কালো টাকা সাদা করার পক্ষে নন অর্থনীতিবিদরা
প্রকাশিত : ১১:২৮, ৩ জুন ২০২৪
বাজেটে অপ্রদর্শিত অর্থ বা কালো টাকা সাদা করার সুযোগ রাখার পক্ষে নন অর্থনীতিবিদরা। তারা বলছেন, এমন সুযোগ দেয়া হলেও খুব বেশি অর্থ করের আওতায় আসবে না। বরং এটি সৎ করদাতাদের নিরুৎসাহিত করবে। কালো টাকার উৎস বন্ধের পরামর্শ তাদের।
আয়কর আইন অনুযায়ী ব্যক্তিশ্রেণির করদাতাদের সর্বোচ্চ ২৫ শতাংশ কর দিতে হয়। কিন্তু আসছে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে মাত্র ১৫ শতাংশ কর দিয়ে ঢালাওভাবে কালো টাকা বা অপ্রদর্শিত অর্থ সাদা করার সুযোগ দিতে পারে সরকার। এমন সংবাদ এরই মধ্যে প্রকাশিত হয়েছে গণমাধ্যমগুলো।
এর আগে ২০২০-২১ অর্থবছরে মাত্র ১০ শতাংশ কর দিয়ে একই ধরণের সুযোগ দিয়েছিল সরকার। ১১ হাজার ৮৩৯ জন নিয়েছিল এ সুযোগ, যাতে সাদা হয়েছিল ২০ হাজার ৫০০ কোটি কালো টাকা।
আর ২০২১-২২ অর্থবছরে মাত্র সাড়ে ৭ শতাংশ কর দিয়ে বিদেশ থেকে অঘোষিত অর্থ দেশে আনার সুযোগ দেয়া হয়েছিল, এই সুযোগ কেউ নেননি।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, এনবিআর কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দিলেও সেখানে দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রশ্ন তোলোর সুযোগ থেকেই যায়। ফলে এ ধরনের সুযোগ খুব বেশি কাজে আসেনি। আর নৈতিকভাবেই এ ধরনের সুযোগ অগ্রহণযোগ্য।
অর্থনীতিবিদ ড. জামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, “তারা যেটা করছে, সেটা করেই যাচ্ছে। সুযোগ দিলেও এর ফলাফল আসবে না। টাকা কিন্তু আসেনি।”
সাবেক গভর্নর ও অর্থনীতিবিদ ড. আতিউর রহমান বলেন, “বিনিয়োগ সুবিধা যতোক্ষণ পর্যন্ত সহজ করতে না পারবো, কর কাঠামো যতোক্ষণ পর্যন্ত সহজ করতে না পারবো, যতোক্ষণ পর্যন্ত আমরা এই জায়গাটাতে স্বচ্ছতা না আনতে পারবো- এই ধরনের সুযোগ দিয়ে খুব বেশি লাভ হবেনা।”
কেন্দ্রীয় ব্যাংক, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড- এনবিআরসহ তদারকি সংস্থাগুলো সক্রিয় হলে কালো টাকা তৈরির সুযোগই থাকবে না। সরকারকে বরং এদিকেই মনযোগী হওয়ার পরামর্শ অর্থনীতিবিদদের।
ড. আতিউর রহমান বলেন, “ট্রেড ফাইনান্সের মধ্যে এই কালো টাকার তৈরি হওয়ার সুযোগ। অর্থাৎ আন্ডার ইনভয়েসিং ওভার ইনভয়েসিং করে।”
ড. জামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, “গোড়ায় যদি বন্ধ করতে না পারি এবং বন্ধ করার সব যন্ত্রপাতি আছে। সেই যন্ত্রপাতিগুলো কাজে লাগানো হচ্ছেনা।”
স্বচ্ছতা নিশ্চিতে সব ক্ষেত্রে অটোমেশনের কোনো বিকল্প নেই বলেও জানান অর্থনীতিবিদরা।
অর্থনীতিবিদ ড. জামাল বলেন, “ডিজিটাল পদ্ধতিতে যদি লেনদেনগুলো আনা যায় তাহলে এগুলো ধরা সহজ।”
এএইচ