বিশ্বকাপের অনুষঙ্গ তৈরিতে অ্যাডিডাস ও নাইকির লড়াই
প্রকাশিত : ১৬:৫৫, ৩ জুন ২০১৮ | আপডেট: ১৭:১৮, ৩ জুন ২০১৮
ফুটবল জ্বরে কাঁপছে বিশ্ব। ১৪ জুন রাশিয়ায় পর্দা উঠছে ‘গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ’র ২১তম আসরে। শুধু আয়োজক রাশিয়া, কিংবা অংশগ্রহণকারী ৩২টি দেশেই নয়, সারা বিশ্বই এখন মেতে রয়েছে ফুটবলে। এমনটা কেন হচ্ছে? অনেক কারণ আছে। ফুটবল কিংবা খেলা এখন আর শুধু বিনোদনের উপাদান নয়। খেলা হয়ে পড়েছে বাণিজ্যিক পণ্য। বিশ্বকাপ ফুটবলের রন্ধ্রে রন্ধ্রে জড়িয়ে রয়েছে বিশাল বাণিজ্য। এ বাণিজ্যের অন্যতম অনুষঙ্গ হচ্ছে জার্সি, বুট, ফুটবলসহ বিভিন্ন ক্রীড়া সামগ্রীর বাজার। আর এ বাজার ধরতে এসব সামগ্রী প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের মধ্যে চলে লড়াই। এ লড়াইয়ে প্রধান দুই চির প্রতিদ্বন্দ্বী আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ড অ্যাডিডাস ও নাইকি। প্রতিবারই প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয় এ দুই প্রতিষ্ঠানের মাঝে। এবার সে লড়াইয়ে নাইকিকে ১২-১০ এ হারিয়ে দিয়েছে অ্যাডিডাস।
এবারের আসরে ৩২ দলের মধ্যে ১২টি দলই অ্যাডিডাসের তৈরি জার্সি গায়ে মাঠে নামবে। যাদের মধ্যে রয়েছে জার্মানি, স্পেন, আর্জেন্টিনা ও রাশিয়া। আর নাইকি পেয়েছে ১০টি দলের জার্সি তৈরির কাজ। এদের মধ্যে রয়েছে ব্রাজিল, ফ্রান্স ও ইংল্যান্ড অন্যতম। অ্যাডিডাসের প্রধান নির্বাহী ক্যাসপার ররস্টেড জানিয়েছেন, ‘আর্থিক দিক থেকে রাশিয়া বিশ্বকাপ চার বছর আগের ব্রাজিল বিশ্বকাপের মতো লাভজনক হবে না। তবু আমরা এ আসরের অপেক্ষায় আছি। বিশ্বজুড়ে আমাদের ব্র্যান্ডের জনপ্রিয়তা বাড়ানোর দুর্দান্ত উপায় এটা।’
জার্সি তৈরির লড়াইয়ে হারলেও হাল ছাড়ছে না নাইকি। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী মার্ক পার্কার জানিয়েছেন, বিশ্বকাপ ফুটবল খেলার জগতে অনেক শক্তিশালী একটি ঘটনা। আমরা চাচ্ছি এটা আরেকটু বাড়াতে। নাইকি সে আশা করতেই পারে। এ বিশ্বকাপে ফুটবলারদের ৬০ ভাগই পায়ে দেবেন নাইকির বুট। সবার আগেই আছেন ক্রিস্টিয়ানো রোনাল্ডো। নেইমারও পায়ে দেবেন নাইকির বুট। লিওনেল মেসি আবার অ্যাডিডাসের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর।
২০১৪ বিশ্বকাপে নাইকির কাছে হেরে গিয়েছিল অ্যাডিডাস। অংশগ্রহণকারী দেশগুলো জার্সি তৈরির ক্ষেত্রে তখন নাইকিকেই বেশি পছন্দ করেছে। এবার তার বদলা নিয়েছে অ্যাডিডাস। ২০১৪ বিশ্বকাপে ১ কোটি ৪০ লাখ বল বিক্রি করেছিল অ্যাডিডাস। আর জার্সি ৮০ লাখ। এবার নাইকিকে পেছনে ফেললেও ২০১৪ সালের মতো লাভের আশা করছে না অ্যাডিডাস। ১৯৭০ সাল থেকে বিশ্বকাপের বল সরবরাহ করছে অ্যাডিডাস। ২০৩০ সাল পর্যন্ত ফিফার সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ তারা। এবারের বিশ্বকাপের স্পন্সরও জার্মান এই প্রতিষ্ঠান।
জার্মানি ও স্পেন দলের জার্সি অ্যাডিডাসের হলেও অর্ধেকের বেশি খেলোয়াড়ই পায়ে দেবেন নাইকির বুট। শুধু ইরান দলের কাউকেই মজাতে পারেনি নাইকি। পারমাণবিক চুক্তি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন পদক্ষেপে ক্ষেপেছে ইরান। তাই ইরান দল নাইকির ক্রীড়া সামগ্রী ছাড়াই বিশ্বকাপে যাচ্ছে। ২০১৪ বিশ্বকাপে ফুটবল-পণ্য বিক্রি করে ২১০ কোটি ইউরো (২০ হাজার ৩৭০ কোটি টাকা) আয় করেছিল অ্যাডিডাস। ২০১৬ সালে ইউরো উপলক্ষে জার্মান প্রতিষ্ঠানের আয় আড়াইশ’ কোটি ডলার ছুঁয়েছিল। নাইকিও ফুটবল থেকে ২০০ কোটি ডলার আয় করেছে গত বছর। কিন্তু তাদের প্রবৃদ্ধিটা প্রতিষ্ঠানের মূল আয়ের তুলনায় অনেক কম। এবারের বিশ্বকাপ থেকে তাই ২০১৪ সালের মতো কিছু আশা করছে না দুই প্রতিষ্ঠানই। তবে এবার মাত্র ৪টি দলের জার্সি বানিয়েও তৃপ্ত জার্মান প্রতিষ্ঠান পিউমা। (২০১৪ সালে প্রতিষ্ঠানটি ৮টি দলের জার্সি তৈরি করেছিল।
তথ্যসূত্র: রয়টার্স।
আরকে// এসএইচ/