ঢাকা, বুধবার   ০৫ মার্চ ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

নোবেলজয়ী কবি পাবলো নেরুদার জন্মদিন আজ

প্রকাশিত : ০৮:৩৮, ১২ জুলাই ২০১৯ | আপডেট: ১২:২২, ১২ জুলাই ২০১৯

Ekushey Television Ltd.

আজ নোবেলজয়ী কবি পাবলো নেরুদার জন্মদিন। ১৯০৪ সালের ১২ জুলাই তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন চিলিয়ান কবি ও রাজনীতিবিদ। তার প্রকৃত নাম ছিল নেফতালি রিকার্দো রেয়েস বাসোয়ালতো। পাবলো নেরুদা প্রথমে তার ছদ্মনাম হলেও পরে নামটি আইনি বৈধতা পায়। কৈশোরে তিনি এই ছদ্মনামটি গ্রহণ করেন। ছদ্মনাম গ্রহণের পশ্চাতে দুটি কারণ ছিল।

প্রথমত, ছদ্মনাম গ্রহণ ছিল সে যুগের জনপ্রিয় রীতি; দ্বিতীয়ত, এই নামের আড়ালে তিনি তার কবিতাগুলি নিজের পিতার কাছ থেকে লুকিয়ে রাখতেন। কারণ তার পিতা ছিলেন কঠোর মনোভাবাপন্ন ব্যক্তি। তিনি চাইতেন তার পুত্র কোনো ‘ব্যবহারিক’ পেশা গ্রহণ করুক। নেরুদা নামটির উৎস চেক লেখক জান নেরুদা এবং পাবলো নামটির সম্ভাব্য উৎস হলেন পল ভারলেইন। পাবলো নেরুদাকে বিংশ শতাব্দীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ ও প্রভাবশালী লেখক মনে করা হয়। তার রচনা অনূদিত হয়েছে একাধিক ভাষায়।

নেরুদার সাহিত্যকর্মে বিভিন্ন প্রকাশ শৈলী ও ধারার সমাবেশ ঘটেছে। একদিকে তিনি যেমন লিখেছেন টোয়েন্টি পোয়েমস অফ লাভ অ্যান্ড আ সং অফ ডেসপায়ার-এর মতো কামোদ্দীপনামূলক কবিতা সংকলন, তেমনই রচনা করেছেন পরাবাস্তববাদী কবিতা, ঐতিহাসিক মহাকাব্য, এমনকি প্রকাশ্য রাজনৈতিক ইস্তাহারও। ১৯৭১ সালে নেরুদাকে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কারে ভূষিত করা হয়। তার রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের জন্য তাকে এই পুরস্কার প্রদান নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হয়। কলম্বিয়ান ঔপন্যাসিক গাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেস একদা নেরুদাকে ‘বিংশ শতাব্দীর সকল ভাষার শ্রেষ্ঠ কবি’ বলে বর্ণনা করেন।

১৯৪৫ সালের ১৫ জুলাই, ব্রাজিলের সাও পাওলোর পাকিম্বু স্টেডিয়ামে কমিউনিস্ট বিপ্লবী নেতা লুইস কার্লোস প্রেস্টেসের সম্মানে ১ লাখ লোকের সামনে ভাষণ দেন নেরুদা।

নোবেল পুরস্কার গ্রহণ করার পর চিলিতে ফিরলে সালভাদর আলেন্দে এস্ত্যাদিও ন্যাশোনালে ৭০ হাজার লোকের সামনে ভাষণ দেওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানান।

জীবদ্দশায় নেরুদা একাধিক কূটনৈতিক পদে বৃত হয়েছিলেন। একসময় তিনি চিলিয়ান কমিউনিস্ট পার্টির সেনেটর হিসেবেও কার্যভার সামলেছেন। কনজারভেটিভ চিলিয়ান রাষ্ট্রপতি গঞ্জালেস ভিদেলা চিলি থেকে কমিউনিজমকে উচ্ছেদ করার পর নেরুদার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করলে তার বন্ধুরা তাকে চিলির বন্দর ভালপারাইসোর একটি বাড়ির বেসমেন্টে কয়েক মাসের জন্য লুকিয়ে রাখেন। পরে গ্রেফতারি এড়িয়ে মাইহু হ্রদের পার্বত্য গিরিপথ ধরে তিনি পালিয়ে যান আর্জেন্টিনায়। কয়েক বছর পরে নেরুদা সমাজতন্ত্রী রাষ্ট্রপতি সালভাদর আলেন্দের এক ঘনিষ্ঠ সহকারীতে পরিণত হন।

চিলিতে অগাস্তো পিনোচেটের নেতৃত্বাধীন সামরিক অভ্যুত্থানের সময়েই ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন নেরুদা। তিন দিন পরেই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ১৯৭৩ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর মৃত্যু হয় তার।

কিংবদন্তি নেরুদার মৃত্যুতে সারা বিশ্বে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়। পিনোচেট নেরুদার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়াকে জনসমক্ষে অনুষ্ঠিত করার অনুমতি দেননি। যদিও হাজারে হাজারে শোকাহত চিলিয়ান সেদিন নিষেধাজ্ঞা ভেঙে পথে ভিড় জমান। পাবলো নেরুদার অন্ত্যেষ্টি চিলির সামরিক একনায়কতন্ত্রের বিরুদ্ধে প্রথম গণপ্রতিবাদে পরিণত হয়।

এসএ/

 


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি