৯২-বিশ্বকাপের পুনরাবৃত্তি ঘটাতে চায় পাকিস্তান!
প্রকাশিত : ২০:২৪, ৮ নভেম্বর ২০২২
গ্রুপ পর্বে নানা নাটকীয়তার পর সেমিফাইনালের টিকিট পেয়েছে বাবর আজমের দল। যেখানে প্রতিপক্ষ নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে অষ্টম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনাল নিশ্চিত করতে চায় তারা। আর এক্ষেত্রে ১৯৯২ আসরের পুনরাবৃত্তি ঘটাতে চায় পাকিস্তান।
বুধাবার (৯ নভেম্বর) সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে (এসসিজি) অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় দুপুর ২টায়।
ইমরান খানের বুদ্ধিদীপ্ত অধিনায়কত্বে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে ১৯৯২ সালে বিশ্বকাপ শিরোপা জিতেছিলো পাকিস্তান। সে আসরের মতো এবারও পাকিস্তানের সামনে একই চিত্র। এবারও সেমিফাইনালে নিউজিল্যান্ডের মুখোমুখি পাকিস্তান।
৩০ বছর আগের সেই আসরে অবশ্য কোনও রকমে সেমিফাইনালে উঠেছিল পাকিস্তান। টুর্নামেন্ট থেকে বাদ পড়তে-পড়তে ভাগ্যের সহায়তায় কোনওভাবে শেষ চারে জায়গা করে নিয়েছিলো ইমরান খানের দল।
পরে সেই সময়ের তরুণ ইনজামাম-উল-হকের দুর্দান্ত নৈপুণ্যে ফাইনালে ওঠা পাকিস্তান শেষ পর্যন্ত ১৯৯২ আসরের শিরোপাও জিতেছিল।
এদিকে, চলমান অষ্টম আসরের সেমিফাইনালে ওঠা অপর দুই দল হলো- ইংল্যান্ড ও ভারত। দল দুটি বৃহস্পতিবার মুখোমুখি হবে, অ্যাডিলেডে। একই সময়ে।
এদিকে, বুধবার অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া প্রথম সেমিফাইনালের আগে পাকিস্তান দলের মেন্টর ম্যাথু হেইডেন বলেছেন, ‘এটি (১৯৯২ বিশ্বকাপ) সরাসরি প্রভাব ফেলছেনা। তবে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে- মিডিয়ার কল্যাণে ক্রিকেট ভক্তদের একটি অংশ, খেলোয়াড়, সাপোর্ট স্টাফ, আমরা সবাই এই মিশনের গুরুত্ব এবং তাৎপর্য বুঝতে পারি। আসলে ‘৯২’ আসরটি পাকিস্তান ক্রিকেটের জন্য স্মরণীয় একটি দিন ছিল।’
অস্ট্রেলিয়ার সাবেক এই ওপেনার আরও বলেন, ‘সেবারের টুর্নামেন্টেও সেমির আগ পর্যন্ত পাকিস্তান দল ছিল অগোছালো, আহামরি কোনও পারফরমেন্স ছিল না। চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে এবং তারপর হঠাৎ করে ঘুরে দাঁড়ায় পাকিস্তান। তারা বিপজ্জনক এবং শক্তিশালী হয়ে ওঠে। পাকিস্তানের জন্য সেবারের আসরটিও ছিল এবারের আসরের মতই।’
হেইডেন আরও বলেন, ‘মূলত একজন ভক্ত এবং অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটার হিসাবে আমি এতটুকু বলতে পারি, পাকিস্তান ক্রিকেটের পেস বোলিং আক্রমণ এবং ব্যাটিং লাইন-আপে আমাদের সত্যিই কিছু দেখার আছে।’
এবারের বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচেই জয়ের অবস্থায় থেকেও চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারতের কাছে হারতে হয়েছিলো পাকিস্তানকে। পরের ম্যাচে জিম্বাবুয়ের কাছেও অবিশ্বাস্যভাবে হার মানে তারা। পরপর দু’টি ম্যাচ হেরে সেমিফাইনালের পথ কঠিন হয়ে পড়ে পাকদের।
পরে দক্ষিণ আফ্রিকা এবং নেদারল্যান্ডসকে হারিয়ে সেমির লড়াইয়ে ফিরে তারা। যদিও পথের কাটা হয়ে দাঁড়িয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। তবে নেদারল্যান্ডসের কাছে প্রোটিয়াদের অপ্রত্যাশিত হারে পাকিস্তানের জন্য বড় সুযোগ তৈরি হয়।
বাংলাদেশের বিপক্ষে অনানুষ্ঠানিক কোয়ার্টার ফাইনালে পরিণত হওয়া ম্যাচটি ৫ উইকেটে জিতে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করে পাকিস্তান।
এ বিষয়ে হেইডেন বলেন, ‘যে কোনও দিন যে কোনও কিছুই ঘটতে পারে। ওই নির্দিষ্ট দিনেই নেদারল্যান্ডস হারিয়ে দিয়েছিলো দক্ষিণ আফ্রিকাকে। এটি আমাদের জন্য এই টুর্নামেন্টে একটি উল্লেখযোগ্য মুহূর্ত ছিল এবং সেই সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোটা আমাদের দলের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত ছিল।’
তবে প্রতিপক্ষ নিউজিল্যান্ডও যে দল হিসেবে সেরা- সেটা স্বীকার করে হেইডেন বলেন, ‘নিউজিল্যান্ড কেন টুর্নামেন্টের সেরা দল, সেটা ইতোমধ্যেই তারা প্রমাণ করেছে। যদিও গ্রুপ পর্বে ইংল্যান্ডের কাছে ম্যাচ হেরেছিলো কিউয়িরা। সকল পজিশনে সামর্থ্যবান ক্রিকেটার রয়েছে তাদের। কেন উইলিয়ামসনের মতো একজন সত্যিকারের শান্ত এবং ভদ্রলোকের নেতৃত্বে ক্রিকেট খেলছে তারা।’
সত্যিকার অর্থেই নিউজিল্যান্ড জানে, কিভাবে ফাইনালে যেতে হয়। ২০১৫ ওয়ানডে বিশ্বকাপের পর ২০১৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ এবং ২০১৭ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি বাদে আইসিসির প্রতিটি ইভেন্টের ফাইনাল খেলেছে কিউয়িরা।
২০১৫ এবং ২০১৯ ওয়ানডে বিশ্বকাপের ফাইনালও খেলেছে তারা। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত ফাইনালে হেরে যায় তারা। ২০২১ সালে প্রথম টেস্ট চ্যাম্পিয়নশীপের ফাইনাল জিতে আইসিসি ট্রফি জয়ের খরাও কাটিয়েছে নিউজিল্যান্ড। ২০২১ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও ফাইনাল খেলে নিউজজিল্যান্ড। অস্ট্রেলিয়ার কাছে হেরে যায়। এখন ১৯৯২ বিশ্বকাপের ক্ষত মুছে ফেলার সময় তাদের।
যদিও আইসিসি টুর্নামেন্টে পাকিস্তানের বিপক্ষে নিউজিল্যান্ডের রেকর্ড ভালো নয়। মোট ২৮ বারের মোকাবেলায় ১৭টিতে জয় আছে পাকিস্তানের।
এনএস//