রেকর্ড রান করেও হারলো বাংলাদেশ
প্রকাশিত : ১৯:৩৭, ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ | আপডেট: ২৩:১২, ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৮
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম টি-টোয়েন্টিতে রেকর্ড পরিমাণ রান করেও বড় ব্যবধানে হেরেছে টাইগাররা। ১৯৩ রানের বড় পুঁজি নিয়ে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দাঁড়াতেই পারলো না স্বাগতিকরা। বড় পুঁজি নিয়ে যেমন লড়াই আশা করেছিলেন টাইগার সমর্থকরা, তার ছিঁটেফোটাও দেখা গেল না বোলারদের ব্যর্থতায়। ১৯৪ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ২০ বল হাতে রেখে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় লঙ্কানরা।
মিরপুরে শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে ৬ উইকেটের বড় ব্যবধানে জয় পায় দিনেশ চান্দিমালের দল।
তবে ঢালাওভাবে সব বোলারকে দায় দেওয়া যাবে না। অভিষিক্ত নাজমুল ইসলাম দুর্দান্ত বোল করেছেন। বোলিং নয়, উইকেটের উদ্যাপন দিয়েই বেশি বিখ্যাত এই বাঁহাতি স্পিনার। ব্যাটসম্যানকে ড্রেসিংরুমের পথ দেখানোর সময় ছোবল দেওয়ার ভঙ্গিটা বিপিএলে দারুণ জনপ্রিয়। সেটা আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেও দেখা গেছে আজ, দু’বার। এমন রান উৎসবের মাঝেও ৪ ওভারে মাত্র ২৫ রান দিয়ে ২ উইকেট। নাজমুল যে তাঁর সর্বোচ্চটাই দিয়েছেন তা বলাই যায়।
তবে সর্বোচ্চ তো দূর কা বাত, মোটামুটিটুকুও দিতে পারেননি মোস্তাফিজুর রহমান, রুবেল হোসেন কিংবা মাহমুদউল্লাহরা। কেউ ২ ওভারে ৩৩ রান দিয়েছেন, কেউবা ৪ ওভারের কোটা পূরণ হওয়ার আগেই ৫২! মোস্তাফিজের স্পেল তো শুরুই হয়েছিল টানা তিন চারে। অভিষেকে নাজমুলের অমন বোলিং কিংবা আফিফের উইকেট পাওয়ার উদ্যাপন তাই ম্যাচ জয়ের আনন্দে রূপান্তরিত হলো না।
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সর্বোচ্চ রান করেন কুশাল মেন্ডিস। ২ ছক্কা ও ৮ চারের মাধ্যমে ২৭ বলে ৫৩ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন লঙ্কান এই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান। আর দাসুন সানাকা করেন দ্বিতীয় সর্বোচ্চ অপরাজিত ৪২ রান। এছাড়া থিসারা পেরেরা করেন অপরাজি ৩৯ রান। এছাড়া গুনাথিলাকা ৩০, ডিকাওয়ালা ১১, এবং থারাঙ্গা করেন ৪ রান।
আর বাংলাদেশের পক্ষে ৪ ওভার বোল করে ২ উইকেট নেন নাজমুল হোসেন অপু। আর আফিফ হোসেন ও রুবেল হোসেন নেন একটি করে উইকেট।
এর আগে মিরপুরে শ্রীলংকাকে ১৯৪ রানের চ্যালেঞ্জিং স্কোর ছুড়ে দেয় টাইগাররা। মুশফিক, সৌম্য আর মাহমুদুল্লাহর দৃঢ়তায় ১৯৩ রানে থামে বাংলাদেশের ইনিংস। হাতে ছিল ৫ উইকেট। অর্ধশতক পেয়েছেন মুশফিক ও সৌম্য সরকার। ৭ রানের জন্য হাফসেঞ্চুরি করতে পারেন নি মাহমুদুল্লাহ।
ব্যাটিংয়ে শুব সূচনা হয় বাংলাদেশের। সৌম্য-মুশফিকের দৃঢ়তায় ১০ ওভারেই একশ’ রান পেরোয় বাংলাদেশ।
তবে তার পরই হঠাৎ ছন্দপতন হয়।একাদশ ওভারে মেন্ডিস বল হাতে সব এলোমেলো করে দেন। সদ্য অর্ধশতক করার সৌম্যকে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেন ওভারের প্রথম বলে। এরপর মাঠে নামেন অভিষিক্ত আফিফ। এক বল বাদে আফিফও উইকেট কিপারের হাতে ক্যাচ দিয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরেন। তিনি রানের খাতা খুলতে পারেননি।
তিন বলে দুই উইকেট পড়ে যাওয়ায় হঠাৎ ছন্দপতন হয় টাইগারদের ইনিংসে। পরে মুশফিক-মাহমুদুল্লার চার-ছয়ের ফুলঝুড়িতে বড় পুঁজির স্বপ্ন দেখা শুরু করে টাইগাররা।
দুই অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যানই দেখেশুনে খেলেন। মাহমুদুল্লাহ মারকুটে খেলতে থাকেন। আর মুশফিক সুযোগ পেলেই হাত খুলে মারেন। এ দুজনের কল্যাণে ১৫ ওভার ৪ বলে ১৫২ রান তুলে ফেলে বাংলাদেশ।
মুশফিক অর্ধশতক পেলেও মাত্র ৭ রানের আক্ষেপ নিয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরেন মাহমুদুল্লাহ। উদানার বলে ধনঞ্জয়ার হাতে ক্যাচ দিয়ে ৪৩ রানে ফেরেন মাহমুদুল্লাহ।
এরপর সাব্বির রহমান মাঠে নামেন। দুই বলে ১ রানে করে মাঠ ছাড়েন তিনি। মুশফিক মাহমুদুল্লাহ জুটিতে রান আসে ৭৩। এটিই ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট পড়লেও রানের চাকা সচল রাখেন টাইগার ব্যাটসম্যানেরা।
মুশফিক ৬৬ রানে অপরাজিত থাকেন। বল খেলেন মাত্র ৪৪টি। ছয় মারেন একটি। আর চার ৭টি। আরিফ অপরাজিত থাকেন ১ রানে।
এর আগে সৌম্য আউট হয়েছেন ৫১। জাকির ফিরেছেন ১০ রানে। আর আফিফ রানের খাতা খুলতে পারেন নি।
শ্রীলংকার পক্ষে ম্যান্ডিস পান দুই উইকেট।