জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে জয় ছাড়া কিছুই ভাবছে না বাংলাদেশ
প্রকাশিত : ১৫:০৩, ৬ জুলাই ২০২১
দক্ষিণ আফ্রিকার দেশটির ওপর টাইগারদের সাম্প্রতিক একক প্রাধান্য যে মোটেই অমুলক নয় তা প্রমাণ করতে আগামীকাল বুধবার শুরু হওয়া একমাত্র টেস্টে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে মাঠে নামবে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ বাংলাদেশ।
হারারে স্পোর্টস ক্লাবে বাংলাদেশ সময় বেলা দেড়টায় শুরু হওয়া ম্যাচটি গাজি টিভি ও টি স্পোর্টস সরাসরি সম্প্রচার করবে।
দীর্ঘ ২১ বছর আগে ক্রিকেটের এই অভিজাত ফর্মেটের সদস্য হলেও এখনো বাংলাদেশ দল দুর্বল রয়ে গেছে। তারপরও জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টাইগাররা সব সময়ই নিজেদের সেরাটা দিয়ে এসেছে।
তবে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বাংলাদেশ দলের বেশিরভাগ সাফল্যই এসেছে ২০১৩ সালের পর। একই বছরের পর থেকে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সব টেস্ট ম্যাচই বাংলাদেশে খেলেছে নিজ মাঠে। ২০১৩ সাল থেকে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ছয় টেস্ট খেলে পাঁচটিতে জিতেছে টাইগাররা। মাত্র একটি ম্যাচ হেরেছে বাংলাদেশ। তবে সাফল্যের তুলনায় ব্যর্থতা তেমনটা চোখে পড়েনা।
সব মিলিয়ে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে এ পর্যন্ত ১৭টেস্টে সাতটি জয় পেয়েছে বাংলাদেশ, যার ছয়টি এসেছে নিজ মাটিতে। পাঁচটি জয় এসেছে ২০১৩ সালের পর। বাংলাদেশ দলের প্রথম জয় এসেছে ২০০৫ সালে এবং এটাই ছিল বাংলাদেশ দলের প্রথম টেস্ট জয়। জিম্বাবুয়ের মাটিতে বাংলাদেশ দল একটি মাত্র টেস্টে জয় পেয়েছে ২০১৩ সালে। যা ছিল বাংলাদেশ দলের সর্বশেষ জিম্বাবুয়ে সফর। সফরে বাংলাদেশ ফেবারিট হিসেবে মাঠে নামলেও দুই টেস্টের সিরিজ ১-১ ব্যবধানে শেষ করে টাইগাররা।
বাংলাদেশের বিপক্ষে জিম্বাবুয়েও সাতটি টেস্ট জিতেছে এবং তার মধ্যে পাঁচটিই নিজেদের মাটিতে। বাংলাদেশর মাটিতে তারা ২০০১ ও ২০১৮ সালে দুটি টেস্ট জিতেছে। বাকি তিন ম্যাচ শেষ হয়েছে ড্রতে।
পরিস্যংখ্যানের দিক থেকে একই অবস্থায় থাকলেও দক্ষিণ আফ্রিকার দেশটি ২০১১ সালের পর থেকে নিয়মিত টেস্ট ক্রিকেট না খেলায় বাংলাদেশ এগিয়ে আছে।
পাঁচ বছরের স্বেচ্ছা নির্বাসনের পর ২০১১ সালে পুনরায় টেস্ট ক্রিকেটে ফিরে আসার পর জিম্বাবুয়ে মাত্র ৩১টি টেস্ট খেলেছে। পক্ষান্তরে এ সময়ের মধ্যে বাংলাদেশ খেলেছে ৫৫টি টেস্ট।
তবে লংগার ভার্সনে বাংলাদেশের গর্বিত হওয়ার তেমন কিছু নেই। কেননা এখানে বারবার তারা তাদের ব্যর্থতার প্রমান দিয়েছে। টেস্ট মর্যাদা পাওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত ১২৩টি টেস্ট খেলে মাত্র ১৪ ম্যাচে জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। পরাজিত হয়েছে ৯২টিতে, যার মধ্যে ইনিংস ব্যবধানে হেরেছে ৪৩টিতে। শেষ ২টিসহ ড্র করেছে ১৭ টেস্ট।
মজার বিষয় হচ্ছে টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশের জয়ের অর্ধেকই এসেছে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। তবে অনেকের মতেই বাংলাদেশ দলের সত্যিকারের পরীক্ষা শুরু হবে আগামীকাল।
জিম্বাবুয়েকে তাদের নিজ মাটিতে শক্তিশালী দল হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তবে তাদের উপড় একক আধিপত্য ও অভিজ্ঞতার কারণে বাংলাদেশকে প্রমানের সময় এসেছে।
যদিও লংগার ভার্সনে বাংলাদেশ দলের অনুশীলনের ঘাটতি রয়েছে। জিম্বাবুয়ে সফরের আগে দেশের মাটিতে বঙ্গবন্ধু ঢাকা প্রিমিয়ার লীগ(ডিপিএল) টি-২০ টুর্নামেন্ট খেলেছে বাংলাদেশ দল। তবে জাতীয় দলের বেশ কয়েকজনকে নিয়ে গড়া জিম্বাবুয়ে নির্বাচিত একাদশের বিপক্ষে দুই দিনের অনুশীলন ম্যাচে বাংলাদেশ দলের ব্যাটসম্যান বোলার সবাই ভাল করেছেন।
ব্যাটিং বোলিং কোন বিভাগেই প্রস্তুতি ম্যাচে পাত্তা পায়নি স্থানীয় দলটি। ব্যাট-বল দুই বিভাগেই সামনে থেকে দলের নেতৃত্ব দিয়েছেন খেলোয়াড় সাকিব আল হাসান। বাজে সময় কাটিতে ফর্মে ফিরেছেন সাকিব। ব্যাট হাতে ৫৬ বলে ৭১ রান করার পাাপাশি বল হাতে নিয়েছেন তিন উইকেট। দলের অন্য ব্যাটসম্যান বোলাররাও ভাল করেছেন।
তবে বাংলাদেশ দলের দু:শ্চিন্তা তামিম ইকবাল ও মুশফিকুর রহিমের ফিটনেস নিয়ে। তামিমের কাঁধে ও মুশফিকের হাতের আঙ্গুলে কিছুটা সমস্যা রয়েছে। তবে ম্যাচের আগেই তারা পুরো ফিট হবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ কোচ রাসেল ডোমিঙ্গো বলেন মুশফিক খেলার বিষয়ে আত্মবিশ্বাসী। তবে তামিমের বিষয়ে এখনো সন্দেহ রয়েছে।
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে একমাত্র টেস্টে একক আধিপত্য পজায়ে রাখেতে ধৈর্য্য এবং ধীর্ঘ সময় চাপ ধরে রাখার ওপড় গুরুত্বারোপ করেছেন।
ডোমিঙ্গো বলেন, ‘আমি মনে করি হারারেতে খেলার সময় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে ব্যাট-বলে ধৈর্য্য ধারন।’
ডোমিঙ্গো আরো বলেন, ‘আমাদের ধৈর্য্য ধরতে হবে, শৃংখলাবদ্ধ থাকতে হবে এবং সুযোগের অপক্ষোয় থাকতে হবে, যা সব সময় হয়তো নাও আসতে পারে। সুযোগ এেেল সেগুলো কাজে লাগানোর জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকতে হবে।
এসএ/