জয়ের এক শতকে যত রেকর্ড
প্রকাশিত : ২২:০৭, ২ এপ্রিল ২০২২ | আপডেট: ২২:১৩, ২ এপ্রিল ২০২২
মাহমুদুল হাসান জয়ের শতক উদযাপন
কিংসমিডে বৃষ্টি ও আলোক স্বল্পতায় নির্ধারিত সময়ের আগেই শেষ হয়ে যায় তৃতীয় দিনের খেলা। তার আগে দ্বিতীয় ইনিংসে ৪ ওভারে ৬ রান সংগ্রহ করে দক্ষিণ আফ্রিকা। ফলে ডারবান টেস্টের তৃতীয় দিন শেষে টাইগারদের বিপক্ষে ৭৫ রানের লিড নিয়েছে স্বাগতিকরা।
এর আগে দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে টেস্টে প্রথমবারের মতো সেঞ্চুরি হাঁকালেন বাংলাদেশের কোনো ব্যাটার। অনবদ্য এক সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে ১৩৭ রানে থামলেন মাহমুদুল হাসান জয়। তরুণ ওপেনারের ইতিহাস গড়া এই শতকে ডারবান টেস্টে ২৯৮ রানে থামল বাংলাদেশের প্রথম ইনিংস। ফলে ৬৯ রানে এগিয়ে থেকেই দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নামে স্বাগতিকরা।
দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ডারবান টেস্টের প্রথম ইনিংসে সতীর্থরা যখন আসা-যাওয়ায় ব্যস্ত ছিলেন, তখন একপ্রান্ত আগলে রেখে তিন টেস্টের ক্যারিয়ারে প্রথম শতক তুলে নেন জয়। যে শতকে ইতিহাস গড়ার পাশাপাশি গড়েছেন অনেক রেকর্ডও। প্রথম অর্ধশতকের মত জয় তার ক্যারিয়ারের প্রথম শতকটিও তুলে নিলেন বিদেশের মাটিতেই।
ওপেনে নেমে সতীর্থদের ব্যর্থতার বিপরীতে দাঁড়িয়ে বুক চিতিয়ে লড়াই করে আউট হয়েছেন শেষ ব্যাটার হিসেবে, ১৩৭ রানের ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস খেলেই। প্রায় সোয়া ৭ ঘণ্টা স্থায়ী তার ৩২৬ বলের এই ম্যারাথন ইনিংসে ছিল ১৫টি চারের সঙ্গে দুটি ছক্কার মার।
১৪১ বলে ব্যক্তিগত ৪৪ রান নিয়ে তৃতীয় দিনের খেলা শুরু করা এই তরুণ প্রথম সেশনে তুলে নেন অর্ধশতক, তবে ছিল না কোনো তাড়াহুড়া। তার ধীরস্থির ও ধৈর্যশীল ব্যাটিংয়ে ছিল নিখাদ টেস্ট ব্যাটিংয়ের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। ১৭০ বলের মোকাবেলায় অর্ধশতক হাঁকানোর পর দ্বিতীয় সেশনে দেখেছেন দুই সতীর্থ লিটন দাস ও ইয়াসির আলী চৌধুরীর সাজঘরে ফেরা। তবে তাতেও মনোবল ভাঙেনি জয়ের।
দক্ষিণ আফ্রিকার বোলারদের দেখেশুনে সামলে ২৬৯ বলে শতক পূর্ণ করেন জয়। টেস্টে বাংলাদেশি ব্যাটারদের ধৈর্যশীল ও মন্থর শতকের দিক থেকে যার অবস্থান ষষ্ঠতম।
এছাড়া শতক হাঁকানো বাংলাদেশের সর্বকনিষ্ঠ ব্যাটারদের তালিকায় জয়ের অবস্থান ১১তম। সেনা-কান্ট্রি (SENA) খ্যাত অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকায় সবচেয়ে কম বয়সে শতক হাঁকানো বাংলাদেশি ব্যাটারদের মধ্যে জয়ের অবস্থান দ্বিতীয়।
এখানেই শেষ নয়, রেকর্ড আছে আরও। জয়ই দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্টে সেঞ্চুরি হাঁকানো প্রথম ও এখন পর্যন্ত একমাত্র বাংলাদেশি ব্যাটার। স্বভাবতই, তার এই ইনিংসটি প্রোটিয়াদের বিপক্ষে কোনো বাংলাদেশি ক্রিকেটারের সেরা ইনিংস। জয় তাই রেকর্ডের পাশাপাশি গড়েছেন ইতিহাসও।
এমনকি, টাইগার ওপেনারদের মধ্যেও দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে জয়ের ইনিংসটিই সর্বোচ্চ। এর আগে ২০০২ সালে ওপেনিংয়ে আল শাহরিয়ার রোকন ৭১ রানের ইনিংস খেলেন।
একইসঙ্গে বাংলাদেশি ব্যাটারদের মধ্যে দক্ষিণ আফ্রিকায় টেস্টে এক ইনিংসে সর্বোচ্চ বল খেলার কীর্তিও গড়েছেন জয়। এর আগে দক্ষিণ আফ্রিকায় বাংলাদেশের পক্ষে এক ইনিংসে সর্বোচ্চ ১৫০ বল খেলেছিলেন মোমিনুল হক। জয় এদিন খেললেন ৩২৬ বল।
জয় ছাড়া দলের পক্ষে লিটন দাস ৪১, নাজমুল হোসাইন শান্ত ৩৮, মেহেদী মিরাজ ২৯ ও ইয়াসির আলী ২২ রান করে আউট হন। প্রোটিয়াদের পক্ষে সিমন হার্মার ১০৩ রানে ৪টি উইকেট দখল করেন। এছাড়া লিজাড উইলিয়ামস ৫৪ রানে নেন ৩টি উইকেট।
তার আগে, প্রথম ইনিংসে প্রোটিয়াদের সংগ্রহ ছিল ৩৬৭ রান। খালেদ আহমেদ ৪টি এবং মেহেদী মিরাজ ৩টি উইকেট লাভ করেন।
এনএস//