির্ধারকরা। দলীয় কোন্দল নিরসন এবং নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক করতেই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল বলে জানান ক্ষমতাসীন দলের সাংগঠনিক সম্পাদক।
কিন্তু বিভিন্নভাবে চেষ্টা করেও মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয় স্বজনকে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সড়ানো সম্ভব হয়নি। কেউ কেউ পরিকল্পিতভাবে তাদের অনুগতদের প্রার্থী করেছেন। ফলে নির্বাচনে নিজেদের প্রার্থীর পক্ষে স্থানীয় প্রশাসনের উপর প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ প্রভাব খাটাতে পারেন মন্ত্রী-এমপিরা এমন আশঙ্কা রয়ে যাচ্ছে।
এ নিয়ে দফায় দফায় সম্পাদকদের সঙ্গে আলোচনা করেন দলের নীতি নির্ধারকরা। সিদ্ধান্ত না মানলে দলের মধ্যে দ্বন্দ্ব-কোন্দল বাড়বে বলেও শঙ্কা করছেন তারা।
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী বলেন, “শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয় সেজন্যই এই নির্দেশনা। কেউ যাতে প্রভাব বিস্তার না করতে পারে এবং নির্বাচনকে যাতে কেউ প্রশ্নবিদ্ধ করতে পারে সেই লক্ষ্যেই এই নির্দেশনা।”
তবে বাস্তবে মাত্র ২-৩টি উপজেলায় মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যের পরিবারের সদস্য মনোনয়ন প্রত্যাহার করলেও অন্য উপজেলাতে দলীয় প্রধানের নির্দেশ মানছে না কেউই।
সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন বলেন, “সাংগঠনিক সম্পাদকের বিষয়টা নিয়ে জেলা আমরা যোগাযোগ করেছি এবং এমপি-মন্ত্রী মহোদয়দের সঙ্গে যোগযোগ করেছি। অনেকে প্রত্যাহার করেছেন, অনেকে করেননি। অনেকে বলেছে আমরা মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার পর এই সিদ্ধান্তটা এসেছে।”
বিভিন্ন প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রভাব প্রদর্শন, শৃংখলা ও আচরণ ভঙ্গের বিষয়ে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জমা পড়েছে বেশ কয়েকটি অভিযোগ। সেগুলো তাৎক্ষনিক সমাধানের চেষ্টা করছেন সাংগঠনিক দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা।
সুজিত রায় নন্দী বলেন, “নির্দেশনা অনুযায়ী অনেকে প্রত্যাহার করেছেন। দ্বিতীয় ও তৃতীয় ধাপে সেই ধরনের কোনো শঙ্কা নেই, শঙ্কা অনেকটাই কমে এসেছে। যারা আচরণবিধি লংঘন করবে, যারা নির্বাচনকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করবে তাদের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশন কঠিন এবং কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। সেই ক্ষেত্রে দল তাদেরকে সহযোগিতা করবে।”
প্রথম দফার নির্বাচনকে এসিড টেস্ট হিসেবে দেখে পরের ধাপগুলোতে সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিয়েছে দলটি। ৩০ এপ্রিল দলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক কমিটির সভায় এ বিষয়ে আসতে পারে নতুন কৌশলের দিকনির্দেশনা।
এএইচ