ভারত-পাকিস্তানকে আগেও হারিয়েছে টাইগাররা
প্রকাশিত : ১৮:৫৬, ৩১ অক্টোবর ২০২২
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে জয়ের মুহূর্তে বাংলাদেশ দল
তিন ম্যাচের দুটিতে জিতে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আসরে নিজেদের গ্রুপে বাংলাদেশের অবস্থান এখন তৃতীয়। এখন পর্যন্ত বেশ ভালো সম্ভাবনা রয়েছে বাংলাদেশের। তবে এজন্য পরের দুই ম্যাচে ভারত ও পাকিস্তানকে হারানো জরুরি। এই দুই দলকে আগেও হারানোর অভিজ্ঞতা আছে টাইগারদের।
ফলে চলতি বিশ্বকাপে এই দুই দলকে আবারও হারিয়ে সেমিফাইনালের পথ পরিস্কার করাটা বাংলাদেশের জন্য কিছুটা কঠিন হলেও একেবারে অসম্ভব কিছুই নয়।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের চলমান আসরে বাংলাদেশ খেলছে বি-গ্রুপে। এই গ্রুপে আছে দুই নিকটতম প্রতিবেশী ভারত ও পাকিস্তান। শনিবার পর্যন্ত পয়েন্ট টেবিলটা যতটা স্থিতিশীল ছিল, দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে ভারতের হার এবং বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের জয়ে অনেকটাই পাল্টে গেছে চিত্র। গ্রুপের ছয় দলের মধ্যে পাঁচ দলেরই এখন সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে সেমিফাইনালে যাওয়ার। যে তালিকায় আছে সাকিবের দলও।
যে জিম্বাবুয়ের কাছে আগের ম্যাচে হেরে গিয়েছিল পাকিস্তান, সেই জিম্বাবুয়েকে হারিয়েই বাংলাদেশ উঠে এসেছে তিন নম্বরে। তিন ম্যাচ শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ তাই চার পয়েন্ট।
যদিও শেষ দুই ম্যাচের প্রতিপক্ষ বেশ শক্তিশালী, তবুও টাইগারদের সম্ভাবনা থাকছেই পরের রাউন্ডে যাওয়ার।
অ্যাডিলেডে আগামী ২ নভেম্বর বাংলাদেশ দল খেলতে নামবে রোহিত-কোহলিদের বিপক্ষে। আর সুপার টুয়েলভে নিজেদের শেষ ম্যাচে বাবর আজমদের বিপক্ষে খেলতে নামবে ৬ নভেম্বর। সেই ম্যাচটাও অনুষ্ঠিত হবে অ্যাডিলেড ওভালে।
শতাংশের হারে একেবারেই কম হলেও ভারত-পাকিস্তানকে হারানোর সুখকর অভিজ্ঞতা কিন্তু রয়েছে বাংলাদেশ দলের। ১৫ বার পরাজয় বরণ করতে হলেও পাকিস্তানকে দুইবার হারিয়ে মাঠ ছেড়েছে বাংলাদেশ।
অন্যদিকে ভারতের কাছে ১০ বার হারলেও এশিয়ার শক্তিশালী দলটিকে অন্তত একবার হারিয়েছে বাংলাদেশ। এ কারণে বলাই যায় যে, ভারত-পাকিস্তানকে হারানো কঠিন হলেও অসম্ভব নয়।
আর তেমনটা হলে সেমিফাইনালিস্ট হয়ে মাঠে নামতে দেখা যেতেই পারে সাকিব বাহিনীকে।
২০১৯ সালের ৩ নভেম্বর ভারতের অরুন জেটলি স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ ৭ উইকেটে হারিয়েছিল রোহিত বাহিনীকে। ওই ম্যাচে নির্ধারিত ২০ ওভারে ভারত ৬ উইকেটে ১৪৮ রান সংগ্রহ করে। জবাবে ৩ বল বাকি থাকতেই ৭ উইকেটের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে বাংলাদেশ, ১৫৪ রান তুলে।
অন্যদিকে পাকিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশ যে দুটি জয় পায়, দুটিই অনুষ্ঠিত হয়েছিল মিরপুর স্টেডিয়ামে। ২০১৫ সালের ২৪ এপ্রিল অনুষ্ঠিত প্রথম ম্যাচে পাকিস্তান নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেটে ১৪১ রান সংগ্রহ করে। জবাব ২২ বল হাতে রেখেই ১৪২ রান তুলে নেয় মুশফিকের দল।
অপর ম্যাচটি ছিল এশিয়া কাপে। ২০১৬ সালের ২ মার্চ অনুষ্ঠিত সেই ম্যাচে ৭ উইকেটে ১২৯ রান সংগ্রহ করে পাকিস্তান। জবাবে ৫ বল হাতে রেখেই ৫ উইকেটের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে বাংলাদেশ।
সুখকর এইসব স্মৃতি ফিরিয়ে এনে সাকিবের দল যদি এ দুই শক্তিশালী প্রতিপক্ষের বিপক্ষে জয় পেয়ে যায়, তাহলে নিশ্চিন্তে চলে যেতে পারে সেমিফাইনালে। অন্যদিকে একটি ম্যাচ জিতলেও প্রথমবারের মতো নকআউট পর্বে ওঠার সম্ভাবনা থাকছে টাইগারদের। সেক্ষেত্রে অনেক যদি, তবে, কিন্তু, তথাপির সমীকরণে পড়তে হবে সাকিব বাহীনিকে।
তবে আপাতত, ২ নভেম্বর আডিলেডের প্রথম ম্যাচটি ঘিরেই স্বপ্ন দেখছে এবং ছক কষছে টাইগার টিম ম্যানেজমেন্ট। ভারতের বিপক্ষে মাঠে নামার আগে কৌশল ঠিক করাতেই ব্যস্ত তারা। শ্রীরাম এন্ড কোং জানেন যে, সেমির লড়াইয়ে বাংলাদেশ টিকে আছে ঠিকই, কিন্তু লড়াইটা সহজ নয়।
যদিও নেদারল্যান্ডস আর জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে জয়ে অস্ট্রেলিয়া বিশ্বকাপ এখন বাংলাদেশের জন্য সফলতম আসর।
সোমবার (৩১ অক্টোবর) বিকেলে ব্রিসবেন থেকে ভারত ও পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচের ভেন্যু অ্যাডিলেডের বিমানে চড়েন সাকিবরা। প্রায় ২ ঘণ্টা ৪০ মিনিটের যাত্রা শেষে ভেন্যু শহরে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ দল। আগের দিনের ম্যাচ আর ভ্রমণ- সব মিলিয়ে একটা দিন বিশ্রামেই থাকবেন টাইগাররা।
এ বিষয়ে দলের মিডিয়া ম্যানেজার রাবিদ ইমাম জানিয়েছেন, আজ এবং ভারতের বিপক্ষে মাঠে নামার আগের দিন মঙ্গলবার অনুশীলন নেই বাংলাদেশ দলের।
এর আগে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে মাঠে নামার আগের দিনও বিশ্রামে কাটিয়েছিলেন সাকিবরা। সেদিন শুধু ঐচ্ছিক অনুশীলনে দেখা গিয়েছিল নুরুল হাসান সোহান ও ইয়াসির আলীকে।
এদিকে, আবহাওয়ার পূর্বাভাস জানাচ্ছে- অ্যাডিলেডে বুধবার বাংলাদেশ ও ভারতের ম্যাচের দিন নেমে আসতে পারে বৃষ্টি। সম্ভাবনা থাকছে ৬০ শতাংশ। আর তেমনটা হলে ভারতের দুশ্চিন্তা বাড়িয়ে স্বস্তি পেতে পারেন সাকিব-শান্তরা!
এনএস//