ঢাকা, রবিবার   ২৪ নভেম্বর ২০২৪

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম সিরিজ জয়ে চোখ বাংলাদেশের

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৮:৩১, ২২ মে ২০২২

বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার মধ্যকার প্রথম টেস্টের একটি দৃশ্য

বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার মধ্যকার প্রথম টেস্টের একটি দৃশ্য

চট্টগ্রাম টেস্ট ড্র হওয়ায়, ঢাকায় শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথমবার টেস্ট সিরিজ জয়ের লক্ষ্য নিয়েই মাঠে নামছে বাংলাদেশ। সোমবার সকাল ১০টায় মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শুরু হতে যাওয়া দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট জিতে সিরিজ জয়ের স্বাদ পেতে মরিয়া টাইগাররা।

জয়ের সম্ভাবনা সৃষ্টি করেও চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত প্রথম টেস্টে শেষ পর্যন্ত ড্র নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে মোমিনুলদের। শ্রীলঙ্কাকে ৩৯৭ রানে আটকে দিয়ে প্রথম ইনিংসে ৪৬৫ রান তুলেছিল স্বাগতিক দল। এতে প্রথম ইনিংস থেকে ৬৮ রানের লিড পায় মোমিনুলরা।

মন্থর পিচে টেস্টের পঞ্চম দিনে প্রথম সেশনে বাংলাদেশ প্রতিপক্ষের গুরুত্বপূর্ণ দুটি উইকেট তুলে নিলে  ম্যাচে কিছুটা গতি সঞ্চার করে। বিশেষভাবে বাংলাদেশের বাঁ-হাতি স্পিনার তাইজুল ইসলামকে খেলতে সমস্যায় পড়েছিল লঙ্কান ব্যাটাররা।

দ্বিতীয় সেশনের মাঝামাঝিতে সফরকারীরা ১৬১ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে বসে। এমন অবস্থায় ৯৩ রানে এগিয়ে ছিল তারা। এরপর দিনেশ চান্ডিমাল ৩৯ ও নিরোশান ডিকওয়েলা ৬১ রানের দু’টি অনবদ্য ইনিংস খেলে দলকে রক্ষা করেন। বঞ্চিত হয় বাংলাদেশ।

ম্যাচ শেষে টাইগার অধিনায়ক মোমিনুল হক জানিয়েছিলেন, জয় থেকে মাত্র ১টি উইকেট দূরে ছিলেন তারা। ম্যাচের চিত্র অনুযায়ী এটা ছিল বাংলাদেশের জন্য হতাশার। তবে দ্বিতীয় টেস্ট জিতে সেই হতাশাকে আনন্দে পরিণত করতে দলের সদস্যদের প্রতি জোরালো আহ্বান জানিয়েছেন অধিনায়ক।

রোববার ম্যাচপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে মোমিনুল হক বলেন, ‘মিরপুরের উইকেটে সবসময় ফলাফল আসে। তাই এই ভেন্যু থেকে ইতিবাচক ফলাফলের দিকেই তাকিয়ে আমরা।’

তিনি আরও বলেন, ‘এই উইকেটে বড় ভূমিকা থাকবে সাকিব-তাইজুলের। আশা করছি, ব্যাটাররা নিজেদের সেরাটা দিয়ে ম্যাচ জিততে তাদেরকে সহায়তা করবেন।’

এদিকে, আঙুলের ইনজুরিতে দ্বিতীয় টেস্ট থেকে ছিটকে গেছেন অফ-স্পিনার নাঈম হাসান। চট্টগ্রাম টেস্টের প্রথম ইনিংসে একাই ৬টি উইকেট নেন নাঈম। তাই এই স্পিনারের না থাকাটা, দ্বিতীয় টেস্ট জয়ের লক্ষ্যে থাকা বাংলাদেশের জন্য নিঃসন্দেহে বড় ধাক্কা।

তবে এই তরুণের জায়গায় খেলতে প্রস্তুত বল হাতে অফ-স্পিন করতে পারা ও ব্যাট হাতে ভালো করার সামর্থ্য রাখা মোসাদ্দেক হোসাইন সৈকত। একাদশে এই অলরাউন্ডারের অন্তর্ভুক্তির ইঙ্গিতও দিয়েছেন মোমিনুল। 
টেস্ট অধিনায়ক বলেন, ‘ইনজুরির কারণে নাঈম না থাকায় মোসাদ্দেকের খেলার সম্ভাবনা অনেক বেশি। সে ব্যাটিংটাও ভালো পারে।’

অন্যদিকে, ইনজুরির কারণে বাঁহাতি পেসার শরিফুল ইসলামকেও এ ম্যাচে পাচ্ছে না বাংলাদেশ। দলের একমাত্র ইনিংসে ব্যাট করার সময় আঘাত পাবার পর শ্রীলঙ্কার দ্বিতীয় ইনিংসে বল করতে পারেননি তরুণ এই পেসার। তার পরিবর্তে সুযোগ পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে এবাদত হোসাইনের। তবে ম্যানেজমেন্ট তাকে একাদশে রাখে কি-না, সেটিই দেখার বিষয়।

কারণ, মিরপুরের টেস্টে এক পেসার নিয়ে খেলার নজির রয়েছে বাংলাদেশের। ২০১৬ ও ২০১৭ সালে ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে অবিস্মরনীয় জয়ের ম্যাচে এক পেসার নিয়েঈ খেলেছিল টাইগাররা। তখন ওই দুই পরাশক্তির বিপক্ষে জয় পেতে স্পিনিং উইকেট বানিয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু উপমহাদেশের দলগুলোর বিপক্ষে এমন কৌশল কাজে লাগেনি টাইগারদের।

২০১৮ সালে এই ভেন্যুতে টেস্ট জিতেছিল শ্রীলঙ্কা। এমনকি এই মাঠে অনুষ্ঠিত সর্বশেষ টেস্টে বাংলাদেশকে ইনিংস ব্যবধানে হারিয়ে দেয় পাকিস্তান। এখানে টেস্ট জিতেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজও। তাই মিরপুর আর বাংলাদেশের জন্য পয়মন্ত নয় বলেই ইঙ্গিত রয়েছে।

তারপরও এখানে স্পিনই মুখ্য হয়ে উঠবে বলেই ইঙ্গিত দিয়েছেন মোমিনুল হক। একইসঙ্গে তিনি এটাও জানেন যে, এই উইকেটের সুবিধা নিতে শ্রীলঙ্কারও ভালো মানের স্পিনার রয়েছে।

তবে চট্টগ্রামের টেস্টে লক্ষ্য করা গেছে, সফরকারীদের চেয়ে বড় ব্যবধানেই এগিয়ে ছিল বাংলাদেশের স্পিনাররা। যা বাংলাদেশকে মানসিকভাবে এগিয়ে রাখবে।

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে এ পর্যন্ত ২৩টি ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ। যা কিনা যে কোনো দেশের বিপক্ষে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ টেস্ট পরিসংখ্যান। যদিও এই ২৩ টেস্টের মধ্যে মাত্র ১টিতেই জিতেছে টাইগাররা। হেরেছে ১৭টিতে এবং ৫টি টেস্ট ড্র হয়েছে।

পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০০১ সালের সেপ্টেম্বর থেকে প্রথম ১২ ম্যাচেই বাংলাদেশের বিপক্ষে জিতেছে শ্রীলঙ্কা। তবে ২০১৩ সালের মার্চ থেকে ঘুরে দাঁড়ায় বাংলাদেশ। দু’দলের সর্বশেষ ১০ ম্যাচের মধ্যে বাংলাদেশ হারে পাঁচ ম্যাচ। একমাত্র জয়টি আসে ২০১৭ সালে বাংলাদেশ দলের শততম টেস্টে, তাও শ্রীলঙ্কার মাটিতেই। আর চারটি টেস্ট শ্রীলঙ্কাকে ড্র করতে বাধ্য করেছিল টাইগাররা।

ঢাকা টেস্টে বাংলাদেশ একাদশ (সম্ভাব্য): 
তামিম ইকবাল, মাহমুদুল হাসান জয়, নাজমুল হোসাইন শান্ত, মোমিনুল হক সৌরভ (অধিনায়ক), মুশফিকুর রহিম, সাকিব আল হাসান, লিটন দাস (উইকেটরক্ষক), মোসাদ্দেক হোসাইন, তাইজুল ইসলাম, এবাদত হোসাইন, খালেদ আহমেদ।

শ্রীলঙ্কা একাদশ (সম্ভাব্য):
ওশাদা ফার্নান্ডো, দিমুথ করুণারত্নে (অধিনায়ক), কুশল মেন্ডিস, অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউজ, ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা, দীনেশ চান্দিমাল, নিরোশান ডিকওয়েলা (উইকেটরক্ষক), রমেশ মেন্ডিস, লাসিথ এম্বুলডেনিয়া, প্রবীণ জয়াবিক্রমা ও কাসুন রাজিথা/আসিথা ফার্নান্দো।

এনএস//


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি