একই ম্যাচে ‘দুইবার’ জিতল বাংলাদেশ!
প্রকাশিত : ১৩:১৮, ৩০ অক্টোবর ২০২২ | আপডেট: ১৩:২২, ৩০ অক্টোবর ২০২২
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে জয়ের মুহূর্তে বাংলাদেশ দল
শুরুর ধাক্কা সামলে দারুণ প্রতিরোধ গড়ে তোলেন শন উইলিয়ামস ও রায়ার্ন বার্ল। তাতেই শেষ ওভারে গড়ায় ম্যাচ। চরম নাটকে পূর্ণ শেষ ওভারের শেষ বলে দেখা দেয় আরও নাটকীয়তা। চূড়ান্ত উত্তেজনা ছড়িয়ে অবশ্য শেষ হাসি হেসেছে টাইগাররাই। জিম্বাবুয়েকে ৩ রানে হারিয়ে চলতি টুর্নামেন্টে দ্বিতীয় জয় তুলে নেয় সাকিব বাহিনী।
রোববার ব্রিজবেনের গ্যাবায় প্রথমে ব্যাট করে ১৫০ রান জড়ো করে বাংলাদেশ। চ্যালেঞ্জিং লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে দলীয় ৩৫ রানেই ৪ উইকেট হারায় জিম্বাবুয়ে।
এ অবস্থায় গড়া উইলিয়ামস ও বার্লের প্রতিরোধের পরও কাজের কাজটা করতে পারেনি আগের ম্যাচে পাকিস্তানকে হারানো রোডেশিয়রা। শেষ পর্যন্ত ১৪৭ রানেই থামে জিম্বাবুয়ের ইনিংস।
প্রথম ওভারেই ওয়েসলি মাধেভেরেকে মোস্তাফিজুর রহমানের ক্যাচ বানান তাসকিন। নিজের দ্বিতীয় ওভার করতে আসা ঢাকা এক্সপ্রেসের দ্বিতীয় শিকার হন অধিনায়ক আরভিন। সতীর্থকে একের পর এক উইকেট পেতে দেখে নিজেকেও সে মিছিলে শামিল করেন মুস্তাফিজ। ষষ্ঠ ওভারে মিলটন শুম্বা ও সিকান্দার রাজাকে বিদায় করেন এই বাঁহাতি পেসার।
তবে রায়ার্ন বার্লকে নিয়ে ঝড়ো ব্যাট করে জিম্বাবুয়েকে ম্যাচে রাখেন উইলিয়ামস। ৪২ বলে ৬৪ রান করে সাকিবের অসাধারণ থ্রোতে উইলিয়ামস রান আউট হয়ে ফিরলে ভাঙে তাদের ৬৩ রানের বিপজ্জনক জুটিটাও।
উইলিয়ামস ফিরতেই শেষ ওভারে ১৬ রানের সমীকরণ মেলাতে পারেনি জিম্বাবুয়ে। শাসরুদ্ধকর ও চরম নাটকীয়তায় পরিপূর্ণ শেষ ওভারে দুই উইকেট হারিয়ে নিতে পারে ১২ রান। যাতে ৩ রানের উত্তেজনাপূর্ণ জয় নিয়ে মাঠে ছাড়ে সাকিব বাহিনী।
চরম উত্তেজনাপূর্ণ শেষ ওভারটি করার জন্য সাকিব বল তুলে দেন মোসাদ্দেকের হাতে। অধিনায়কের আস্থার সঠিক প্রতিদানই দেন ডানহাতি স্পিনার। তবে নাটকীয় থেকে চরম নাটকীয় ওই ওভারে স্নায়ুর চরম পরীক্ষা নেন তিনি।
প্রথম বল থেকে লেগবাই সূত্রে এক রান নেয়ার পর উড়িয়ে মারতে গিয়ে সীমানায় সৌম্যের হাতে ধরা পড়েন ইভান্স। এরপর ক্রিজে এসেই লেগবাই সূত্রে চার আদায় করেন রিচার্ড এনগারাভা। ফলে ৩ বলে ১১ রান দরকার পড়ে জিম্বাবুয়ের।
এ অবস্থায় ডিপ স্কয়ার লেগ দিয়ে ছক্কা হাঁকান এনগারাভা। যাতে উত্তেজনায় ফেটে পড়ে দর্শক গ্যালারী। আর ২ বলে মাত্র ৫ রান দরকার পড়ে তাদের। ম্যাচ যখন হেলে পড়েছে জিম্বাবুয়ের দিকে, ঠিক তখনই ছক্কা হাঁকাতে যাওয়া এনগারাভাকে স্ট্যাম্পিংয়ের ফাঁদে ফেলেন মোসাদ্দেক-সোহান।
ফলে শেষ বলে ৫ রান ডিফেন্ড করতে হতো টাইগারদের। এ অবস্থায় শেষ বলেও স্ট্যাম্পিংয়ের ফাঁদে ফেলেন নতুন ক্রিজে আসা ব্লেসিং মুজারাবানিকে। সঙ্গে সঙ্গেই জয়ের আনন্দে মেতে উঠে মাঠ ছাড়েন টাইগাররা। তবে রিভিউয়ে স্ট্যাম্পের একটু সামনে থেকে বলটি ধরায় নো বল ডাকেন আম্পায়ার।
এমনই চরম নাটকীয় ম্যাচে আবারও মাঠে প্রবেশ করতে বাধ্য হন ফিল্ডার ও ব্যাটাররা। আর জিম্বাবুয়ের লক্ষ্য দাঁড়ায় ১ বলে ৪ রান। তবে এবার আর কোনও ভুলচুক করেননি মোসাদ্দেক বা সোহান। শেষ বলটি মিস করেন ব্যাটার মুজারাবানি। সেইসঙ্গে ৩ রানের উত্তেজনাপূর্ণ জয় নিয়েই মাঠ ছাড়েন সাকিব বাহিনী। আর আবারও ম্যাচ সেরা হন তাসকিন আহমেদ।
২৭ রানে অপরাজিত থাকেন বার্ল। ১৯ রানের বিনিময়ে ৩ উইকেট নেন তাসকিন। মোস্তাফিজের শিকার দুটি।
এর আগে বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ৭১ রানের ইনিংস খেলেন নাজমুল হোসাইন শান্ত। ৫৫ বলে ৭টি চারের পাশাপাশি একটি ছক্কা হাঁকান রাজশাহীর এই ক্রিকেটার। এছাড়া ২৯ রান আসে আফিফ হোসাইনের ব্যাট থেকে। ১৯ বলে একটি করে চার এবং ছয় মারেন আফিফ। আর ২০ বলে ২৩ রান করেন সাকিব।
জিম্বাবুয়ের রিচার্ড এনগারাভা ও ব্লেসিং মুজারাবানি শিকার করেন দুটি করে উইকেট।
এনএস//