আরও বেশি বেশি রান করতে চান আফিফ
প্রকাশিত : ১২:৫৭, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২২ | আপডেট: ১২:৫৮, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২২
আফিফ হোসাইন ধ্রুব
টি-টোয়েন্টিতে ধুঁকতে থাকা বাংলাদেশ দলে একমাত্র ব্যতিক্রম আফিফ হোসাইন। যেন বাংলাদেশ নামক অন্ধকার আকাশে একমাত্র ধ্রুব তারা। ম্যাচের পর ম্যাচ দলের ব্যাটিংকে একাই টেনে নিয়ে চলেছেন তিনি। টি-টোয়েন্টি ব্যাটিংয়ের দাবি মিটিয়ে হয়ে উঠেছেন দলের ভরসা।
তাতেও আত্মতৃপ্তি পেয়ে বসেনি তরুণ এই ব্যাটারকে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে দলের বিপর্যয়ে ক্যারিয়ার সেরা দারুণ এক ইনিংস খেলার পর বললেন, পরের ম্যাচ থেকে আরও বেশি রানের আশা তার।
দুবাইয়ে দুই ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশের ত্রাতা ছিলেন আফিফ। ১১ ওভার শেষে ৭৭ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে দল যখন বিব্রতকর অবস্থায়, ঠিক সেখান থেকেই অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহানকে সঙ্গী করে দলকে এগিয়ে নেন আফিফ।
দুজনের খেলা ৯ ওভারে ৮১ রানের জুটিতে বাংলাদেশ পায় মোটামুটি ভালো পুঁজি। ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস খেলে আফিফ করেন ৫৫ বলে অপরাজিত ৭৭।
আফিফের এই ইনিংসটি তার দুর্দান্ত ফর্মেরই ধারাবাহিকতা। এই বছর এখনও পর্যন্ত বাংলাদেশের সফলতম টি-টোয়েন্টি ব্যাটার তিনিই। ১১ ম্যাচ খেলে ৪০.৩৭ গড় ও ১২৬.৬৬ স্ট্রাইক রেটে করেছেন ৩২৩ রান। দলের আর কোনো ব্যাটারই করতে পারেননি ২৫০ রানের বেশি।
ব্যাটে হাতে রান করলেও আফিফ বরাবরই অল্প কথার মানুষ। সামনের ম্যাচগুলোয় প্রত্যাশার প্রশ্নে তার ছোট্ট উত্তর, “আশা করি, পরের ম্যাচ থেকে আরও বেশি রান করব।”
বয়স সবে ২৩ হলেও এই সংস্করণে তার অভিজ্ঞতা এখন কম নয় মোটেও। ৫০টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলে ফেললেন এই তরুণ তুর্কী। তার ব্যাটিংয়েও দেখা গেছে সেই অভিজ্ঞতারই ছাপ, চাপের মাঝেও যেভাবে ইনিংসটি খেললেন এবং শেষ করলেন, তাতে তাকে নিয়ে আশায় বুক বাঁধতেই পারেন ভক্তরা।
একের পর এক উইকেট হারানোর পর বাঁহাতি এই ব্যাটারের চাওয়া ছিল শেষ পর্যন্ত দলকে টেনে নেওয়া। ম্যাচ শেষে আফিফ বললেন, “শুরুতে উইকেট একটু কঠিন ছিল। বল গ্রিপ করছিল। টপ অর্ডার ভালো করতে পারেনি। আমি আর সোহান ভাই যখন ব্যাট করছিলাম, উইকেট আস্তে আস্তে ভালো হচ্ছিল বলে আমরা ভালো ব্যাট করতে পেরেছি।”
টি-টোয়েন্টি দলের সহ-অধিনায়ক বলেন, “আমাদের মধ্যে কথা হচ্ছিল যে, দুজন যদি শেষ পর্যন্ত থাকতে পারি, দুজনেরই বিশ্বাস ছিল যে দলকে একটা ভালো স্কোরে নিয়ে যেতে পারব।”
চলতি সফরে ব্যাটিং লাইন আপে এখন লিটনের পর সবচেয়ে অভিজ্ঞ নাম আফিফেরই। নিয়মিত অধিনায়ক সাকিব আল হাসান এখানে নেই সিপিএল খেলার কারণে। বাদ পড়েছেন মাহমুদউল্লাহ, অবসরে গেছেন মুশফিকুর রহিম। মিডল অর্ডারের মূল ভারটা তাই এখন আফিফের কাঁধেই।
তবে সেই ভারে নুইয়ে পড়ছেন না এই তরুণ। বললেন, “কোনো বাড়তি চাপ ছিল না। যে একাদশ খেলছে, সেটাই আমাদের সেরা একাদশ। তাই চাপ ছিল না।”
ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক সোহানও ম্যাচের পর প্রশংসা করলেন আফিফের ইনিংসের। তিনি বলেন, “আফিফ সত্যিই ভালো খেলেছে। পুরো সময় স্ট্রাইক রোটেট করেছে দারুণভাবে। আমাদের জন্য এটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল।”
শেষ পাঁচ ওভারে ৫৫ রান তুলে ৯ ওভারে ৮১ রানের জুটি গড়েন দুজনে। আফিফ-সোহানের জুটির পরও ম্যাচটি জিততে যথেষ্ট বেগ পেতে হয়েছে বাংলাদেশ দলকে। শেষ পর্যন্ত কোনো রকমে ধরা দিয়েছে ৭ রানের কষ্টের জয়।
সিরিজের শেষ ম্যাচ হবে মঙ্গলবার (২৭ সেপ্টেম্বর) একই মাঠে রাত ৮টায়।
এনএস//