তিমির হননের কবি জীবনানন্দ দাশের জন্মদিন আজ
প্রকাশিত : ১১:১০, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
‘আবার আসিব ফিরে ধানসিড়িটির তীরে ... এই বাংলায়/হয়তো মানুষ নয় ... হয়তো বা শঙ্খচিল শালিখের বেশে; এমনই কবিতা আর উপমার জাদুকর ঝরাপালকের কবি জীবনানন্দ দাশের ১২৪তম জন্মবার্ষিকী আজ। তিনি অনেকের কাছে রূপসী বাংলার কবি, কারো কাছে তিমির হননের কবি, কেউ বলেন নির্জনতার কবি, আবার কেউ বলেন তিনিই বাংলা ভাষার শুদ্ধতম কবি।
১৮৯৯ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি বরিশালে জন্মগ্রহণ করেন জীবনানন্দ দাশ। মা কবি কুসুম কুমারী দাশ ও বাবা সত্যানন্দ দাশ। পড়াশোনা ম্যাট্রিক ও আই এ বরিশালে। অনার্সসহ বি এ ও এম এ কলকাতায়। ১৯২২ সালে কলকাতা সিটি কলেজে অধ্যাপনা দিয়ে চাকরি জীবন শুরু। বাগেরহাট প্রফুল্লচন্দ্র কলেজে শিক্ষকতা করেন। দিল্লির রামযশ কলেজেও শিক্ষকতা করেন। ১৯৩০ সালে আবার দেশে ফেরেন। ১৯৩৫ সালে বরিশালের বিএম কলেজে যোগদান করেন। কিন্তু ১৯৪৭ সালে দেশবিভাগের কিছু আগে তিনি সপরিবারে কলকাতা চলে যান।
স্কুলজীবনেই কবি জীবনানন্দ দাশ বাংলা ও ইংরেজিতে লেখালেখি শুরু করেন। জীবনানন্দ তার কবিতায় প্রকৃতির যে বর্ণনা করে গেছেন তা যে কারোর মনেই ভিন্ন দ্যোতনার সৃষ্টি করে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর জীবনানন্দের কবিতাকে ‘চিত্ররূপময়’ আখ্যা দিয়েছিলেন। আসলে চিত্রময়তায় এমন অনুভূতির প্রকাশ অন্য কারো কবিতায় চোখে পড়ে না।
চারপাশের খুব সাধারণ দৃশ্যপটও তার লেখায় ছিল অসাধারণ। যার কবিতায় রয়েছে শুধুই মুগ্ধতা। প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘ঝরাপালক’ প্রকাশিত হয় ১৯২৭ সালে। বিখ্যাত কাব্যগ্রন্থগুলোর মধ্যে রয়েছে : ‘ধূসর পাণ্ডুলিপি’ (১৯৩৬), ‘মহাপৃথিবী’ (১৯৪৪), ‘সাতটি তারার তিমির’ (১৯৪৮), ‘রূপসী বাংলা’ (রচনাকাল ১৯৩৪, প্রকাশকাল ১৯৫৭) ‘বেলা অবেলা কালবেলা’ (১৯৬১)।
তার উপন্যাসের মধ্যে রয়েছে- ‘মাল্যবান’ (১৯৭৩), ‘সুতীর্থ’ (১৯৭৭), ‘জলপাইহাটি’ (১৯৮৫), ‘জীবনপ্রণালী’, ‘বাসমতীর উপ্যাখ্যান’ ইত্যাদি। তার গল্পের সংখ্যাও প্রায় দুই শতাধিক। ‘কবিতার কথা’ (১৯৫৫) নামে একটি মননশীল ও নন্দনভাবনামূলক প্রবন্ধগ্রন্থও আছে তার।
কবি ১৯৫৪ সালের ২২ অক্টোবর কলকাতার হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন।
বরিশালে তিন দিনব্যাপী জীবনানন্দ মেলা
এ উপলক্ষে বরিশালে আয়োজন করা হয় তিন দিন ব্যাপী জীবনানন্দ মেলার। সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত চলে এই মেলা।
বুধবার দুপুরে সরকারি ব্রজমোহন কলেজের মূল ভবন মাঠে বেলুন উড়িয়ে এই মেলার উদ্বোধন করেন কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর গোলাম কিবরিয়া।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে নাচ ও গান পরিবেশন করেন উত্তরণের কর্মীরা।
কবি জীবনানন্দ দাশ এই ব্রজমোহন কলেজের ছাত্র ও শিক্ষক ছিলেন। তার জন্মদিন উপলক্ষে মেলায় ৪০টি স্টল রয়েছে। তিন দিন ব্যাপী মেলার পাশাপাশি প্রতিদিনই ছিল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উত্তরনের কর্মীরা কলেজ ক্যাম্পাসে কবি জীবনানন্দ দাশের ম্যুরাল স্থাপনের দাবি তোলেন।
এসএ/