ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪

ম্যাচ ছেড়ে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েই ফেলেছিলেন ম্যাক্সওয়েল

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৫:৫০, ৮ নভেম্বর ২০২৩

আফগানিস্তানের বিপক্ষে অভাবনীয় এক ইনিংসের পর গ্লেন ম্যাক্সওয়েল বলেছেন, তার পুরো শরীর ব্যথা করছিল এবং তিনি প্রায় ম্যাচ ছেড়ে চলে আসার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছিলেন। অস্ট্রেলীয় এই অল-রাউন্ডারের অপরাজিত দুর্দান্ত ডাবল সেঞ্চুরিতে আফগানিস্তানের সাথে প্রায় হেরে যাওয়া ম্যাচটি শেষ পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়া ৩ উইকেটে জয়ী হয়েছে। 

ম্যাক্সওয়েলের অসাধারণ এই ইনিংসটি ইতোমধ্যেই ওয়ানডে ইতিহাসে সর্বকালের সেরা ইনিংসের তকমা পেয়ে গেছে।

প্রচণ্ড গরমে বার বার পেশীর টানে পড়া ম্যাক্সওয়েল ২০১ রানে অপরাজিত থেকে একাই অস্ট্রেলিয়াকে জয় উপহার দিয়েছেন। মঙ্গলবার রাতে মুম্বাইয়ে আফগানিস্তানের দেয়া ২৯২ রানের টার্গেট তাড়া করতে ম্যাক্সওয়েল একাই লড়ে গেছেন। ওয়ানডে বিশ্বকাপ ইতিহাসে এটি তৃতীয় ডাবল সেঞ্চুরির রেকর্ড।

রান তাড়া করে কোন ব্যাটারের ডাবল সেঞ্চুরির রেকর্ড এটাই প্রথম। কিন্তু এই কৃতিত্বের পিছনে রয়েছে ম্যাক্সওয়েলের দৃঢ় মানসিক শক্তির গল্প। এক পর্যায়ে পেশীর টানে তিনি মাটিতে শুয়ে পড়েছিলেন। কিন্তু দলের কথা বিবেচনা করে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা নিয়ে আবারও উঠে দাঁড়িয়েছেন। 

ম্যাক্সওয়েল পরে স্বীকার করেছেন অস্ট্রেলিয়ান ফিজিও নিক জোনসের সাথে তিনি আহত অবসরের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। ১৪৭ রানে যখন তিনি ক্রিজে ছিলেন ঐ সময় অস্ট্রেলিয়ার জয়ের জন্য আরও ৫৫ রান বাকি ছিল। সে সময়টি ছিল দারুন কঠিন, ম্যাক্সওয়েল ব্যাথায় মাটিতে শুয়ে পড়েন।

কিন্তু সেমিফাইনালে খেলার বিষয়টি সামনে রেখে ম্যাক্সওয়েল আবারও উঠে দাঁড়ান। ৯১ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে অস্ট্রেলিয়া যখন পরাজয়ের দ্বারপ্রান্তে তখনই ত্রাতা হয়ে উপস্থিত হন ম্যাক্সওয়েল।

অস্ট্রেলিয়ান গণমাধ্যমে ম্যাক্সওয়েল বলেছেন, ‘এটি অবাক করা একটি ইনিংস। কারণ আমার শরীর কোনভাবেই সায় দিচ্ছিল না। পায়ের আঙ্গুলগুলো অসাড় হয়ে আসছিল। পাঁজর  ও কাফ পেশীতে বারবার টান পড়ছিল। যে কারণে দুই পায়ের নীচের দিকে কোন শক্তি পাচ্ছিলাম না। ওই সময় বাম হ্যামস্ট্রিংয়েও টান পড়ে। এরপর শুরু হয় পিঠের ব্যাথা। যে কারণে মনে হচ্ছিল পুরো শরীরে ব্যাথা করছে।’

জোনস ওই সময় ম্যাক্সওয়েলকে ফিরে যাবার পরামর্শ দিয়েছিলেন। কিন্তু ম্যাক্সওয়েল মনে করেছেন চিকিৎসা শেষে আবারও ক্রিজে ফিরে আসার সময় হয়তো তিনি আর পাবেন না। ৩৫ বছর বয়সী ম্যাক্সওয়েল বলেন, ‘মাঠ থেকে চলে আসার বিষয়টি নিয়ে আমরা কথা বলেছি। ভেবেছি হয়েছিল চিকিৎসা শেষে আবারো ফিরে আসা যায় কিনা। কিন্তু জোনস আমাকে বলেছেন একবার ফিরে গেলে সিড়ি ভেঙ্গে আবারও মাঠে ফিরে আসা আমার জন্য সত্যিই কঠিন হয়ে যাবে। এরপর আমরা সিদ্ধান্ত নেই দেখা যাক শেষ পর্যন্ত কি হয়। যতক্ষণ পর্যন্ত থাকতে পারি থাকবো। কামিন্স আমাকে এসময় পরিপূর্ণ সহযোগিতা করেছে।’

অষ্টম উইকেটে অধিনায়ক প্যাট কামিন্সের সাথে ম্যাক্সওয়েল অস্ট্রেলিয়ার হয়ে সর্বোচ্চ ২০২ রানের জুটি হড়ে তুলে। এই পার্টনারশীপে কামিন্স একপ্রান্ত ধরে রেখে মাত্র ১২ রান যোগ করেছেন।

এই জয়ে অস্ট্রেলিয়া বিশ্বকাপে শেষ চার নিশ্চিত করেছে। ম্যাক্সওয়েলের এই ইনিংস ওয়ানডেতে সর্বকালের সেরা ইনিংস হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন কামিন্স। এ সময় অসি অধিনায়ক বলেন, ‘আমরা সবাই মিলে ম্যাচ শেষে যখন কথা বলেছি তখন একটি বিষয় সামনে এসেছে, এমন একটি দিনের অপেক্ষায় আমরা ছিলাম। ম্যাক্সওয়েলের এই ইনিংসে আমিও তার সাথে ছিলাম, এটাই আমার জন্য সৌভাগ্যের। সে বারবার পেশীর টানে ভুগছিল, কিন্তু আমি দেখেছি অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে খেলাটা সে কতটা ভালবাসে।’

ভারতীয় লিজেন্ড শচীন টেন্ডুলকার টুইটারে বলেছেন, ‘আমার জীবনে ওয়ানডেতে দেখা এটাই সেরা ইনিংস।’ ভারতের সাবেক কোচ রবি শাস্ত্রি বলেছেন, ‘অভাবনীয়।’

এএইচ


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি