চারণকবি বিজয় সরকারের ৩৬তম মৃত্যুবার্ষিকী
প্রকাশিত : ১০:৩৭, ৪ ডিসেম্বর ২০২১
‘এ পৃথিবী যেমন আছে তেমনি ঠিক রবে, সুন্দর এই পৃথিবী ছেড়ে একদিন চলে যেতে হবে’—জনপ্রিয় এই গানের স্রষ্টা কবিয়াল বিজয় সরকার। অসাম্প্রদায়িক চেতনার সুরস্রষ্টা চারণকবি বিজয় সরকারের ৩৬তম মৃত্যুবার্ষিকী শনিবার।
একুশে পদকপ্রাপ্ত গুণী এই শিল্পী বার্ধ্যকজনিত কারণে ১৯৮৫ সালের ৪ ডিসেম্বর ভারতে পরলোকগমন করেন কবিয়াল বিজয় সরকার। পশ্চিমবঙ্গের কেউটিয়ায় তাকে সমাহিত করা হয়।
কবি বিজয় সরকার ১৯০৩ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি নড়াইল সদর উপজেলার ডুমদি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বাবা নবকৃষ্ণ অধিকারী ও মা হিমালয়া দেবী। বিজয় সরকার নবমশ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করেছেন, মতান্তরে মেট্রিক পর্যন্ত।
বিজয় একাধারে গীতিকার, সুরকার ও গায়ক। ১৮০০ বেশি গান লিখেছেন তিনি। প্রকৃত নাম বিজয় অধিকারী হলেও সুর, সঙ্গীত ও অসাধারণ গায়কী ঢঙের জন্য ‘সরকার’ উপাধি লাভ করেন। ‘পাগল বিজয়’ হিসেবে সমধিক পরিচিত তিনি।
আধ্যাত্মিক ও অসাম্প্রদায়িক চেতনার বিজয় সরকার গেয়েছেন- ‘নবী নামের নৌকা গড়/ আল্লাহ নামের পাল খাটাও/ বিসমিল্লাহ বলিয়া মোমিন/ কূলের তরী খুলে দাও...।’ কিংবা ‘আল্লাহ রসূল বল মোমিন/ আল্লাহ রসূল বল/ এবার দূরে ফেলে মায়ার বোঝা/ সোজা পথে চল...।’
স্ত্রী বীনাপাণির মৃত্যুর খবরে গানের আসরেই গেয়েছেন- ‘পোষা পাখি উড়ে যাবে সজনী/ ওরে একদিন ভাবি নাই মনে/ সে আমারে ভুলবে কেমনে...।’ প্রিয়জনের উদ্দেশ্যে লিখেছেন- ‘তুমি জানো নারে প্রিয়/ তুমি মোর জীবনের সাধনা...’।
পল্লীকবি জসীমউদ্দীন-এর ‘নকশী কাঁথার মাঠ’ কাব্যগ্রন্থের নায়ক-নায়িকা ‘রূপাই’ ও ‘সাজু’র প্রেমকাহিনী নিয়ে বিজয় সরকার গেয়েছেন- ‘নকশী কাঁথার মাঠেরে/ সাজুর ব্যাথায় আজো রে বাজে রূপাই মিয়ার বাঁশের বাঁশি...।’ ‘কী সাপে কামড়াইলো আমারে/ ওরে ও সাপুড়িয়ারে/ আ...জ্বলিয়া পুড়িয়া মলেম বিষে’সহ অসংখ্য গান।
এএইচ/