ধর্ষণের অভিযোগ: প্রধানমন্ত্রীকে পাশে পেলেন রোনালদো
প্রকাশিত : ১৭:৪০, ৮ অক্টোবর ২০১৮ | আপডেট: ১০:৩৭, ৯ অক্টোবর ২০১৮
প্লে-বয় রোনালদো ব্যক্তিগত জীবনে কিছুটা ব্যাকফুটে। মার্কিন এক তরুণী তাঁর বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ করার পর তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়েছে। এদিকে যেসব প্রতিষ্ঠান রোনালদোকে ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর করেছে তাঁরাও তার দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে।
রোনালদোর বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগকারী তরুণীর নাম ক্যাথরিন মায়োরগা। তিনি বর্তমানে একটি স্কুলে শিক্ষিকতা করেন। তাঁর অভিযোগ, ২০০৯ সালে লাস ভেগাসের এক হোটেলে তাঁকে জোর করে ধর্ষণ করেন পর্তুগিজ ফুটবল তারকা।
মায়োরগা জানান, তাঁর সঙ্গে রোনালদো পরিচয় হয় এক বিখ্যাত নাইটক্লাবে। তখন মায়োরগা ওই নাইটক্লাবে চাকরি করতেন। ২০০৯-এ রোনালদো সেই সময় ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড ছেড়ে বিশ্বের সবচেয়ে দামি খেলোয়াড় হিসেবে রিয়াল মাদ্রিদে যাওয়ার জন্য পা বাড়িয়েছেন।
সে যাই হোক, একটা সময়ের পর সেই নাইটক্লাবে দুজনের মধ্যে বন্ধুত্ব হয়ে যায়। একপর্যায়ে তাঁকে নিজের হোটেলের ঘরে আসার আমন্ত্রণ জানান সিআরসেভেন। আমন্ত্রণ রক্ষা করতে গিয়েই মহাবিপদে পড়েন মায়োরগা।
দ্য গার্ডিয়ান-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, মায়োরগা বলেছেন, `রোনালদো আমাকে ওঁর গোপনাঙ্গ ৩০ সেকেন্ডের জন্য ধরতে বলে। আমি প্রথম হেসে উড়িয়ে দেই। বলি, তুমি নিশ্চয়ই মজা করছ! রোনাল্ডোর যৌন আবেদনে অনেকে মুগ্ধ। কিন্তু তখন ওঁর ভিতরে থাকা নোংরা মানুষটার পরিচয় পাই।
মায়োরগা বলেন, ও (রোনালদো) আমাকে অ্যানাল সেক্সের প্রস্তাব দেয়! বিপদ বুঝতে পেরে ছাড়া পাওয়ার আশায় আমি বড়জোর চুম্বনে রাজি হই। কিন্তু সে আরও উত্তেজিত হয়ে পড়ে। আমাকে হোটেল রুমে আটকে রাখে ও। একপর্যায়ে জোর করে আমার সঙ্গে সে বিকৃত যৌনতা শুরু করে।
আমি ওর কাছে অনুরোধ করি। কিন্তু ও তখন কোনও কিছু শোনার মতো অবস্থায় ছিল না। ও যেন মত্ত হয়ে উঠেছিল। নির্যাতনের পরও ও আমাকে রুম থেকে বেরোতে দিচ্ছিল না। শেষে অনেক কষ্টে বেরিয়ে আসি। পরদিন থানায় গিয়ে পুলিশে অভিযোগ জানাই।
সে সময় কিন্তু ৩ লাখ ৭৫ হাজার ডলারের বিনিময়ে কখনও এই অভিযোগ প্রকাশ্যে না আনার ব্যাপারে রাজি হন মায়োরগা। কিন্তু এখন পরিস্থিতি অন্য। পুলিশও নতুন করে তদন্ত শুরু করেছে ৯ বছর আগের সেই ঘটনার।
আর এমন দুঃসময়ে পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন পর্তুগালের প্রধানমন্ত্রী আন্তোনিও কস্তা। জুভেন্টাসের তারকা ফুটবলারের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ ভিত্তিহীনই মনে হয়েছে কস্তার কাছে।
দেশের ইতিহাসের সেরা ক্রীড়াবিদের সমর্থনে পর্তুগিজ প্রধানমন্ত্রী বলেন, কাউকে দোষী সাব্যস্ত করার জন্য এই এতটুকু প্রমাণ যথেষ্ট নয়।
যদি কোনো কিছু থেকেও থাকে তবে আমাদের প্রমাণ আছে।
সে অসাধারণ একজন ক্রীড়াবিদ, অসাধারণ ফুটবলার, পর্তুগালের সম্মান বয়ে আনা একজন সে। কোনো কিছুই তার অর্জনে কালিমা ছুড়ে দিতে পারবে না বলেই বিশ্বাস আমাদের। পর্তুগালের ফুটবল ফেডারেশনও রোনালদোকে সমর্থন দিচ্ছে। ফেডারেশনের প্রধান ফার্নান্দো গোমেজ বলেন, আমি অনেক বছর ধরে রোনালদোকে ব্যক্তিগতভাবে চিনি। কথাগুলো শুধু তার নির্দোষ দাবির জন্য বলছি না।
আমি জানি, মানুষ হিসেবে সে কতটা ভালো। আমার নিজের পক্ষ থেকে, পর্তুগিজ ফুটবল ফেডারেশনের পক্ষ থেকে রোনালদোর প্রতি পূর্ণ সমথর্ন জানাচ্ছি। বাইরে দুঃসময় পার করলেও মাঠে ঠিকই গোল করে চলেছেন রিয়াল মাদ্রিদের সাবেক এই তারকা ফুটবলার। শনিবার নিষেধাজ্ঞা থেকে ফিরে উদিনেসের বিপক্ষে ম্যাচেও গোল করেছেন তিনি।
সূত্র: জিনিউজ।
এ সংক্রান্ত আরো খবর
রোনালদোর ধর্ষণ: সেদিন কী হয়েছিল, জানালেন মার্কিন তরুণী
/ এআর /