ঢাকা, শুক্রবার   ১৪ মার্চ ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

রিয়ালকে বিধ্বস্ত করে চ্যাম্পিয়ন বার্সেলোনা

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৮:১৮, ১৩ জানুয়ারি ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

সবশেষ স্প্যানিশ সুপার কাপের ফাইনালে বার্সেলোনাকে ৪-১ গোলের বিশাল ব্যবধানে হারিয়েছিল রিয়াল মাদ্রিদ। অপরদিকে এল ক্লাসিকোর শেষ দেখায় ‘হালি’ গোলের ব্যবধানে রিয়ালকে বিধ্বস্ত করেছিল কাতালানরা। তাই এবারের স্প্যানিশ সুপার কাপের ফাইনাল নিয়ে উত্তেজনা ছিল ফুটবল ভক্তদের। তবে সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে ৫-২ গোলের ম্যাচে স্প্যানিশ সুপার কাপের রেকর্ড সর্বোচ্চ ১৫তম শিরোপা জিতল বার্সেলোনা।

রোববার দিবাগত রাতে জেদ্দার কিং আব্দুল্লাহ স্পোর্টস সিটিতে মহিমান্বিত রাত উদযাপন করেছে হ্যান্সি ফ্লিকের বার্সেলোনা। একইসঙ্গে কার্লো আনচেলত্তির রিয়ালকে ভুলে যাওয়ার মতো এক রাত উপহার দিয়েছে।

ম্যাচে বার্সেলোনার হয়ে রাফায়েল রাফিনিয়া জোড়া এবং একটি করে গোল করেন রবার্ট লেভান্ডফস্কি, লামিনে ইয়ামাল ও আলেহান্দ্রো বাল্দে। বিপরীতে কিলিয়ান এমবাপে ও রদ্রিগো গোয়েস একটি করে গোলে রিয়ালের হয়ে ব্যবধান কমান। 

পুরো ম্যাচে ফাউল হয়েছে ২৭টি। যার জন্য দেখানো হয় ১০টি কার্ড, এক লাল কার্ডে ১০ জনে পরিণত হয়েছিল বার্সেলোনা। তবুও ৫২ শতাংশ বলের দখল ছিল তাদের। 

ম্যাচের দ্বিতীয় ও তৃতীয় মিনিটে বার্সেলোনার পরপর দুটি আক্রমণ ঠেকিয়ে দেন থিবো কোর্তোয়া। পুরো বার্সা স্কোয়াড যখন রিয়ালের রক্ষণে, তখনই ভিনিসিয়ুস-এমবাপের কাউন্টার অ্যাটাক। প্রথমে মার্ক কাসাদোকে ফাঁকি দিয়ে নিজেদের অর্ধ থেকে বল নিয়ে ছোটেন ভিনি। এরপর মাঝমাঠ থেকে তার বাড়ানো পাস ধরে এমবাপে একজনকে কাটিয়ে বার্সা গোলরক্ষক ভয়চেক সিজনির পায়ের নিচ দিয়ে বল জালে জড়ান।

দশম মিনিটে রাফিনিয়ার শট রিয়ালের গোলবার ঘেঁষে বাইরে চলে যায়। দুই দলই আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে তটস্থ রাখে প্রতিপক্ষের রক্ষণভাগকে। এরই মাঝে ২১ মিনিটে ম্যাচে সমতা টানে কাতালানরা। জুল কুন্দে ও রবার্ট লেভান্ডফস্কি হয়ে বল পান লামিনে ইয়ামাল, এরপর কোনাকুনি দৌড়ে রিয়ালের দুজনকে কাটিয়ে দৃষ্টিনন্দন গোল করেন স্প্যানিশ ফরোয়ার্ড। ঝাঁপিয়েও নাগাল পাননি কোর্তোয়া, কর্নার দিয়ে বল জালে পৌঁছায়।

২৪ মিনিটে চুয়ামেনির হেড হাত দিয়ে ঠেলে বাইরে পাঠিয়ে দেন সিজনি। ৩৫ মিনিটে বার্সাকে লিড নেওয়ার সুযোগ করে দেন রিয়ালের ফরাসি মিডফিল্ডার কামাভিঙ্গা। নিজেদের বক্সে বার্সার গাভিকে কুংফু কিক মারায় ভিএআর দেখে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। এরপর লেভান্ডফস্কি স্পটকিকে স্কোরলাইন ২-১ এ পরিণত করেন।

ম্যাচের সবচেয়ে সুন্দর গোলটা হয় মিনিট চারেক পরই। বার্সার অ্যাসিস্ট এবং গোল দুটোই ছিল চোখে লেগে থাকার মতো। প্রায় মাঝমাঠ থেকে রিয়ালের বক্সে দূরপাল্লার ক্রস পাঠান কুন্দে, দৌড়ের ওপর লাফিয়ে সেই বলে মাথা ছুঁয়ে রিয়ালের জাল কাঁপান ব্রাজিলিয়ান উইঙ্গার রাফিনিয়া। 

নির্ধারিত ৪৫ মিনিট শেষে দেওয়া হয় অতিরিক্ত ৯ মিনিট। শেষ মিনিটেই কাউন্টার অ্যাটাকে ব্যবধান ৪-১ করে ফেলে বার্সা। দ্রুতগতিতে রিয়ালের অর্ধে গিয়ে রাফিনিয়া বল হারালেও আলেহান্দ্রো বাল্দে ক্ষিপ্রতার সঙ্গে নেওয়া শটে পরাস্ত করেন কোর্তোয়াকে।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই বার্সার ব্যবধানটা আরও বাড়িয়ে নেন রাফিনিয়া। এবারও কাউন্টার অ্যাটাক থেকে বল পেয়ে ডান পায়ে একজনকে কাটিয়ে বাঁ পায়ে গোল করলেন এই সেলেসাও ফরোয়ার্ড। ম্যাচে এটি তার দ্বিতীয় এবং চলতি মৌসুমে ১৯তম গোল। ৫৬ মিনিটে ১০ জনের দলে পরিণত হয় বার্সেলোনা।

এমবাপেকে ডি-বক্সের বাইরে ফাউল করে লাল কার্ড দেখেন গোলরক্ষক সিজনি। পরে ইনাকি পেনা নামেন গোলবার সামলাতে, দলের কম্বিনেশন মেলাতে ইয়ামালকে তুলে নিয়ে দানি ওলমোকে নামান বার্সা কোচ ফ্লিক।

সেই ফাউলের পর ভিএআরের কল্যাণে ফ্রি-কিক পায় রিয়াল। দারুণ সেটপিসে গোল করে বার্সার সঙ্গে ব্যবধান কমান রদ্রিগো। এরপর প্রতিপক্ষ একজন কম নিয়ে লড়াই করলেও আর জালের দেখা পায়নি রিয়াল। বাকি সময়ের বেশিরভাগ সময় নিজেদের রক্ষণ সামলাতেই ব্যস্ত ছিল বার্সা। 

এই সময়ে দুই দল একের পর এক শারীরিক লড়াইয়েও জড়ায়।

৯০ মিনিট পরে যোগ করা সময় দেওয়া হয় ৮ মিনিট। প্রথম মিনিটেই সহজ সুযোগ হাতছাড়া করেন বেলিংহ্যাম। বার্সা ডিফেন্ডার ও গোলরক্ষকের মাঝে এক স্পর্শেই গোল করতে হতো তাকে। তবে ঠিকঠাক পা ছোঁয়াতে পারেননি ইংলিশ মিডফিল্ডার। এভাবে আরও কয়েকটি আক্রমণ গোলহীন পরিণতি পায়। 

ফলে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের ধ্রুপদি লড়াইয়ে ৫-২ গোলের বড় জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে ১০ জনের বার্সেলোনা। তাতে রেকর্ড ১৫ বারের মতো শিরোপা নিশ্চিত করে কাতালানরা।

এএইচ


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি