দলকে বিপর্যয়ে রেখে ফিরলেন মাহমুদুল্লাহও
প্রকাশিত : ১৩:০৪, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ | আপডেট: ১৩:০৪, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৮
ঢাকা টেস্টে জিততে হলে বাংলাদেশের দরকার ৩৩৯ রান। জয়ের লক্ষ্য নিয়েই দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নামে বাংলাদেশ। তবে শুরুতেই হতাশ করেন তামিম ইকবাল। দলের এ নির্ভরযোগ্য ব্যাটসম্যান দলীয় ৩ রানের মাথায় পেরেরার বলে ক্লিন এলবিডব্লিউ হয়ে ব্যাক্তিগত ২ রানে মাঠ ছাড়েন।
এরপর ব্যর্থতার খাতায় নাম লেখান তামিমের সঙ্গে ওপেনিংয়ে নামা ইমরুল কায়েসও। ভালো কিছু করার আশা জাগিয়ে একে একে ফিরেন মমিনুল ও লিটন দাস। দলকে মহাবিপর্যয়ে রেখে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহও।
তামিমের পর মাঠে নামেন মমিনুল হক। মমিনুল ও ইমরুল কিছুটা আক্রমনাত্মক ব্যাটিং করছিলেন। মমিনুল দ্রুত দুই চার মেরে শ্রীলংকার বোলারদের আগ্রাসী মনোভাবে চিড় ধরানোর চেষ্টা করেছেন। অন্যদিকে ইমরুলও তাকে সঠিক সঙ্গ দিচ্ছিলেন। ছক্কা মেরে বোলারদের এলোমেলো করে দেওয়ার চেষ্টা ছিল ইমরুলের ব্যাটে।
এই দুজনের ব্যাটে কিছুটা ঘুরেও দাঁড়িয়েছিল বাংলাদেশ। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ইমরুল কায়েস ও মুমিনুল হক জুটি ৪৬ রান তুলে ফেলেন। কিন্তু দলীয় ৪৯ রানের মাথায় ইমরুল ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান ব্যাক্তিগত ১৭ রানে। এক্ষেত্রে বোলার রঙ্গনা হেরাথ।
সঙ্গী ইমরুলকে হারিয়ে ক্রিজে টিকে থাকতে সচেষ্ট ছিলেন নির্ভরযোগ্য ব্যাটসম্যান মমিনুল। মুশফিককে নিয়ে টুকটাক রান করে এগিয়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু সহ্য হলো না হেরাথের। দলীয় ৬৪ রানের মাথায় তুলে নেন মমিনুলকে। ডিকেভেলার হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরার সময় মমিনুলের স্কোর ৩৩। ৪৭ বল খরচায় অনেকা ওয়ানডে মেজাজে খেলে তিন চারে এ রান করেন মমিনুল।
মমিনুলের পর মাঠে নামেন ১ম টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে সফল লিটন দাস। কিন্তু লিটনের স্থায়িত্ব মাত্র চার ওভার। ২০ বল খেলে ১২ রান করে ধনঞ্জয়ার বলে আউট হন। লিটনের রীতিমত উইকেট বিসর্জন দিয়ে এসেছেন। শর্টে দাঁড়ানো মেন্ডিসের হাতে সহজ ক্যাচ দেন।
এর মাত্র চার ওভার ব্যবধানে অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ করুণারত্নের হাতে ক্যাচ দিয়ে আউট হন। এক্ষেত্রেও বোলার ধনঞ্জয়া। মাহমুদুল্লাহর ইনিংস সাঙ্গ হয় ৬ রানে।
এই প্রতিবেদন লেখার সময় বাংলাদেশ ২৪ ওভারে ১00 রান তুলেছে ৫ উইকেট হারিয়ে।
এই টেস্ট ড্র হওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। কারণ আজ মাত্র তৃতীয় দিন। হাতে আছে দু’দিন। তাই জয় পরাজয় একটি রেজাল্ট বেরিয়ে আসবে। শুধু তাই নয়। এই ম্যাচ যে জিতবে সিরিজ যাবে তার ঝুলিতেই।
এর আগে আজ তৃতীয় দিনের শুরুতেই শ্রীলঙ্কার দুই উইকেট তুলে নিয়েছে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ইনিংসে ২২৬ রানে অলআউট হয়ে গেছে শ্রীলঙ্কা। তৃতীয় দিনের শুরুতেই দুটি উইকেট তুলে নিয়ে শ্রীলংকার পুজি বড় করতে দেন দিন তাইজুল।
প্রথম ইনিংসে শ্রীলঙ্কা করেছিল ২২২ রান। জবাবে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশ করেছিল ১১০ রান। ১১২ রানের লিড নিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিং শুরু করেছিল শ্রীলঙ্কা। সেখানেও সংগ্রহটা খুব বেশি বড় করতে পারেনি লঙ্কান ব্যাটসম্যানরা। প্রথম ইনিংসের মতো দ্বিতীয় ইনিংসেও বল হাতে জ্বলে উঠেছিলেন তাইজুল ইসলাম। এবার তিনি নিয়েছেন চারটি উইকেট। তিনটি উইকেট পেয়েছেন মুস্তাফিজুর রহমান। মিরাজ নিয়েছেন দুটি উইকেট।
ঢাকা টেস্টের প্রথম দিন বল হাতে দারুণ নৈপুণ্য দেখিয়েছিলেন বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা। দুর্দান্ত বোলিং করে শ্রীলঙ্কাকে মাত্র ২২২ রানে বেঁধে ফেলেছিলেন আবদুর রাজ্জাক, তাইজুল ইসলাম। কিন্তু নিজেদের প্রথম ইনিংসে ব্যাট হাতে সেভাবে জ্বলে উঠতে পারননি মাহমুদউল্লাহর দল। অলআউট হয়ে গিয়েছিল মাত্র ১১০ রানে। অন্য ব্যাটসম্যানরা যেখানে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন, সেখানে ৩৮ রানে অপরাজিত থেকে বাংলাদেশের পক্ষে একাই লড়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজ।
প্রথম ইনিংসে শ্রীলঙ্কার করা ২২২ রানের জবাবে ব্যাট করতে নেমে মাত্র ১২ রান সংগ্রহ করতেই বাংলাদেশ হারিয়েছিল প্রথম সারির তিন ব্যাটসম্যান তামিম ইকবাল, মুমিনুল হক ও মুশফিকুর রহিমকে। দিনের শেষ পর্যায়ে ইমরুল কায়েসও ফিরেছিলেন ১৯ রান করে। গতকাল দ্বিতীয় দিনের শুরুতে লিটন দাস সাজঘরে ফিরে গেছেন ২৫ রান করে। ১৭ রান করে অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ ইঙ্গিত দিয়েছিলেন ঘুরে দাঁড়ানোর। কিন্তু সেই ১৭ রানেই সাজঘরে ফিরতে হয়েছে বাংলাদেশ অধিনায়ককে। সাব্বির রহমান আউট হয়েছেন শূন্য রানে। ১ রান করে এসেছে আবদুর রাজ্জাক ও তাইজুল ইসলামের ব্যাট থেকে।
এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে কুশল মেন্ডিসের ৬৮, রোসেন সিলভার ৫৬, দিলরুয়ান পেরেরার ৩১ ও আকিলা ধনঞ্জয়ের ২০ রানের ইনিংসগুলোতে ভর করে স্কোরবোর্ডে ২২২ রান জমা করেছিল শ্রীলঙ্কা।
সূত্র : ইএসপিএন ক্রিকইনফো।
/ এআর /