বাবার মৃত্যুই বদলে দিয়েছিল আমাকে: কোহলি
প্রকাশিত : ১২:২৪, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮
গভীর রাতে অসহায় অবস্থায় চোখের সামনে বাবাকে মরে যেতে দেখা। কিচ্ছুটি করা যায়নি। ‘আমাকে একেবারে বদলে দিয়েছিল সেই ঘটনা...’- দিনটা এখনও যেন স্পষ্ট দেখতে পান বিরাট কোহালি।
ভোররাতে মারা যান প্রেম কোহালি। ২০০৬ সাল সেটা। ক্রিকেট জীবনের প্রথম রঞ্জি টুর্নামেন্ট খেলছেন। ম্যাচ চলছিল কর্নাটকের বিরুদ্ধে। দিল্লির হয়ে আগের দিন ৪০ রানে অপরাজিত ছিলেন তিনি। পরের দিন সকালে সেই চূড়ান্ত শোকের মধ্যেই ব্যাট করতে গিয়েছিলেন। ইস্পাতকঠিন মানসিকতার ভিতটা হয়ত শক্ত হয়েছিল সে দিনেই। বিরাট কোহালি নেমে পড়েছিলেন ব্যাট হাতে। চাপে থাকা দলকে উদ্ধার করে তার ৯০ রানের ইনিংস।
ন্যাশনাল জিওগ্রাফিকে সম্প্রচারিত হতে চলা এক সাক্ষাৎকারে ভারত অধিনায়ক স্মৃতি রোমন্থন করেছেন সেই কঠিন দিনটার। কোহালি বলেছেন, ‘আমার হাতের ওপরেই মারা যান বাবা। ভোর তখন তিনটা। বাবাকে কোনও চিকিৎসা দিতে পারিনি। প্রতিবেশীদের থেকে সাহায্য পাওয়ার চেষ্টা করেছিলাম। যাদের ডাক্তার বলে চিনতাম, তাদের ফোন করেছিলাম। কিন্তু এত রাত হয়ে গিয়েছিল যে, কেউই সাড়া দেননি। যখন অ্যাম্বুল্যান্স ও অন্যান্য ব্যবস্থা করা গেল, ততক্ষণে সব শেষ।’
বাবারই তীব্র আগ্রহে ক্রিকেটে এসেছিলেন বিরাট। প্রেম কোহালির স্বপ্ন ছিল তাকে ক্রিকেটার করে তোলার। বাবা-ছেলে দু’জনেরই দুর্ভাগ্য, বিরাটের এই বিরাট হয়ে ওঠাটা দেখে যেতে পারেননি প্রেম।
বিরাট এই সাক্ষাত্কারে বলেছেন, ‘বাবার মৃত্যুর ঘটনা আমার ফোকাস বাড়িয়ে দিয়েছিল। অন্য আর সব কিছুতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছিলাম। বাবার স্বপ্ন পূরণ করতে সমস্ত এনার্জি এক জায়গায় এনে ফেলেছিলাম। আমারও অবশ্য একই স্বপ্ন ছিল।’
স্বপ্ন সফল হয়েছে। এখন তিনি টেস্ট ও একদিনের ক্রিকেটে বিশ্বের ১ নম্বর ব্যাটসম্যান। ভেঙে ফেলেছেন অনেক রেকর্ড। সদ্য রাজীব গান্ধী খেলরত্ন পুরস্কারের জন্য ঘোষিত হয়েছে তার নাম। এত কিছুর মধ্যে স্মৃতিতে ফিরে ফিরে আসে সেই রাতটা। ইস্পাতকঠিন মানসিকতাটাই লোকে বাইরে থেকে দেখে। কিন্তু বাবার মৃত্যুশোকের যে অশ্রু চেপে রেখে ছেলেটা ব্যাট হাতে মাঠে গিয়ে দাঁড়িয়েছিল, সেই অশ্রু যে ফল্গুধারার মতো আসলে কোথাও একটা বয়ে যায় আজও, তা অলক্ষ্যেই থেকে যায় সবার।
সূত্র: আনন্দবাজার
একে//