অলিখিত সেমিফাইনালে আজ মুখোমুখি বাংলাদেশ-শ্রীলংকা
প্রকাশিত : ০০:১৪, ১৬ মার্চ ২০১৮ | আপডেট: ২১:৪৯, ১৬ মার্চ ২০১৮
নিদাহাস ট্রফি ত্রিদেশীয় টি-২০ সিরিজে লিগ পর্বের শেষ ম্যাচে আজ শুক্রবার মুখোমুখি হচ্ছে স্বাগতিক শ্রীলংকা ও বাংলাদেশ। লিগ পর্বের শেষ ম্যাচ হলেও এটি রুপ নিয়েছে অলিখিত সেমিফাইনালে। কারণ এ ম্যাচের বিজয়ী দল টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলার টিকিট পাবে।
ইতিমধ্যে প্রথম দল হিসেবে ফাইনাল নিশ্চিত করেছে ভারত। কলম্বোর আর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ-শ্রীলংকার ম্যাচ শুরু হবে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায়। দু’দলেরই লক্ষ্য লিগ পর্বের শেষ ম্যাচ জিতে ফাইনাল নিশ্চিত করা।
ডাবল লিগ পদ্ধতি টুর্নামেন্টের চার ম্যাচের ৩টিতে জিতে ফাইনালে উঠেছে ভারত। তবে তিনটি ম্যাচে অংশ নিয়ে ১টি করে জয়ের স্বাদ পেয়েছে শ্রীলংকা ও বাংলাদেশ। তাই ফাইনালে উঠার জন্য লিগ পর্বের শেষ ম্যাচের লড়াইয়ে নামতে হচ্ছে শ্রীলংকা ও বাংলাদেশকে। ফাইনালে উঠার জন্য দু’দলই তাদের সেরাটা দিবে এতে কোন সন্দেহ নেই।
তবে ফাইনালের টিকিট পাবার আগে আত্মবিশ্বাসী বাংলাদেশ। অবশ্যই প্রথম কারণ, হলো- নিয়মিত অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের স্কোয়াডে যোগদান। গত জানুয়ারিতে ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালে আঙ্গুলের ইনজুরিতে পড়েন সাকিব। এরপর থেকেই মাঠের বাইরে তিনি। কিন্তু হঠাৎ করেই বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের আগে দলে ফিরলেন সাকিব। তার উপস্থিতি নিশ্চিতভাবেই বাংলাদেশের সাহস অনেকখানি বাড়িয়ে দেবে।
বাংলাদেশের আত্মবিশ্বাসী হবার আরো একটি কারণ আছে। চলমান টুর্নামেন্টে লিগের প্রথম পর্বে শ্রীলংকাকে ধরাশায়ী করে টাইগাররা। শ্রীলংকার ছুড়ে দেওয়া ২১৫ রানের বিশাল টার্গেট দাপট দেখিয়েই স্পর্শ করে বাংলাদেশ। দুই ওপেনার তামিম ইকবাল ও লিটন দাসের মারমুখী ব্যাটিং-এ লড়াই করার রসদ পায় বাংলাদেশ। উদ্বোধণী জুটিতে দু’জনে যোগ করেন ৩৫ বলে ৭৪ রান। এর মধ্যে লিটনের অবদান ছিলো ১৯ বলে ৪৩ রান। লিটনের স্কোরকে ছাড়িয়ে যান তামিম। হাফ-সেঞ্চুরির দোড়গোড়ায় পৌছে ৪৭ রানে থামেন তিনি।
দলীয় ১০০ রানে তামিম ফিরে যাবার পর সৌম্য সরকারকে নিয়ে দলের রানের চাকা সচল রাখেন মুশফিকুর রহিম। জুটিতে ৫১ রান যোগ করে নামের পাশে ২৪ রান রেখে ফেরেন সৌম্য। এরপর মাহমুদুল্লাহ রিয়াদও কিছুক্ষণ সঙ্গ দেন মুশিকে। তাতে এই দু’জনের জুটি থেকে আরো ৪২ রান পায় বাংলাদেশ। ফলে শেষদিকে ১৫ বলে ২২ রান প্রয়োজন পড়ে বাংলাদেশের। উইকেটে মুশফিকুরের সাথে সাব্বির রহমানের যোগদান বাংলাদেশের জয় সময়ের ব্যাপারই ছিলো। কিন্তু ২ বল মোকাবেলা করে সাব্বির শূন্য হাতে ফিরলে বাংলাদেশের জয় নিশ্চিত করার দায়িত্ব পড়ে মুশফিকের কাঁধে।
অভিজ্ঞ খেলোয়াড় সঠিকভাবেই দায়িত্ব পালন করেছেন মুশফিক। এক প্রান্ত আগলে রেখে বাংলাদেশের জয় নিশ্চিত করেই মাঠ ছাড়েন তিনি। ৫টি চার ও ৪টি ছক্কায় ৩৫ বলে অপরাজিত ৭২ রান করেন মুশফিক। বাংলাদেশ ম্যাচ জিতে ৫ উইকেটে। ফলে কলম্বোর এই ভেন্যুতে টানা দুই ম্যাচ জয়ের স্বাদ নেয় বাংলাদেশ। গত বছরের এপ্রিলে এই ভেন্যুতেই ৪৫ রানে জিতেছিলো বাংলাদেশ। ওয়ানডে অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজার বিদায়ী টি-২০ জিতে দুই ম্যাচের সিরিজ ১-১ সমতায় শেষ করে টাইগাররা।
বুধবার ভারতের কাছে হারলেও শ্রীলংকার বিপক্ষে ম্যাচে ঘুড়ে দাঁড়ানোর প্রত্যয় ব্যক্ত করেন বাংলাদেশের অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ শেষে মাহমুদুল্লাহ বলেন, বোলারদের আরো ভালো করার প্রয়োজন ছিলো, কিন্তু তারা তা করতে পারেনি। শুরুতে উইকেট হারিয়ে আমরা ম্যাচ থেকে ছিটকে পড়ি। তবে শ্রীলংকার বিপক্ষে ম্যাচে আমরা শক্তভাবে ফিরে আসবো।
লিগ পর্বের শেষ ম্যাচে বাংলাদেশকে সমীহ করেই মাঠে নামতে হচ্ছে শ্রীলংকাকে। তবে তাদের দুঃসংবাদ নিষেধাজ্ঞার কারণে এ ম্যাচেও খেলতে পারছেন না দলটির নিয়মিত অধিনায়ক দিনেশ চান্ডিমাল। বাংলাদেশ যে কোন মুহুর্তে ঘুড়ে দাঁড়াতে সক্ষম সেটা বেশ ভালো করেই জানে লংকানরা। তাছাড়া ইনজুরি কাটিয়ে সাকিব দলে যোগ দেওয়ায় কিছুটা চিন্তিত লংকান কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহ। কলম্বোতে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘সে (সাকিব) যদি খেলার মতো যথেষ্ঠ ফিট থাকে তবে তার মতো বিশ্বমানের ও মেধাবী খেলোয়াড়কে অবশ্যই আমাদের বিচেনা করতে হবে।’
চলতি বছর শ্রীলংকা দলের কোচের দায়িত্ব নেয়া হাথুরু বলেন, পুরোপুরি ফিট হওয়ার আগে সাকিবকে মাঠে নামানোটা হবে একটা ‘অতিমাত্রার পদক্ষেপ’।
সাংবাদিকদের তিনি আরো বলেন,‘ সে যদি ফিট থাকে তবে আমি মনে করি সেটা অবশ্যই বাংলাদেশ দলের জন্য একটা বাড়তি সুবিধা। কেননা সে বিশ্ব সেরা অলরাউন্ডার এবং আমরা সকলেই জানি সে একজন মানসম্মত খেলোয়াড়।’
বাংলাদেশ দল : মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ (অধিনায়ক), সাকিব আল-হাসান, তামিম ইকবাল, সৌম্য সরকার, ইমরুল কায়েস, মুশফিকুর রহিম, সাব্বির রহমান, মুস্তাফিজুর রহমান, রুবেল হোসেন, তাসকিন আহমেদ, লিটন কুমার দাস, আবু হায়দার রনি, আবু জায়েদ রাহী, আরিফুল হক, মেহেদী হাসান মিরাজ, নুরুল হাসান সোহান ও নাজমুল ইসলাম অপু।
শ্রীলংকা দল : থিসারা পেরেরা (অধিনায়ক), উপুল থারাঙ্গা, দানুশকা গুনাথিলাকা, কুসল মেন্ডিজ, দাসুন শানাকা, কুসল পেরেরা, জীবন মেন্ডিজ, সুরাঙ্গা লাকমাল, ইসুরু উদানা, আকিলা ধনঞ্জয়া, আমিলা আপনসো, নুয়ান প্রদীপ, দুশমন্ত চামিরা ও ধনঞ্জয়া ডি সিলভা।
আর/টিকে