ঢাকা, বুধবার   ০৯ অক্টোবর ২০২৪

মরক্কোর রূপকথা, নাকি ফ্রান্সের স্বপ্ন জয়!

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০১:১৩, ১৫ ডিসেম্বর ২০২২ | আপডেট: ০১:১৬, ১৫ ডিসেম্বর ২০২২

একের পর এক বিস্ময় উপহার দিয়ে, ইউরোপের প্রতিষ্ঠিত পরাশক্তিদের স্তব্ধ করে, ইতিহাসের নতুন অধ্যায় রচনা করে মরক্কো পাল্টে দিয়েছে বিশ্বকাপের সব হিসাব-নিকাশ। রূপকথার গল্প লিখে এখন তারা স্বপ্নের ফাইনালের খুব কাছে।

সেই পথে তাদের সামনে এবার পাহাড়সম চ্যালেঞ্জ। সেমিফাইনালে আজ তাদের প্রতিপক্ষ আসরের ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্স। টানা দ্বিতীয় বিশ্বকাপ শিরোপা জয়ের স্বপ্নে বিভোর এমবাপ্পে-জিরুদরা।

ডিফেন্ডিং বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা এবার খেলেছেও চ্যাম্পিয়নের মতো। গ্রুপ পর্বে তিউনিসিয়ার বিপক্ষে এক ম্যাচে সাইডবেঞ্চ পরীক্ষা করতে গিয়ে হার যদি বাদ দেওয়া যায়, তবে দেখা যাবে এই ফ্রান্সের সামনে দাঁড়াতে পারেনি প্রতিপক্ষরা।

গ্রুপপর্বে অস্ট্রেলিয়াকে ৪-১ গোলে উড়িয়ে দিয়ে শুরু। এরপর ডেনমার্কের বিপক্ষে ২-১ গোলে জয় ও শেষ ম্যাচে তিউনিসিয়ার কাছে হার। শেষ ষোলোতে আবারও দাপুটে জয় ফ্রান্সের, পোল্যান্ডকে হারায় ৩-১ এ। কোয়ার্টার ফাইনালে ইংল্যান্ডের মতো হট ফেভারিটরাও পারেনি। ফ্রান্স জেতে ২-১ ব্যবধানে।

কিলিয়ান এমবাপ্পে, অলিভার জিরুদ, অ্যান্তনিও গ্রিজম্যান, উসমান দেম্বেলে, ভারানেদের নিয়ে গড়া এই দলটি যেমন ছন্দে আছে; তাদের সামনে মরক্কো পাত্তা পাওয়ার কথাই না! তবে ফরাসিরা কাগজে-কলমে ভয়ংকর; তার ঠিক উল্টো হয়েও মরক্কো কিন্তু জায়ান্ট কিলার।

মরক্কো এবার যা করেছে, তা স্রেফ অবিশ্বাস্য। তিন বছর আগেও যে মরক্কো আফ্রিকান নেশন্স কাপের শেষ ষোলোয় হেরেছিল বেনিনের মতো দুর্বল দলের কাছে, বিশ্বকাপের তিন মাস আগে যারা পায় নতুন কোচ, তারাই কাতারে এসে হারিয়ে দিয়েছে বেলজিয়াম, স্পেন ও পর্তুগালের মতো দলকে। যাদের সবার অবস্থান ফিফা র‍্যাঙ্কিংয়ে সেরা দশের মধ্যে। 

চমক জাগানিয়া এসব সাফল্য প্রথম আফ্রিকান দল হিসেবে মরক্কোকে নিয়ে গেছে বিশ্বকাপের সেমি-ফাইনালে।  

একটা সময় ফরাসি ঔপনিবেশিক শাসনে থাকা মরক্কো ১৯৫৬ সালে স্বাধীনতা লাভের পর প্রথমবার বিশ্বকাপে খেলে ১৯৭০ আসরে। সেবার গ্রুপ পর্বেই থেমে যায় তাদের পথচলা। ১৬ বছর পর ১৯৮৬ আসরে তারা উঠে যায় শেষ ষোলোয়। এবারের আগ পর্যন্ত সেটাই ছিল বিশ্ব মঞ্চে তাদের সেরা সাফল্য। ২০১৮ রাশিয়া বিশ্বকাপ পর্যন্ত আরও তিন আসরে তাদের পথচলা থেমে গিয়েছিল গ্রুপ পর্বে।  

নিজেদের আগের পাঁচ আসর মিলিয়ে ১৬ ম্যাচে তাদের জয় ছিল স্রেফ ২টি। এবারের আসরে এখনও পর্যন্ত ৫ ম্যাচেই ধরা দিয়েছে ৩টি জয়! তাদের আসরের শুরুটা হয় গত আসরের রানার্সআপ ক্রোয়েশিয়ার সঙ্গে গোলশূন্য ড্রয়ে। এরপর তারা বড় চমক দেখায় বেলজিয়ামকে হারিয়ে। গত আসরে তৃতীয় হওয়া ও র‍্যাঙ্কিংয়ের দুই নম্বর দলটি বিদায় নেয় গ্রুপ পর্বে থেকেই। গ্রুপের শেষ ম্যাচে কানাডাকে হারিয়ে গ্রুপ সেরা হয়েই মরক্কো পা রাখে নকআউটের মঞ্চে।  

সবচেয়ে বড় ব্যাপার, আসরে মরক্কো গোল হজম করেছে স্রেফ একটি। তাও কানাডার বিপক্ষে আত্মঘাতী। অগাস্টের শেষ দিকে কোচ ওয়ালিদ রেগরাগুই দায়িত্ব নেওয়ার পর এখনও পর্যন্ত আট ম্যাচের একটিতেই কেবল জাল অক্ষত থাকেনি তাদের। অপরাজিত আছে সবগুলো ম্যাচে।  

এসব তথ্যই বলে দিচ্ছে, মরক্কোর রক্ষণ কতটা জমাট। এখানে আরেকজনের কথা বলতেই হয়, গোলরক্ষক ইয়াসিন বোনো। স্পেনের বিপক্ষে টাইব্রেকারে দুটি শট ঠেকিয়ে জয়ের নায়ক ছিলেন তিনিই। পর্তুগালের বিপক্ষেও দারুণ কয়েকটি সেভ করে রোনালদো, ফেলিক্সদের গোলবঞ্চিত রাখেন ৩১ বছর বয়সী গোলরক্ষক। 

এবার আরও বড় পরীক্ষা অপেক্ষা করছে বোনো ও তার সতীর্থদের সামনে।

এনএস//


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি