স্রেফ বলেছি হৃদয় উজাড় করে খেলতে, দেশের জন্য খেলতে: মাশরাফি
প্রকাশিত : ১১:০০, ২৩ জুলাই ২০১৮
গতরাতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে রবীবাসরীয় জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। এ জয়ের জন্য মুখিয়ে ছিল গোটা দেশ। হবেই না কেন! টানা হারের ধারায় টাইগারদের যেন বিড়ালের মতো অবস্থা।
সবশেষে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দুই টেস্টে দাঁড়াতেই পারেনি সাকিবরা। এর আগে আফগানিস্তানের বিপক্ষেও হেরেছে। হারতে হারতে দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়ার মতো অবস্থা।
এমতাবস্থায় একটি জয় ছিল খুবই আকাঙিক্ষত। সেটিই হলো গতরাতে। ৪৮ রানে হারালো ক্যারিবিয়দের। ব্যাটিং বোলিং ও ফিল্ডিং তিন বিভাগেই দাপট দেখিয়েছে মাশরাফিরা। বহুল প্রত্যাশিত জয়ের মধ্য দিয়ে আত্মবিশ্বাস ফিরে পেল টাইগাররা।
জয়ে নেতৃত্ব দিয়েছেন অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা। শুধু নেতৃত্ব দেওয়া কেন গোটা দলকে উজ্জ্বীবিত করেছেন তিনি। টেস্ট হারের পর টাইগারদের আত্মবিশ্বাস যখন তলানিতে তখন তাদের মনোবল চাঙ্গা করার দায়িত্বটি বর্তায় মাশরাফির ওপর। তিনি তার দায়িত্ব যথাযথই পালন করেছেন।
সেই মাশরাফি ম্যাচ শেষে বললেন, খুব কঠিন ছিল না দলকে উজ্জ্বীবিত করা। সতীর্থদের স্রেফ বলেছেন নিজেদের উজার করে খেলতে।
দুঃস্বপ্নের মতো কাটানো টেস্ট সিরিজের পর দল ডুবে ছিল হতাশায়। দেশে বিসিবি প্রধানের নানা বিতর্কিত মন্তব্যও দলে জন্ম দিয়েছে নানা প্রতিক্রয়া। সব মিলিয়ে মিইয়ে ছিল দল। জাগানোর কাজটি সহজ হওয়ার কথা নয়।
কিন্তু মাশরাফির চেয়ে এই কাজ আর ভালো পারেন কে! দলের বদলে যাওয়া শরীরী ভাষা নজর কেড়েছে ধারাভাষ্যকারদেরও। ম্যাচ শেষে ড্যানি মরিসন তাই জানতে চাইলেন দলকে উজ্জ্বীবিত করার রহস্য। তবে মাশরাফি এটিকে বিশেষ কিছু বলতে চাইলেন না।
মাশরাফির জবাব, বিশেষ কিছু বলিনি। স্রেফ বলেছি, হৃদয় উজাড় করে খেলতে, দেশের জন্য খেলতে। যা হয়েছে, তা তো হয়েই গেছে (টেস্ট সিরিজে)। এটা নতুন সিরিজ। শুরুটা ভালো করতে পারলেই সব ঠিক হয়ে যাবে। আজ ঠিক সেটাই হয়েছে। আশা করি এই পারফরম্যান্স আমরা ধরে রাখতে পারব।
২০০৭ বিশ্বকাপের সুপার এইটে এই মাঠেই বাংলাদেশ হারিয়েছিল সেই সময়ের র্যাঙ্কিং শীর্ষ দল দক্ষিণ আফ্রিকাকে। সেই জয়ের স্মৃতি মনে পড়ল মাশরাফির। প্রশংসা করলেন এই জয়ের নায়কদেরও।
২০০৭ বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে জয় এখনও মনে আছে। এবার ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে খেলছি। এখানকার উইকেট আমাদের ধরনের সঙ্গে বেশ মানিয়ে যায়। ব্যাটিং আজ শুরুতে চ্যালেঞ্জিং ছিল। কিন্তু তামিম ও সাকিব দারুণ ব্যাট করেছে। সুরটা বেধে দিয়েছে। শেষে মুশির ছোট্ট ইনিংসটি ছিল অসাধারণ।
আমরা জানতাম, শুরুতে ভালো বোলিং করলে এখানে ২৮০ রান তাড়া করা কঠিন। আমাদের চাওয়া ছিল গেইল ও লুইসকে দ্রুত ফেরানো। সেটি হয়েছে। এরপর আমরা চাপটা ধরে রেখেছি।
অধিনায়কের নিজের বোলিংও ছিল দুর্দান্ত। স্ত্রীর অসুস্থতায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ যাওয়ার আগে সেভাবে বোলিং অনুশীলনই করতে পারেননি। কিন্তু মাঠে তার বোলিংয়ে সেটির কোনো ছাপ ছিল না। লাইন-লেংথ ছিল দুর্দান্ত। কাটার ও গতি বৈচিত্রে ক্যারিবিয়ানদের ভুগিয়ে নিয়েছেন ৪ উইকেট।
অনুশীলনের ঘাটতি ছিল বলেই হয়ত পরের স্পেলে বল করেছেন শর্ট রান আপে। ঘরোয়া ক্রিকেটে আগে শর্ট রান আপে অনেকবার বোলিং করলেও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে করেননি খুব একটা। এবার সেখানেও সফল। নিজের পারফরম্যান্সও স্বস্তি দিয়েছে অধিনায়ককে।
গত ২-৩ মাসে সেভাবে বোলিং করতে পারিনি। লম্বা রান আপে অনুশীলনও সেভাবে করতে পারিনি। এমন সময় আসতেই পারে। ম্যাচে কাজটা এমনিতেও সবসময় কঠিন। তবে আমি মাঠে উপভোগ করেছি।
/ এআর /