রবীবাসরীয় জয়ে আত্মবিশ্বাসের তুঙ্গে টাইগাররা
প্রকাশিত : ১০:৫২, ২৩ জুলাই ২০১৮ | আপডেট: ১০:৫৩, ২৩ জুলাই ২০১৮
গতরাতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে বরিবাসরীয় জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। এ জয়ের জন্য মুখিয়ে ছিল গোটা দেশ। হবেই না কেন! টানা হারের ধারায় টাইগারদের যেন বিড়ালের মতো অবস্থা।
সবশেষে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দুই টেস্টে দাঁড়াতেই পারেনি সাকিবরা। এর আগে আফগানিস্তানের বিপক্ষেও হেরেছে। হারতে হারতে দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়ার মতো অবস্থা।
এমতাবস্থায় একটি জয় ছিল খুবই আকাঙিক্ষত। সেটিই হলো গতরাতে। ৪৮ রানে হারালো ক্যারিবিয়দের। ব্যাটিং বোলিং ও ফিল্ডিং তিন বিভাগেই দাপট দেখিয়েছে মাশরাফিরা। বহুল প্রত্যাশিত জয়ের মধ্য দিয়ে আত্মবিশ্বাস ফিরে পেল টাইগাররা। ম্যাচ শেষে অধিনায়কের বক্তব্যে সেটিই ফুটে উঠেছে।
বাংলাদেশের জয়ের ভিতটা গড়ে দেয় ব্যাটসম্যানরা। আরও নির্দিষ্ট কর বললে তামিম-সাকিবের জুটি। এটি এই মাঠে সর্বোচ্চ মাঠের জুটি। গত ম্যাচটি সাকিবকে নিশ্চয়ই পোড়াবে বহুদিন। মাত্র তিন রানের জন্য সেঞ্চুরি বঞ্চিত হয়েছেন। তবে খেলেছেন দারুণ। দেখেশুনে, বেছে। তার খেলা দেখে মনে হয়েছে জয়ের একটা তাগিদ ছিল।
সাকিব ব্যর্থ হলেও তামিম ঠিকই সফল হয়েছেন। খেলেছেন ১৩০ রানের এক ঝলমলে ইনিংস। শেষ দিকে মুশফিক মাঠে নেমে দেখিয়ে দিয়েছেন ভেলকি। দ্রুত রান তুলে দলকে একটা বড় সংগ্রহ এনে দেন। ১১ বলে তুলে নেন ৩০ রান।
ব্যাটসম্যানদের পর বোলাররা নিজেদের ভূমিকায় ভুল করেননি। আর আগ বাড়িয়ে দলকে নেতৃত্ব দেন মাশরাফি। নিয়েছেন ৪ উইকেট।
বাংলাদেশের পক্ষে উইকেট পান মাশরাফি, মোস্তাফিজ, রুবেল, মিরাজ। মোস্তাফিজ পর পর দুই উইকেট নেওয়ার পর হেট্রিকের সুযোগ পান। যদিও সুযোগ কাজে লাগাতে পারেনি।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষে গেইল ৬০ বলে ৪০ রান করে রান আউট হন। ই লিয়েস ১৭ রান করে মাশরাফির বলে আউট হন। রুবেলের এলবি ডাব্লিউর ফাদে পড়ে মাত্র ৬ রানে আউট হন হোপ। হেটমের ৭৮ বলে ৫২ রান করে আউট হন মুস্তাফিজের বলে। জেএন ১০ রান করে আউট হন মোহাম্মদ মিরাজের বলে। হোল্ডার ১৭ রান করে মাশরাফির বলে মাঠ ছাড়েন। পাওলকে শূণ্য রানে ফেরান মোস্তাফিজ।
এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে শুরুতে এনামুল হক বিজয়ের উইকেট হারালেও শেষ পর্যন্ত মাত্র ৪ উইকেট হারিয়ে ২৭৯ রান তুলতে সক্ষম হয় বাংলাদেশ। ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে এটাই বাংলাদেশের সর্বোচ্চ ওয়ানডে ইনিংস। সাকিবের ৯৭ আর তামিমের অসাধারণ সেঞ্চুরি বাংলাদেশকে চ্যালেঞ্জিং স্কোর এনে দেয়।
শূন্য রানে বিজয়ের বিদায়ের পর ওয়ানডাউনে ব্যাট করতে নামেন সাকিব আল হাসান। তামিমের সঙ্গে জুটি বেধে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার সঙ্গে নিজের ক্যারিয়ারের ৮ম সেঞ্চুরির দিকেও এগিয়ে যাচ্ছিলেন সাকিব আল হাসান। কিন্তু মাত্র ৩ রানের আক্ষেপ নিয়ে আউট হয়ে যেতে হলো সাকিবকে।
হার্ডহিটিংয়ের জন্য নামানো হয় সাব্বির রহমানকে। তবে ৪ বলে মাত্র ৩ রান করে আম্পায়ারের ভুলে আউট হয়ে যান সাব্বির। তাকে স্ট্যাম্পিংয়ের আউট ঘোষণা করা হলেও স্ট্যাম্প ভাঙার সময় তার পা ছিল ক্রিজের মধ্যেই। দেবেন্দ্র বিশুর বলে আউট হন সাব্বির। এরপর মাঠে নামেন মুশফিকুর রহীম।
ছোট্ট অথচ অসাধারণ এক ঝড় তোলেন মুশফিকুর রহীম। মাত্র ১১ বলে ৩০ রান করেন তিনি। ছক্কার মার মারেন ২টি এবং বাউন্ডারি মারেন ৩টি। ইনিংসের ১ বল বাকি থাকতে রিভার্স সুইপ খেলতে গিয়ে দেবেন্দ্র বিশুর অসাধারণ এক ক্যাচে পরিণত হন মুশফিক। তবে আউট হওয়ার আড়ে এক ঝড়ে বাংলাদেশের রানকে নিয়ে যান ক্যারিবীয়দের জন্য দারুণ চ্যালেঞ্জিং এক পর্যায়ে।
শেষ বল মোকাবেলা করেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। আন্দ্রে রাসেলকে দারুণ এক বাউন্ডারি মেরে ইনিংস শেষ করেন তিনি। তামিম অপরাজিত থাকেন ১৬০ বলে ১৩০ রান করে। ১০টি বাউন্ডারির সঙ্গে ৩টি ছক্কার মার মারেন তিনি। ক্যারিয়ারে ১০ম সেঞ্চুরি করে অপরাজিত থেকে যান তামিম ইকবাল। দেবেন্দ্র বিশু ২টি এবং আন্দ্রে রাসেল ও জ্যাসন হোল্ডার নেন ১টি করে উইকেট।
/ এআর /