ঢাকা, মঙ্গলবার   ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪

চ্যাপেলকে কোচ করাটা ছিল কুমির ডেকে আনা : সৌরভ

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৮:২৪, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

২০০৬ সালের দুর্গাপূজায় পশ্চিমবঙ্গের মানুষ ‘অসুরে’র মুখটা যে, গ্রেগ চ্যাপেলের মুখের আদলে বানানোর ফরমাশ করেছিল তা অনেকেরই জানা। আর কেনো তা করেছিলো তাও তাদের জানা। এক যুগ পেরিয়ে গেলেও চ্যাপেলের টেস্ট দল থেকে সৌরভ গাঙ্গুলীর হঠাৎ করেই বাদ পড়ার কথা ভোলে নি ক্রিকেট-বিশ্ব।

২০০৩ দক্ষিণ আফ্রিকা বিশ্বকাপে ভারতকে ফাইনালে তুলে নিয়ে গিয়েছিলেন তৎকালীন অধিনায়ক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। কিন্তু দল পারফর্মেন্সের শিখরে থাকার সময়ই জন রাইট কোচের দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ালে ভারতীয় ক্রিকেটে তৈরি হয় এক অদ্ভুত শূন্যতা। ২০০৪ সালে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড জন রাইটের উত্তরসূরি হিসেবে হন্যে হয়ে ভালো একজন কোচ খুঁজছিল। আর সেই শূন্যস্থান পূরণ করতে অস্ট্রেলিয়া থেকে গ্রেগ চ্যাপেলকে এনে কোচের আসনে বসান সৌরভই।

২০০৫ সালের মে মাসে ভারতের কোচ হয়ে আসেন গ্রেগ। চ্যাপেলকে দলের কোচ করে নিয়ে আসা অনেকটা খাল কেটে কুমির ডেকে আনার কাজ করেছিলেন সৌরভ। সেকথা পরে নিজেও স্বীকার করেছেন তিনি। নিজের নতুন বই ‘আ সেঞ্চুরি ইজ নট এনাফ’-এ এমনটাই লিখেছেন ভারতের সাবেক অধিনায়ক।

সৌরভ জানান, গ্রেগ চ্যাপেলকে কোচ করে আনার সময় তাঁকে সতর্ক করেছিলেন তৎকালীন বিসিসিআই প্রেসিডেন্ট জগমোহন ডালমিয়া সহ আরেক কিংবদন্তি সুনীল গাভাস্কার। অথচ তিনি ভেবেছিলেন, অন্য প্রতিযোগীদের পেছনে ফেলে তাদের এক নম্বরে নিয়ে যাওয়ার জন্য যোগ্য লোক গ্রেগ চ্যাপেলই।

সৌরভ লিখেন, আমি গ্রেগকে কোচ করে আনার ব্যাপারে জানিয়েছিলাম। কিন্তু সেই সময় অনেকেই আমায় এই কাজটি না করার পরামর্শ অনেকেই দিয়েছিলেন। তাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন সুনীল গাভাস্কার। উনি বলেন, ‘সৌরভ, বিষয়টা নিয়ে আরেকবার ভেবে নাও। তার (চ্যাপেল) সঙ্গে দল চালাতে গিয়ে খুবই মুশকিল হতে পারে। তার অতীত কোচিং রেকর্ড তেমন ভাল না।’

গাঙ্গুলীর সঙ্গে জরুরি আলোচনা করে ডালমিয়াও একই রকম কথা বলেছিলেন। গাঙ্গুলী লিখেছেন, ‘একদিন সকালে ডালমিয়া তাঁর বাড়িতে আমাকে জরুরি আলোচনার জন্য ডাকেন। তিনি বলেন তাঁর ভাই ইয়ানও মনে করে, ভারতের জন্য গ্রেগ হয়তো ঠিক লোক হবে না।’ ইয়ানের দাবি ছিল, গ্রেগের কোচ হওয়া ভারতের জন্য ইতিবাচক নাও হতে পারে।

এমন সব আলোচনার পরও গ্রেগকে কোচ করে এনে কী ভুল করেছেন, সেটা ওই বছরের শেষের দিকে টের পেতে শুরু করেন গাঙ্গুলী! সেই সময়েই ওয়ানডে দলে জায়গা হারান, পরে নেতৃত্বও। পরের বছর প্রথমে টেস্ট দলের নেতৃত্ব হারান, পরে জায়গাও। তাইতো প্রায় এক যুগ কেটে গেলেও এখনও সেটা মানতে পারেন না গাঙ্গুলী। তিনি বলেন, ‘২০০৫ সাল আমার জীবনের সবচেয়ে টালমাটাল অধ্যায় হয়ে আছে। হঠাৎ করে নেতৃত্ব কেড়ে নেওয়া হয় বলেই শুধু নয়। আমি দল থেকেই বাদ পড়ে গেলাম। এ ঘটনা অভাবনীয়, অগ্রহণযোগ্য, ক্ষমার অযোগ্য।’

বইয়ের নাম কেনো ‘আ সেঞ্চুরি ইজ নট ইনাফ’ রেখেছেন, সেটাও বোঝা যাবে এই অংশে, ‘বিজয়ী কোনো অধিনায়কের এমন না বলে-কয়ে বাদ পড়ার উদাহরণ ইতিহাসে খুব বেশি নেই। তা-ও আবার সর্বশেষ টেস্ট সিরিজে একটি সেঞ্চুরি করার পর। ভারতের ক্রিকেটে এমন উদাহরণ আর নেই, ভবিষ্যতে এমনটা হবে বলেও সংশয় আছে।’

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া

একে// এআর


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি