মাশরাফি সম্পর্কে যা বললেন ডেভিড ইয়াং
প্রকাশিত : ১১:৩২, ৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ | আপডেট: ১১:৩৬, ৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৮
বাংলাদেশ ক্রিকেটের সঙ্গে ডেভিড ইয়াং নামটি জায়গা করে নিয়েছে। অষ্ট্রেলিয়ার এ শল্য চিকিৎসক বাংলাদেশ ক্রিকেটের প্রাণভ্রমরা মাশরাফির দেহে ৬ বার সফল অস্ত্রোপচার চালিয়েছেন। বারবার ইনজুরি আক্রান্ত টাইগার অধিনায়ককে এখনও পর্যন্ত ক্রিকেটে রাখার পেছনে তার অবদান সবারই জানা।
সেই মাশরাফির উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেছেন ইয়াং। বলেন, প্রতিটি ক্রিকেট দলেই মাশরাফির মতো একজন নেতা প্রয়োজন। যিনি সহখেলোয়ারদের নিয়ে ভাবেন, তাদের কাছ থেকে সেরা পারফরমেন্স বের করে আনেন। সর্বোপরি দেশকে ভালোবাসেন ও দেশের জন্য খেলেন।
বাংলাদেশ অর্থোপেডিক সোসাইটির এক সম্মেলনে অংশ নিতে ঢাকায় এসেছেন ইয়াং। তিনি গতকাল মঙ্গলবার বিসিবিতে আসেন। যেখানে মাশরাফির সঙ্গে অনেকটা অন্তরঙ্গ সময় কেটেছে।
শুধু মাশরাফি নন, বাংলাদেশের অনেক ক্রিকেটারকেই চিকিৎসা করেছেন ইয়াং। বিসিবিতে তাই তার খোঁজ নেওয়ার লোকের অভাব নেই, তবে মাশরাফির সঙ্গে সম্পর্কটাই সবচেয়ে গভীর।
বিসিবিতে পা রেখে ‘রোগী’ মাশরাফিকে পেয়ে ভীষণ উচ্ছ্বসিতই দেখা গেল ইয়াংকে। বাংলাদেশের ওয়ানডে অধিনায়ককে প্রশংসায় ভাসিয়ে এই চিকিৎসক বলেন, ‘মাশরাফি একজন পেশাদার খেলোয়াড়। সে পুরোপুরি খেলা এবং দেশের জন্য নিবেদিতপ্রাণ। তার ক্যারিয়ারের কিছুটা অংশ হতে পেরে আমি আনন্দিত।’
শুধু খেলোয়াড় মাশরাফি নয়, ব্যক্তি মাশরাফিকেও ভীষণ পছন্দ করেন ইয়াং, মাশরাফির যে দিকটি আমি পছন্দ করি সেটা হলো, সে খুবই ভালো মানুষ। একইসঙ্গে সে বড় হৃদয়ের মানুষও।
মাশরাফি দলের সবার যত্ন নেন, সবার কথা আলাদাভাবে ভাবেন। ডেডিভ ইয়াংও সেটা জানেন।
ইনজুরি থেকে মাশরাফির প্রত্যাবর্তন সম্পর্কে ইয়াং বলেন, বারবার ইনজুরিতে পড়ার পরেও মাশরাফির ফিরে আসার পেছনে তার নিজের চেষ্টাটাই বড় ছিল। মাশরাফি খুবই পেশাদার। সে তার দেশ ও ক্রিকেটের প্রতি অনুগত। তার ভাষ্যে, ‘আমি এটা খুশিমনেই বলছি যে তার সেরে ওঠার ক্ষেত্রে আমার অবদান সামান্য। পুরো পুনর্বাসন প্রক্রিয়ার কৃতিত্ব মাশরাফির।’
তিনি বলেন, ‘ক্যারিয়ারে অল্প সময়ের জন্য হলেও আমি ছিলাম। ওর যে বিষয়টা আমার ভালো লাগে সেটা হলো মানুষ হিসেবে সে অসাধারণ এবং তার হৃদয়টা অনেক বড়। সে একজন দাতাও যে তার আশপাশের মানুষ, দল এমনকি দেশ নিয়েও ভাবে।’
মাশরাফিকে বাংলাদেশের ক্রিকেটের একজন বিশেষ দূত আখ্যা দেন ইয়াং। তিনি বলেন, প্রতিটি দলেরই একজন নেতা প্রয়োজন। যিনি শুধু ক্রিকেটার হিসেবেই নন, সবসময়ই একজন নেতার ভূমিকা পালন করবেন। সে তার দলের প্রয়োজনে অবশ্যই টেস্ট খেলবে।
মাশরাফি বিন মর্তুজাও ডেভিড ইয়ংকে বাংলাদেশ ক্রিকেটের একজন অদৃশ্য বন্ধু বলে মনে করেন। ২০১১ সালে শেষবার অস্ত্রোপচার করার পর মাশরাফিকে আর বড় কোনো ইনজুরিতে পড়তে হয়নি। তিনি বলেন, ‘এখন অবস্থা এমন হয়েছে, হাঁটু বা এই ধরণের কোনো সমস্যায় পড়লে অন্য কারো কাছে যেতে অস্বস্তিবোধ করি। শুধু আমি না আমাদের অনেক ক্রিকেটারই এই ধরণের সমস্যায় তার কাছেই যাই।’
টেস্ট ম্যাচ দিয়ে ক্যারিয়ার শুরু মাশরাফি বিন মর্তুজার। ২০০১ সালের ৮ নভেম্বর বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে জিম্বাবুয়ের বিরুদ্ধে সাদা পোশাকে প্রথম মাঠে নামেন মাশরাফি। সবশেষ টেস্ট খেলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে ২০০৯ সালে। এরপর আর তার আন্তর্জাতিক টেস্ট খেলা হয়নি। ৩৬ টি টেস্ট খেলে মাশরাফির উইকেট ৭৮টি। অন্যদিকে ১৮৭ ওয়ানডে খেলে মাশরাফির উইকেট ২৩৮টি।
সম্প্রতি ঘরোয়া ক্রিকেটে সাদা পোশাকে মাঠে নেমে নিজের জাত চিনিয়েছেন মাশরাফি। এরপর থেকেই তাকে আবার দলে ফেরানোর আলোচনা শুরু হয়।
সূত্র : বিবিসি ও ক্রিকইনফো।
/ এআর /