বরিশালকে হারিয়ে দ্বিতীয়স্থানে উঠে এলো কুমিল্লা
প্রকাশিত : ০৮:৩৫, ৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
পেসার মুকিদুল ইসলামের বিধ্বংসী বোলিংয়ে সাকিবের ফরচুন বরিশালকে ৫ উইকেটে হারিয়েছে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। এই জয়ে বিপিএল’র নবম আসরের পয়েন্ট টেবিলের দ্বিতীয়স্থানে উঠে এলো কুমিল্লা।
১১ ম্যাচে ৮ জয় ও ৩ হারে কুমিল্লার পয়েন্ট ১৬। ১১ ম্যাচে ১৬ পয়েন্ট আছে সিলেট স্ট্রাইকার্সেরও। রান রেটে এগিয়ে থাকায় শীর্ষে সিলেট। আর ১১ ম্যাচে ১৪ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের তৃতীয়স্থানে নেমে গেল বরিশাল।
টুর্নামেন্টের ৩৮তম ম্যাচে টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে কুমিল্লার মুকিদুলের বোলিং তোপে ১৯ দশমিক ১ ওভারে ১২১ রানে গুটিয়ে যায় বরিশাল। ২৩ রানে ৫ উইকেট নেন মুকিদুল। জবাবে ৯ বল বাকী থাকতে জয় পায় কুমিল্লা।
মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে মঙ্গলবার রাতে টস জিতে প্রথমে বোলিং করার সিদ্বান্ত নেন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের অধিনায়ক ইমরুল কায়েস। এ ম্যাচ দিয়ে এবারের বিপিএলে প্রথম খেলতে নামেন কুমিল্লার ওয়েস্ট ইন্ডিজের আন্দ্রে রাসেল ও সুনীল নারাইন।
ব্যাট হাতে নেমে ১৮ রানের মধ্যে দুই ওপেনারকে হারায় বরিশাল। এনামুল হককে ৩ রানে বিদায় করেন স্পিনার তানভীর ইসলাম। ৮ রানে রান আউট হন ফজলে মাহমুদ।
তৃতীয় উইকেটে জুটি গড়ার চেষ্টা করেছিলেন ব্যাটিংয়ে প্রমোশন পেয়ে তিন নম্বরে নামা মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ও অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। ২১ বলে ২০ রানের বেশি যোগ করতে পারেননি তারা। ৬ রান করা সাকিবকে বোল্ড করে জুটি ভাঙ্গেন পেসার মুকিদুল।
এরপর বরিশালকে চেপে ধরেন মুকিদুল ও রাসেল। পাকিস্তানের ইফতিখার আহমেদকে ৪ রানে রাসেল ও বড় ইনিংস খেলার পথে থাকা মাহমুদুল্লাহকে বিদায় করেন মুকিদুল। ৩টি চার ও ১টি ছক্কায় ২৬ বলে ৩৬ রান করেন মাহমুদুল্লাহ।
৬৪ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে চাপে পরে বরিশাল। এ অবস্থায় ষষ্ঠ উইকেটে ৩৭ বলে ৪৭ রানের জুটি গড়ে বরিশালকে লড়াইয়ে ফেরান আফগানিস্তানের করিম জানাত ও মেহেদি হাসান মিরাজ। এই জুটির কল্যাণেই ১শ’ রান পাড় করে বরিশাল। ১৭তম ওভারে মিরাজকে শিকার করে জুটি ভাঙ্গেন মুস্তাফিজুর রহমান। ১টি করে চার-ছক্কায় ১৮ বলে ১৭ রান করেন মিরাজ।
১৮তম ওভারে বরিশাল শিবিরে জোড়া আঘাত হানেন মুকিদুল। জানাতকে ৩২ ও পাকিস্তানী মোহাম্মদ ওয়াসিমকে শূন্য হাতে বিদায় দেন তিনি। ২৬ বল খেলে ৪টি চার ও ১টি ছয় মারেন জানাত।
প্রথম ৩ ওভারে ৪ উইকেট শিকার করেন মুকিদুল। ইনিংসের শেষ ওভারে বরিশালের শেষ ব্যাটারকে শিকার করে পাঁচ উইকেট পূর্ণ করেন মুকিদুল। ১২১ রানে অলআউট হয় বরিশাল।
৩ দশমিক ১ ওভার বল করে ২৩ রান দিয়ে ৫ উইকেট নেন মুকিদুল। টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে এটিই মুকিদুলের সেরা বোলিং ফিগার।
১২২ রানের সহজ টার্গেটে প্রথম সাত বলেই ১৬ রান তুলে নেন কুমিল্লার দুই ওপেনার লিটন দাস ও পাকিস্তানী মোহাম্মদ রিজওয়ান। দ্বিতীয় ওভারে ফজলের দারুন ক্যাচে রিজওয়ানকে ১১ রানে আউট করেন বরিশালের ওয়াসিম।
রিজওয়ানকে হারিয়ে পাওয়ার-প্লেতে ৪১ রান পায় কুমিল্লা। এরপর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারায় কুমিল্লা। ৪১ থেকে ৭৪ রানের মধ্যে চার ব্যাটারকে হারায় তারা। জাকের আলিকে ১০ রানে সাকিব, অধিনায়ক ইমরুল কায়েসকে ৫ রানে খালেদ, মোসাদ্দেককে ১ রানে এবাদত শিকার করেন।
তবে একপ্রান্ত আগলে থাকা লিটনকে বিদায় করে লড়াই জমিয়ে তুলেন এবাদত। একবার জীবন পেয়ে ৫টি চারে ৩৯ বলে ৩৬ রান করেন লিটন।
৭৪ রানে ৫ উইকেট পতনের পর জুটি বাঁধেন পাকিস্তানী খুশদিল শাহ ও রাসেল। শেষ ৫ ওভারে ৪৭ রান দরকার পরে কুমিল্লার।
ওয়াসিমের করা ১৬তম ওভারে ১৩, খালেদের করা ১৭তম ওভারে ১১, সাকিবের করা ১৮তম ওভারে ১৭ রান তুলে কুমিল্লার জয়ের পথ সহজ করেন খুশদিল ও রাসেল। এ সময় খুশদিল তিনটি চার ও ১টি ছক্কা এবং রাসেল ২টি করে চার-ছক্কা মারেন।
সাকিবের ওভারে রাসেল ২টি ছক্কা ও খুশদিল ১টি চার মারেন। শেষ ২ ওভারে ৬ রান দরকার পরে কুমিল্লার। ওয়াসিমের করা ১৯তম ওভারের তৃতীয় বলে ছক্কা মেরে কুমিল্লার জয় নিশ্চিত করেন রাসেল।
খুশদিল ১৯ বলে ৩টি চার ও ১টি ছক্কায় ২৩ এবং রাসেল ২টি চার ও ৩টি ছক্কায় ১৬ বলে ৩০ রানে অপরাজিত থাকেন।
বরিশালের এবাদত হোসেন ১৮ রানে ২ উইকেট নেন।
এএইচ