আজ টাইগারদের সঙ্গী দ. আফ্রিকাকে হারানোর সেই ‘সুখস্মৃতি’
প্রকাশিত : ১৫:৫১, ২২ জুলাই ২০১৮
ক্যারিবিয়দের বিপক্ষে দুই টেস্টে হতাশাজনক পারফরম্যান্সের পর ওয়ানডেতে ভালো করার প্রত্যয় নিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে আজ রোববার মাঠে নামছে বাংলাদেশ। টিমের সামর্থ্যের উপর আস্থা রেখে জয়ের জন্য সর্বোচ্চ লড়াইয়ে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন টাইগারদের প্রাণভোমরা মাশরাফি বিন মর্তুজা। যার চোখেমুখে ছলছল করছে একই ভেন্যূতে বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারানোর মধুর স্মৃতি।
আজ বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডে ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে দ্য প্রভিডেন্স স্টেডিয়ামে। এই মাঠে নিজেদের মানিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে দারুণ এক সুখস্মৃতি আছে মুশফিকদের।
একযুগ আগে প্রভিডেন্স মাঠে শক্তিশালী দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়েছিল মুশফিকরা। ২০০৭ বিশ্বকাপে হাবিবুল বাসার সুমনের নেতৃত্বে প্রোটিয়াদের বিপক্ষে জয়টা ছিল ৬৭ রানের। সেই সুখস্মৃতি আজ ধরা দিচ্ছে গায়ানায়।
যদিও ওই দলটির মাত্র চার সদস্য মাশরাফি, সাকিব, মুশফিক ও তামিম আছেন বর্তমান দলে। এই মুহূর্তে এরাই বাংলাদেশ দলের সেরা ক্রিকেটার। এদের হাত ধরে বাংলাদেশ সম্প্রতি বহু জয়ের সাক্ষী হয়েছে।
২০০৭ সালের বিশ্বকাপে হাবিবুল বাসার সুমনের সেই বাংলাদেশ দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৬৭ হারিয়েছিল। যে ম্যাচে ৮৭ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস খেলেছিলেন মোহাম্মদ আশরাফুল। ২০০৭ সালের সেই দলের চার সদস্যও রয়েছেন এই বাংলাদেশ— মাশরাফি. সাকিব, মুশফিক ও তামিম।
লোয়ার অর্ডারে ব্যাট করতে নেমে মাশরাফি সেই ম্যাচে মাত্র ১৬ বলে খেলেছিলেন ২৫ রানের ইনিংস। ড্যাসিং ওপেনার তামিম করেছিলেন ৩৮ রান। সাকিব-মুশফিক দুই অঙ্কের কোটা স্পর্শ করতে না পারলেও তাদের সেই ম্যাচের অভিজ্ঞতা আজ অনুপ্রাণিত করতে পারে।
দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে সেই ম্যাচে বোলিংয়ে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন বাংলাদেশের স্পিনাররা। রফিক-রাজ্জাক-সাকিব মিলে প্রোটিয়াদের ছয় উইকেট নিয়ে ব্যাটিং মেরুদণ্ড ভেঙে দিয়েছিলেন।
প্রভিন্স স্টেডিয়ামে বরাবরই বাড়তি সুবিধা থাকে স্পিনারদের জন্য। ২০১৩ সালে এই মাঠে পাকিস্তানের স্পিনার শহীদ আফ্রিদি ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে মাত্র ১২ রানে নিয়েছিলেন ৭ উইকেট। যে ম্যাচে ক্যারিবীয়দের স্কোর ১০০ হয়নি।
কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, ওয়েস্ট ইন্ডিজ কি এখনো গায়ানার উইকেট স্পিন স্বর্গ রেখেছে? প্রস্তুতি ম্যাচে খণ্ডকালীন স্পিনার মোসাদ্দেক ১৪ রানে ৩ উইকেট নেওয়ার পর নিশ্চয়ই ক্যারিবীয়রা সতর্ক হয়েছে। তা ছাড়া বাংলাদেশও প্রস্তুতি ম্যাচে নিজেদের স্পিন অস্ত্রো উন্মুক্ত করেনি। গেইল-রাসেলরা যখন ব্যাটিং করছিলেন তখন মেহেদী হাসানকে বোলিংয়ে আনা হয়নি। আর সাকিবকে তো খেলানোই হয়নি।
তবু ওয়ানডে সিরিজে নিয়ে আশাবাদী হওয়ার যথেষ্ট কারণ আছে। বাংলাদেশের ক্রিকেটকে অনেকখানি বদলে দেওয়া মাশরাফি ফিরেছেন ওয়ানডে সিরিজে। তার নেতৃত্বেই মাঠে নামবে বাংলাদেশ। গত জানুয়ারিতে দেশের মাটিতে ত্রিদেশীয় সিরিজে সর্বশেষ মাঠে নেমেছিলেন মাশরাফি। এর বাইরে দেশের সেরা পেসার মোস্তাফিজুর রহমানও ফিরেছেন। তার খেলা নিয়ে কিছুটা সংশয় রয়েই গেছে!
এবারও স্পিন উইকেটই হচ্ছে কিনা সেটাও এখন বড় প্রশ্ন। কেননা, সাকিব-মেহেদীর সঙ্গে দলে আছেন নাজমুল ইসলাম অপু। খণ্ডকালীন স্পিনার হিসেবে আছেন মোসাদ্দেক হোসেন ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। মোসাদ্দেক তো ১৪ রানে তিন উইকেট নিয়ে সতর্কবার্তা দিয়েই রেখেছেন!
তবে স্পিনবান্ধব উইকেট না হলেও খুব বেশি সমস্যায় পড়তে হচ্ছে না বাংলাদেশকে। মাশরাফি-মোস্তাফিজ যোগ দেওয়ায় পেস বোলিংয়ে শক্তি এমনিতেই বেড়েছে। এর বাইরে পেসার রুবেল হোসেন তো আছেনই। সব মিলিয়ে মাশরাফি, মোস্তাফিজ ও রুবেলকে নিয়ে পেস বোলিং লাইনআপ সাজানো হতে পারে। কোনও কারণে মোস্তাফিজ না খেললে অভিষেক হতে পারে আবু জায়েদ রাহীর।
বোলিং নিয়ে বাংলাদেশের দুশ্চিন্তা না থাকলেও বাংলাদেশকে ভাবনায় ফেলতে পারেন ব্যাটসম্যানরা। টেস্ট সিরিজে বাজে ফলাফলের অন্যতম কারণ তাদের ব্যর্থতা। ওয়ানডে ম্যাচে দুই দলের আসল লড়াইটা হবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের পেসারদের সঙ্গে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের।
এ সংক্রান্ত আরও খবর
কেমন হবে প্রথম ওয়ানডেতে টাইগারদের একাদশ
/ এআর /