ঢাকা, শুক্রবার   ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪

শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে আফগানিস্তানের বিপক্ষে জয় টাইগারদের

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০১:৪৬, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮ | আপডেট: ০৮:০৫, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮

চলতি এশিয়া কাপের ‘সুপার ফোর’ পর্বে শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে আফগানিস্তানকে ৩ রানে হারিয়েছে বাংলাদেশ। ফলে এবারের এশিয়া কাপের ফাইনালে খেলার সম্ভাবনা এখনও টিকে থাকলো টাইগারদের। তবে নিশ্চিত হয়েছে আসর থেকে আফগানিস্তানের বিদায়। 

ম্যাচের শেষ ওভারে আফগানিস্তানের জয়ের জন্য দরকার ছিলো মাত্র ৮ রান। হাতে ছিলো ৪ উইকেট। আর বাংলাদেশের দরকার ছিলো কোন ভাবে এই রান সামাল দেওয়া। আফগানিস্তানের ব্যাটসম্যানদের উইকেট নিয়েই তা একমাত্র সম্ভব।

দায়িত্বটা অবধারিতভাবেই ঘাড়ে চলে আসে মোস্তাফিজুর রহমানের। আর আফগানিস্তানের হয়ে লড়ছিলেন ‘হার্ট হিটার’ রশিদ খান। প্রথম বলে দুই রান। পরের বলেই আউট রশিদ। শর্ট বলে রশিদকে ফাঁদে ফেলেন কাটার মাস্টার মোস্তাফিজুর। রশিদে ব্যাটের কোণায় লেগে হাওয়ায় ভেসে ওঠা ‘লারেলাপ্পা’ ক্যাচ তালুবন্দী করতে মোটেও ভুল করেননি ফিজ।

খেলা অবশ্য তখনও বাকি। রশিদের চলে যাওয়ার সময় ক্রিজ বদল করে নেন সেট ব্যাটসম্যান সামিউল্লাহ সেনওয়ারি। শেষ চার বলে চাই মাত্র ৬ রান। প্রথম তিন বলে ১ ০ ১ করে দুই রান দেওয়ার পর শেষ সমীকরণ ছিলো ১ বলে ৪।

কিন্তু সামিউল্লাহকে এক রান করার সুযোগও দেয়নি বাঁ-হাতি পেসার মোস্তাফিজুর রহমান। শরীরের সমস্ত শক্তি দিয়ে ব্যাট চালালেও মোস্তাফিজের বলের দেখা পাননি সামিউল্লাহ। তাকে ফাঁকি দিয়ে ফিজের বল চলে যায় কিপার মুশফিকুর রহিমের হাতে। আর তাতেই ৩ রানের জয় নিশ্চিত হয় বাংলাদেশের।

এর আগে ম্যাচের শুরুতে টসে জিতে ব্যাটিং এর সিদ্ধান্ত নেয় টাইগার অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। এবারের আসরের আগের ম্যাচগুলোর মতোই শুরুতেই বিপাকে পরে বাংলাদেশ। তবে রান খরায় থাকা লিটন দান এই ম্যাচে রানের দেখা পান। তবে বরাবরের মতো ‘অবিবেচক’ শট খেলে রশিদ খানের বলে এহসান উল্লাহর তালুবন্দী হয়ে আউট হওয়ার আগে ৪৩ বলে করেন ৪১ রান।

এরপর মুশফিক আর সাকিবের ভুল বোঝাবুঝিতে প্রথমে সাকিব আর পরে ইমরুল কায়েসের সাথে ভুল বোঝাবুঝিতে দ্রুতই সাজঘরে ফেরেন মুশফিক। তবে সেখান থেকে দলকে দারুণ ১২৮ রানের দারুণ এক জুটি এনে দেন মাহমুদুল্লাহ এবং ইমরুল কায়েস। মূলত এই দুই ব্যাটসম্যানের ওপর ভর করেই আফগানদের বিপক্ষে ৭ উইকেটে ২৪৯ রানের চ্যালেঞ্জিং স্কোর পায় বাংলাদেশ।

মাহমুদুল্লাহ ৮১ বলে ৭৪ রান করে আউট হলেও শেষ পর্যন্ত ৭২ রানে (৮৯ বল) অপরাজিত থাকেন প্রায় ১১ মাস পর ওডিআই খেলতে নামা ইমুরুল।

২৫০ রান তাড়া করতে ব্যাটিং-এ নামা আফগান ব্যাটসম্যানদের শুরুটা মোটেও ভালো দেননি বাংলাদেশ। এখানেও কৃতিত্ব কাটার মাস্টারের। ২০ রানের মাথায় আফগান ওপেনার এহসান উল্লাহকে সাজঘরের পথ দেখান তিনি। এর ঠিক ৬ রান পরেই দারুণ এক থ্রো’তে রহমত শাহ’কে রান আউট করেন সাকিব আল হাসান। তবে বাংলাদেশের জন্য ধীরে ধীরে দুশ্চিন্তা বাড়িয়ে দেন মোহাম্মদ শাহজাদ এবং হাসমাতুল্লাহ শহিদি। এই দুই ব্যাটসম্যানের ৬৩ রানের জুটি ভাঙ্গেন ‘পার্টটাইমার’ মাহমুদুল্লাহ। ৮১ বলে ৫৩ রান করা শাহজাদকে ক্লিন বোল্ড করেন তিনি।

এরপর চিত্রনাট্যে নিজের নাম লেখান অধিনায়ক মাশরাফি। একে একে তুলে নেন দুই সেট ব্যাটসম্যান আসগর আফগান এবং হাসিমুল্লাহ শহিদিকে (৯৯ বলে ৭১ রান)।

তবে মোহাম্মদ নবী আর সলিমুল্লাহ মিলে টাইগার ভক্তদের ‘ব্লাড প্রেসার’ স্বাভাবিক হতে দেননি ম্যাচের শেষ বল পর্যন্ত। শেষ পর্যন্ত মোস্তাফিজুরের অনবদ্য বোলিং এ জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে বাংলাদেশ।

মাশরাফি এবং মোস্তাফিজুর নেন দুইটি করে উইকেট। সাকিব আর মাহমুদুল্লাহ নেন একটি করে উইকেট।

ব্যাট হাতে ৭৪ রান আর বল হাতে ১ উইকেট নেওয়ার জন্য ম্যাচসেরা নির্বাচিত হন মাহমুদুল্লাহ।

এবারের ফাইনালে ভারতের বিপক্ষে খেলতে হলে মঙ্গলবারের ম্যাচে পাকিস্তানকে হারানোর বিকল্প নেই বাংলাদেশের সামনে।

//এস এইচ এস//

 

 


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি