ঢাকা, বুধবার   ১২ মার্চ ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

সি আর দত্তের মরদেহ ঢাকায় আসছে সোমবার

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৩:২৮, ৩০ আগস্ট ২০২০

রেল (অব.) চিত্ত রঞ্জন দত্ত (সি আর দত্ত) বীরউত্তম

রেল (অব.) চিত্ত রঞ্জন দত্ত (সি আর দত্ত) বীরউত্তম

Ekushey Television Ltd.

মুক্তিযুদ্ধকালীন ৪ নম্বর সেক্টরের কমান্ডার মেজর জেনারেল (অব.) চিত্ত রঞ্জন দত্ত (সি আর দত্ত) বীরউত্তম’র মরদেহ আগামীকাল সোমবার ঢাকা পৌঁছাবে। প্রয়াত সিআর দত্তের ছেলে চিরঞ্জীব দত্ত গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন। 

জানা যায়, সোমবার সকালে এমিরেটস ফ্লাইট যোগে সি আর দত্তের মরদেহ ঢাকায় আনা হবে। একই ফ্লাইটে তার কানাডা প্রবাসী কন্যা চয়নিকা দত্ত ও তার স্বামী আসছেন। একমাত্র পুত্র চিরঞ্জীব দত্ত, কন্যা মহুয়া দত্ত ও কবিতা দাশগুপ্ত প্রায় একই সময়ে অন্য এয়ারলাইন্স যোগে ঢাকা পৌঁছাবেন।
বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মেজর জেনারেল (অব.) চিত্ত রঞ্জন দত্ত (সি আর দত্ত) বীরউত্তম যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বাংলাদেশ সময় গত মঙ্গলবার (২৫ আগস্ট) সকাল সাড়ে ৯ টা দিকে তিনি মারা যান।

গতকাল শনিবার সি আর দত্তকে শ্রদ্ধা জানাতে গঠিত ‘জেনারেল দত্ত জাতীয় নাগরিক কমিটি’ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, শেষ কৃত্যানুষ্ঠান সর্বোচ্চ সামরিক সম্মাননা ও যথাযথ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় আয়োজনের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হচ্ছে। 

এদিকে মুক্তিযোদ্ধা সি আর দত্তের প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানাতে সাবেক সেনাপ্রধান ও মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সেক্টর কমান্ডার মেজর জেনারেল (অব.) কে এম সফিউল্লাহ্কে আহ্বায়ক ও বিশিষ্ট সাংবাদিক বুদ্ধিজীবী শাহ্রিয়ার কবীরকে সদস্য সচিব করে ১০০১ সদস্যবিশিষ্ট জাতীয় নাগরিক কমিটি গঠন করা হয়েছে।

১৯২৭ সালের ১ জানুয়ারি আসামের শিলংয়ে জন্মগ্রহণ করেন চিত্ত রঞ্জন দত্ত। তাঁর পৈতৃক বাড়ি হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার মিরাশি গ্রামে। তাঁর বাবার নাম উপেন্দ্র চন্দ্র দত্ত এবং মায়ের নাম লাবণ্য প্রভা দত্ত। শিলংয়ের লাবান গভর্নমেন্ট হাইস্কুলে দ্বিতীয় শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশোনা করেছিলেন। পরে তাঁর বাবা চাকরি থেকে অবসর নিয়ে হবিগঞ্জে এসে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। হবিগঞ্জ গভর্নমেন্ট হাই স্কুল থেকে ১৯৪৪ সালে তিনি মাধ্যমিক পাস করেন। পরে কলকাতার আশুতোষ কলেজে বিজ্ঞান শাখায় ভর্তি হয়ে ছাত্রাবাসে থাকা শুরু করেন তিনি। এরপর খুলনার দৌলতপুর কলেজের বিজ্ঞান শাখায় ভর্তি হন। পরে এই কলেজ থেকেই বিএসসি পাস করেন।

১৯৫১ সালে চিত্ত রঞ্জন পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে যোগ দেন।  কিছুদিন পর সেকেন্ড লেফটেনেন্ট পদে কমিশন পান তিনি। ১৯৬৫ সালে সৈনিক জীবনে প্রথম যুদ্ধে লড়েন। ১৯৬৫ সালের পাক-ভারত যুদ্ধে পাকিস্তানের হয়ে আসালংয়ে একটি কম্পানির কমান্ডার হিসেবে যুদ্ধ করেন। ওই যুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ অবদানের জন্য পাকিস্তান সরকার তাঁকে পুরস্কৃত করে।

বাংলাদেশ রাইফেলসের প্রথম ডিরেক্টর জেনারেল ছিলেন সি আর দত্ত। ১৯৭৪ সাল থেকে ১৯৭৬ সাল পর্যন্ত তিনি হেড কোয়ার্টার চিফ অব লজিস্টিক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৭ সালে মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নেন। ১৯৭৯ সালে বিআরটিসি'র চেয়ারম্যান হিসেবে কিছুদিন দায়িত্ব পালন করেন। এর পর ১৯৮২ সালে তিনি পুনরায় মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের চেয়ারম্যান নিযুক্ত হন। ১৯৮৪ সালে তিনি অবসর গ্রহণ করেন।

মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে সিলেট জেলার পূর্বাঞ্চল খোয়াই শায়েস্তাগঞ্জ রেললাইন বাদে পূর্ব ও উত্তরদিকে সিলেট ডাউকি সড়ক পর্যন্ত এলাকা নিয়ে গঠিত হয় ৪ নম্বর সেক্টর। এই সেক্টরে কমান্ডারের দায়িত্বে ছিলেন সি আর দত্ত।

দায়িত্ব নিয়েই প্রথমে সিলেটের রশিদপুরে ক্যাম্প তৈরি করেন সি আর দত্ত। বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে চা বাগান থাকার সুবাদে আড়াল থেকে শত্রুদের ঘায়েল করেন দ্রুত সময়ে। পরে তিনি রশিদপুর ছেড়ে মৌলভীবাজার ক্যাম্প স্থাপন করেন। তাঁর অসামান্য অবদানের জন্য তাঁকে বীরউত্তম উপাধিতে ভূষিত করা হয়। ঢাকার কাঁটাবন থেকে কারওয়ান বাজার সিগন্যাল পর্যন্ত সড়কটি ‘বীরউত্তম সি আর দত্ত’ সড়ক নামে নামকরণ করা হয়। 

এমএস/


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি