না ফেরার দেশে ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণী
প্রকাশিত : ১৩:৪০, ৬ মার্চ ২০১৮ | আপডেট: ১৬:৩২, ৬ মার্চ ২০১৮
ফাইল ছবি
মুক্তিযোদ্ধা ও ভাস্কর ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণী আর নেই। মঙ্গলবার দুপুর ১টায় রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি ইন্তেকাল করেন (ইন্নালিল্লাহি...রাজিউন)। ইন্তেকালের সময় তার বয়স হয়েছিল ৭১ বছর।
খ্যাতিমান এই ভাস্কর হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিট-সিসিইউতে চিকিৎসাধীন ছিলেন বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে। বেশ কিছুদিন ধরেই তিনি বিভিন্ন রোগে ভোগছিলেন।
ল্যাবএইড হাসপাতালের গণসংযোগ বিভাগের পরিচালক সাইফুল ইসলাম লেলিন গণমাধ্যমকে জানান, দুপুর পৌনে ১টার সময় ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণী মারা গেছেন। তিনি কিডনি, ফুসফুসসহ কয়েকটি জটিল রোগে ভুগছিলেন। সর্বশেষ তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হন। ২৩ ফেব্রুয়ারি তিনি ল্যাবওইড হাসপাতালে ভর্তি হন। এর আগে তিনি দুইবার এই হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।
গত বছরের ৮ নভেম্বর বাসার ওয়াসরুমে পড়ে আঘাত পান ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণী। সে সময় তাকে রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালের সিসিইউতে নেওয়া হয়। পরে ২৩ নভেম্বর হেপাটোলজি (লিভার) বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীলের অধীনে বিএসএমএমইউ হাসপাতালে ভর্তি হন প্রিয়ভাষিণী। তিনি ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ ছাড়াও লিভার, কিডনি, ইউরিন ও থাইরয়েডের নানা সমস্যা ও জটিল বিভিন্ন রোগে ভুগছেন।
১৯৭১ সালে এদেশের লক্ষ লক্ষ মেয়ের মতো তিনিও পাক হানাদার বাহিনীর নির্যাতনের শিকার হন। মুক্তিযুদ্ধ নয় মাসে শেষ হলেও তার সংগ্রাম শেষ হয়নি। গত বছরের ১১ আগস্ট তাকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি দেয় সরকার।
পেশাজীবনে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকরির পাশাপাশি তিনি ভাস্কর হিসেবেও বেশ জনপ্রিয়। তার প্রকৃতিনির্ভর বিভিন্ন শিল্পকর্ম শিল্পবোদ্ধাদের আকৃষ্ট করে। ঝরা পাতা, শুকনো ডাল, গাছের গুঁড়ি দিয়েই তিনি গৃহের নানা শিল্পকর্ম তৈরি করেন।
তিনি ২০১০ সালে স্বাধীনতা পদক পান। এছাড়া ‘হিরো বাই দ্যা রিডার ডাইজেস্ট ম্যাগাজিন, চাদেরনাথ পদক, অনন্য শীর্ষদশ পদক, রৌপ্য জয়ন্তী পুরস্কার, মানবাধিকার পুরস্কার পেয়েছেন।
১৯৪৭ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি খুলনা শহরে নানা বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণী। প্রিয়ভাষিণীর ব্যক্তি ও শিল্পী জীবনে নানা বাড়ির প্রভাব অপরিসীম। এই নানা বাড়িতেই কেটেছে তার শৈশব-কৈশোরের দিনগুলো।
/ এআর /