সাবেক বিচারপতি আবদুল মওদুদ এর ৫০তম মৃত্যুবার্ষিকী আগামীকাল
প্রকাশিত : ১৬:৫০, ২০ জুলাই ২০২০
সাবেক বিচারপতি ও এশিয়াটিক সোসাইটির সভাপতি আবদুল মওদুদ
সাবেক বিচারপতি ও এশিয়াটিক সোসাইটির সভাপতি আবদুল মওদুদ এর ৫০তম মৃত্যুবার্ষিকী আগামীকাল। ১৯৭০ সালের ২১ জুলাই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
আবদুল মওদুদ ১৯০৮ সালের ১ জুন জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর গ্রামের বাড়ি বর্ধমান জেলার খন্ডকোষ থানার ওয়ারী গ্রামে। শৈশবেই পিতৃ-মাতৃহীন হয়েও শুধুমাত্র নিজের আগ্রহ ও বুদ্ধিমত্তায় গ্রামের স্কুল থেকে প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে কলকাতা ইসলামিয়া কলেজে লেখাপড়া করে আই.এ. পাস করেন। এরপর কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইসলামের ইতিহাস নিয়ে বিএ (অনার্স) ও এমএ পাস করেন। ১৯৩৩ সালে আইন পাস করেন। ১৯৩৬ সালে বেঙ্গল জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষায় অংশ নিয়ে কৃতিত্বের সঙ্গে উত্তীর্ণ হয়ে বিচারক হিসেবে বাংলার বিভিন্ন স্থানে চাকুরি করেন।
১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর তিনি কলকাতায় আলীপুর কোর্টের বিচারক ছিলেন। এ সময় তিনি অপশন দিয়ে পূর্ববঙ্গে চলে আসেন এবং তৎকালীন পাকিস্তান সরকারের বিচার বিভাগে চাকরি করেন। ১৯৬১ সালে তিনি ঢাকা জেলা দায়রা জজ হিসেবে কাজ করার সময় তৎকালীন পাকিস্তান কেন্দ্রীয় সরকারের বিচার বিভাগ আইন মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব হিসেবে নিয়োগ পেয়ে করাচি ও রাওয়ালপিন্ডিতে অবস্থান করেন। এ সময় তিনি সরকারি প্রতিনিধি দলের সদস্য হিসেবে জেনেভা ও নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ সভায় অংশগ্রহণ করেন। ১৯৬৭ সালে তিনি ঢাকা হাইকোর্টের বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান। অবসর গ্রহণের পর তিনি কেন্দ্রীয় বাংলা উন্নয়ন বোর্ড এবং নজরুল একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হন। তিনি ইতিহাস পরিষদ ও এশিয়াটিক সোসাইটির সভাপতি ছিলেন।
ছোটবেলা থেকে বই কেনা ও পড়ার প্রতি তাঁর ছিল গভীর আগ্রহ। বড় হয়ে ওঠার সঙ্গে মেধা ও মননের চর্চা তাকে আরও সমৃদ্ধ করেছে দেশ, মানুষ ও সমাজ নিয়ে ভাবতে। তিনি সংস্কৃত, ফার্সি, আরবি, ইংরেজি ভাষা শিখে ঐ ভাষার বইও পড়তেন। কলকাতায় কলেজে পড়ার সময় তাঁর লেখা প্রবন্ধ প্রকাশিত হয় দৈনিক আজাদ, মাসিক মোহাম্মদী, সওগাত এবং ইত্তেহাদ পত্রিকায়।
ঢাকার সবগুলো দৈনিক ও মাসিক সাহিত্য পত্রিকায় তাঁর অসংখ্য প্রবন্ধ ছাপা হয়েছে। তাঁর বিচার বিভাগের অভিজ্ঞতায় লেখা গল্প ‘ক্রিমিনাল’ সমকাল সাহিত্য পত্রিকায় ধারাবাহিক ছাপা হলে বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করে। একজন সুবক্তা, গবেষক, চিমত্মাবিদ ও ইতিহাসবিদ হিসেবে তিনি সুখ্যাতি অর্জন করেন।
তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থগুলো হলো- কামেল নবী (১৯৪৪ কলকাতা), ইসলাম ইউরোপকে যা শিখিয়েছে, ভারতে ওহাবী আন্দোলন (১৯৬৯), মুসলিম মনীষা (১৯৫৫), হযরত ওমর (১৯৬৫), ক্রিমিনাল, শাহ আবদুল লতিফ ভিটাই (১৯৬৪), মধ্যবিত্ত সমাজের বিকাশ : সংস্কৃতির রূপান্তর (১৯৭০) এবং উইলিয়াম হান্টারের ‘দি ইন্ডিয়ান মুসলমান’এর অনুবাদ (১৯৬৮) ও আর্নল্ড টয়েনবীর ‘পৃথিবী ও পাশ্চত্য ’এর অনুবাদ।
এমবি//